মল্লারপুর, 18 ডিসেম্বর: কারও সন্তানের বয়স 5, তো কারও আবার 7। যুগল একসঙ্গে থাকেন ৷ অথচ আর্থিক অনটন বা অন্য কারণে হোক বিয়ে হয়নি তাঁদের ৷ এমনই 61টি আদিবাসী যুগলের গণবিবাহ দিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৷
রবিবার অর্থাৎ 15 ডিসেম্বর নজিরবিহীন এই গণবিবাহ অনুষ্ঠিত হল বীরভূমের মল্লারপুরে । সন্তানদের পাশে বসিয়ে ধামসা মাদল বাজিয়ে এবং শঙ্খ ও উলুধ্বনি সহযোগে সিঁদুরদান করে বিয়ে সারলেন তাঁরা ।
গণবিবাহের আসর মল্লারপুরে (ইটিভি ভারত) পূর্বাঞ্চল কল্যাণ আশ্রমের উদ্যোগে আয়োজিত এই আদিবাসী গণবিবাহের সমস্ত খরচ বহন করেছেন কলকাতার দুই দম্পতি । তাঁদের 25 ও 50 তম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই গণবিবাহের আয়োজন করা হয় । এ দিনের আদিবাসী গণবিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ছয় হাজার আদিবাসী ও সাধারণ মানুষজন । এলাকার বিভিন্ন গ্রামের 61 জন পুরুষ নিজেদের পছন্দের 61 নারীর সিঁথি রাঙিয়ে অধিবাসী সমাজে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করলেন ।
পূর্বাঞ্চল কল্যাণ আশ্রমের সদস্য অষ্টম মণ্ডল বলেন, "আদিবাসী সমাজে একসঙ্গে পুরুষ মহিলারা থাকলেও অনেক কারণে তাঁদের বিয়ে হয় না । আমরা তাই এই গণবিবাহের আয়োজন করেছি । 61টি গণবিবাহ হল আজ ৷ প্রত্যেক সমাজের মানুষ এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ৷ সুস্থ সমাজ বজায় রাখার জন্য আমাদের এই উদ্যোগ ৷"
61টি জোড়া আদিবাসী যুগলের এই গণবিবাহে অংশ নেন (নিজস্ব ছবি) সদ্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর পাত্র বিশ্বজিৎ বাসকি বলেন, "এক বছরের বেশি দিন ধরে আমাদের প্রেম ছিল ৷ ব্যক্তিগত কারণে আমরা বিয়ে করতে পারছিলাম না । আজ আমরা এই অনুষ্ঠানে বিয়ে করলাম । এবার আমরা সুখে সংসার করতে চাই ৷"
গণবিবাহের উদ্যোক্তা উত্তম মাহাতোর কথায়, "এখানে আদিবাসী যুগলদেরকে সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়া হল ৷ সব নিয়মকানুন মেনেই বিয়ে হল তাদের ৷ 61 জোড়া গণবিবাহ হল আজ ৷ এতদিন তারা একসঙ্গে থাকলেও বিয়ে হয়নি ৷ তাদের ছেলেমেয়েও হয়েছে ৷ পরবর্তীকালে মা-বাবার বিবাহ না হওয়ার কারণে সন্তানেরা সমস্যায় পড়ত ৷ তাদের বিয়ে হতো না ৷ তাই আমরা আদিবাসী যুগলদের বিয়ে দিলাম ৷"