কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ যেদিন উদ্ধার হয়, তার আগেরদিন থেকেই এসএসকেএম হাসপাতালে অনুপস্থিত অভীক দে ৷ গত 8 অগস্ট থেকে 23 সেপ্টেম্বর, প্রায় দেড়মাস ধরে তিনি কেন অনুপস্থিত, সেই বিষয়ে অন্ধকারে কর্তৃপক্ষ ৷ তাই এই নিয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে চিঠি দিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের ডিন অভিজিৎ হাজরা ৷
গত 9 অগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ ৷ সেদিন সেমিনার রুমে আরজি করের সঙ্গে যুক্ত নন, এমন অনেককেই দেখা গিয়েছিল ৷ সেমিনার রুমের ভিড়ের মধ্যেই দেখা গিয়েছিল অভীক দে-কেও ৷
ফলে এই নিয়ে গত দেড় মাসে একাধিকবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে ৷ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল ৷ চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে ইতিমধ্যেই সন্দীপকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই ৷ অভীক দে-কেও সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে দেখা গিয়েছে ৷
এসএসকেএম হাসপাতালের ডিনের লেখা চিঠি (নিজস্ব চিত্র) সোমবার তাঁর সম্বন্ধে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল এই চিঠির মাধ্যমে ৷ এসএসকেএম হাসপাতালের ডিন যা লিখেছেন ওই চিঠিতে, সেখান থেকে স্পষ্ট যে এই অনুপস্থিতি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কেউই অবগত নন ৷ পাশাপাশি চিঠিতে ডিন অভিজিৎ হাজরা উল্লেখ করেছেন যে অভীক দে চলতি বছরের 20 ফেব্রুয়ারি পিজিটি হিসেবে এসএসকেএমে ভরতি হন ৷ তার পর প্রায় সাত-আট মাস পেরিয়ে গিয়েছে ৷ অথচ তিনি স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএস জেনারেল সার্জারি ট্রেনির রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করেননি, থিসিসের জন্য সিনোপসিস জমা দেননি, আধার-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক হাজিরা (ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী বাধ্যতামূলক)-র রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেননি এবং ডিন অফিস থেকে পিজিটি-র পরিচয়পত্রও নেননি ৷
চিঠিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছে এসএসকেএম হাসপাতালের ডিন অভিজিৎ হাজরা জানিয়েছেন যে এই ধরনের পরিস্থিতিতে তাঁরা আগে কখনও পড়েননি ৷ এই পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ করা উচিত, সেই নিয়ে পরামর্শও চাওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে ৷ এখন দেখার স্বাস্থ্য ভবনের তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় ?
উল্লেখ্য, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজগুলিতে যে থ্রেট কালচারের অভিযোগ উঠেছে, সেখানে নাম জড়িয়েছে অভীক দে-র ৷ তাছাড়া ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ-র জলপাইগুড়ি শাখার পদ পেয়েছিলেন সুশান্ত রায়ের প্রভাবের জেরে ৷
বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠায় মেডিকেল কাউন্সিলের তরফ থেকে অভীক দেকে সাসপেন্ড করা হয় । সেই সাসপেন্ডের পর তাঁকে হাসপাতালে প্রবেশেই বাধা দেয় এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ । যতক্ষণ না নির্দোষ প্রমাণিত হচ্ছেন, অভীক দে ততদিন পর্যন্ত হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবেন না বলেও জানানো হয় ।