মালদা, 21 জানুয়ারি: মালদার প্রশাসনিক সভা থেকে জেলার জন্য 1211 কোটি 54 লাখ 24 হাজার টাকায় 123টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং 76টি প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তবে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের সভার জন্য এদিন বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য স্তব্ধ হয়ে রইল মালদা শহর ৷ সকালের পশ্চিমা বাতাস গায়ে মেখে ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে সভাস্থল ভরাতে হল ছোট ছোট স্কুল পড়ুয়াদের ৷ অবশ্য শুধু মালদাবাসীকেই নয়, দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দুই দিনাজপুর জেলার মানুষকেও ৷
শনিবারই শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলের কাছে জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের নির্দেশ আসে, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য মঙ্গলবার পড়ুয়াদের সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে স্কুলে ঢুকতে হবে ৷ স্কুল থেকে র্যালি করে তাদের সভায় যেতে হবে ৷ প্রত্যেককে স্কুলের নির্দিষ্ট পোশাক পরে, মেয়েদের মাথায় ফিতে দিয়ে অথবা ফিতে দিয়ে চুল বেঁধে, সঠিক জুতো ও মোজা পরে আসতে হবে ৷ র্যালিতে কেউ জলের বোতল নিয়ে অংশ নেবে না ৷ প্রত্যেকের জন্য সভাস্থলে পানীয় জল ও ভারী টিফিনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে ৷ পড়ুয়াদের ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বেলা সাড়ে 12টায় অভিভাবকদের ডিএসএ ময়দানে উপস্থিত হতে হবে ৷
উল্লেখ্য, লিখিতভাবে নয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের এই নির্দেশ স্কুলগুলিতে এসেছে মৌখিক আকারে ৷ এনিয়ে স্বাভাবিকভাবেই কোনও মন্তব্য করতে চাননি ডিআই বাণীব্রত দাস ৷ তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই যে তিনি এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন তা জানাচ্ছেন তাঁর দফতরের কর্মীদের একাংশ ৷ এই নির্দেশ নিয়ে ক্ষুব্ধ স্কুল কর্তৃপক্ষও ৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেই ফেললেন, "এভাবে খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে ছিনিমিনি না করাই ভালো ৷ এখন সকাল 10টার আগে রোদের দেখা মেলে না ৷ প্রথমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কাউকে সোয়েটার পরিয়ে সভায় নিয়ে যাওয়া যাবে না ৷ পরে আমাদের কথায় অবশ্য সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় ৷ আর মুখ্যমন্ত্রীর সভায় স্কুলের ছেলেমেয়েরা কী করবে ? তারা তাঁর ভাষণের কতটা বুঝবে ? শুধু কি হাততালি দেওয়ার জন্য তাদের নিয়ে যাওয়া হল ? এই সভার জন্য তাদের একটি দিনের ক্লাস তো নষ্ট হল ৷"