ফরাক্কা, 29 অগস্ট: বাঁধ বাঁচাতে খুলে দেওয়া হল ফরাক্কা ব্যারেজের সব ক'টি গেটই ৷ 109টি গেটই খুলে দেওয়া হলেও বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ৷ সোমবার থেকে সব ক'টি গেট খুলে রাখা হয়েছে ৷ যার ফলে প্রতিদিন প্রাায় সাড়ে 11 লক্ষ কিউসেক বের হচ্ছে ৷ এই জল দু'ভাগে ভাগ হয়ে বাংলাদেশ ও কলকাতা বন্দর দিকে প্রবাহিত হচ্ছে । এর ফলে ভাগীরথীর জলস্তর হুহু করে বাড়ছে ৷ তবে এতে বন্যার আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ৷
ফরাক্কা ব্যারেজের সব ক'টি গেট খুলে দেওয়া হল (ইটিভি ভারত) ফরাক্কা ব্যারেজের জিএম আরডি দেশপান্ডে বলেন, "সব ক'টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে ৷ প্রতিদিন প্রায় সাড়ে 11 লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে ৷ তবে এতে বন্য়া বা গঙ্গা ভাঙনের কোনও সম্ভাবনা নেই ৷" ফরাক্কা ব্যারেজের জল ছাড়ার ফলে সাগরদিঘি, জঙ্গিপুর, কান্দি, ভরতপুর-সহ বহু জায়গা প্লাবিত হতে শুরু করেছে ৷ একই সঙ্গে আমন চাষের সময় মাঠ প্লাবিত হওয়ায় চাষিদের কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে ৷ অন্যদিকে, বাংলাদেশের দিকে বিস্তর জল যাওয়ায় সে দেশের মানুষও আত্ঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে ৷
ব্যারেজের 109টি গেট ক'দিন খোলা থাকবে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেননি। তবে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, গঙ্গার আপার ক্যাচমেন্ট থেকে জল আসার পরিমাণ কমেনি। উচ্চঅববাহিকা থেকে ওয়াটার ফ্লো কমলেই ধীরে ধীরে এক একটি করে গেট বন্ধ করা হবে। তাতে জল ছাড়ার পরিমাণও কমবে।
বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ গঙ্গার উচ্চঅববাহিকায় প্রবল বর্ষণের ফলে ফরাক্কা ব্যারেজের জলাধারের জল বাড়ছিল। ব্যারেজের জলাধারের জল ধারণের ক্ষমতা 24.14 মিটার। আর বিপদসীমা 22.25 মিটার। বিপদসীমার উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করায় গত সোমবার থেকে ব্যারেজের সব ক'টি গেটই খুলে দেওয়া হয়। গত 10 বছরে এর আগে এক সঙ্গে 109টি গেট খোলার প্রয়োজন হয়নি। সব ক'টি গেট খোলায় প্রতিদিন 11 লক্ষ 74 হাজার কিউসেক জল বেরচ্ছে । এর ফলে গঙ্গা, পদ্মা (আরও নিম্ন অববাহিকায় নাম পরিবর্তন হয়ে ভাগীরথী) জলস্তর সর্বত্রই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। সামশেরগঞ্জে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে ৷ স্থানীয় বাদিন্দাদের বক্তব্য, জল ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলে নদী ভাঙন শুরু হবে ৷
মুর্শিদাবাদ, বীরভুমের বহু নদী ( ব্রাহ্মণী, দ্বারকা, কুয়ো, ময়ুরাক্ষী) ভাগীরথীতে এসে মিসেছে। ভাগীরথীর জলস্তর বাড়ায় নদীর মোহনা দিয়ে উজানে জল ঢুকতে শুরু করেছে। যার ফলে অনেক গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে ৷ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় ঘুম ছুটেছে কয়েক লক্ষ মানুষের। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠে জল ঢুকলেও বন্যা হওয়ার আপাতত কোন সম্ভাবনা নেই ৷
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা জানান, আমরা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের জল ছাড়া নিয়ে কথা বলেছি ৷ এর ফলে বিপদের কোনও আশঙ্কা নেই বলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে ৷ তবে সর্তক প্রশাসন ৷ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রিপল ও ত্রাণ মজুত রাখা হয়েছে ৷