কলকাতা, 15 নভেম্বর: ট্যাবের টাকা পাচারের ঘটনায় এবার বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করল লালবাজার । সিটের মাথায় আছেন একজন অতিরিক্ত নগরপাল পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক । তাছাড়াও আছেন কলকাতা পুলিশের সাইবার সেল ও ব্যাঙ্ক প্রতারণা বিভাগের গোয়েন্দারা । এই ঘটনার সঙ্গে জামতারা গ্যাংয়ের অপরাধের মিল পাচ্ছেন গোয়েন্দারা ৷
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "আমরা আমাদের সব রকমের চেষ্টা করছি ৷ কিন্তু এই অপরাধের কিনারা করতে গিয়ে আমরা দেখছি যে, অপরাধীদের মোডাস অপারেন্ডি অনেকটা জামতারা গ্যাংয়ের মতো । তারা যেভাবে অপরাধের অপারেশনগুলি করে ঠিক সেই ভাবেই টাকা গায়েব করে দেওয়া হয়েছে ।"
গতকালের পর আজও ট্যাবের টাকা কেলেঙ্কারির অনুসন্ধানে সল্টলেক বিকাশ ভবনে পৌঁছন কলকাতা পুলিশের সাইবার সেলের গোয়েন্দারা ৷ সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও ৷ কীভাবে বাইরের কোনও লোক সরকারি পোর্টালের অ্যাক্সেস পেল তা জানার জন্য সেই পোর্টালের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধরে কথা বলেন তদন্তকারীরা ৷ এই বিষয়ে লালবাজারের গোয়েন্দাদের দাবি, বিকাশ ভবনের কোনও আধিকারিকের বা কর্মীর হাত ধরেই এই আর্থিক প্রতারণার বীজ বপন হয়েছিল ৷
লালবাজার সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলার থানা ছাড়াও শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশের আওতাধীন একাধিক থানায় জমা পড়েছে প্রায় 200-রও বেশি অভিযোগ । থানাগুলি হল যাদবপুর, গলফগ্রিন, সরশুনা, বেহালা-সহ একাধিক থানা । গতকালও একাধিক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ ।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, "আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি । প্রয়োজনে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের সাহায্য নেব । বিহার, ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি । সব প্রকারের পদক্ষেপ করব ।" এছাড়াও গতকাল থেকে প্রায় সমস্ত মোবাইল টাওয়ারে নজরদারির বন্দোবস্ত করা হয়েছে ।
সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন থানায় একের পর এক অভিযোগ দায়ের হতে থাকে যে, একাধিক ছাত্রছাত্রীর ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে । রাজ্য পুলিশের তদন্ত করার সঙ্গে সঙ্গেই এবার কলকাতার বিভিন্ন থানাতেও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে । কলকাতা পুলিশের আওতাধীন একাধিক থানায় ছাত্রছাত্রীরা লিখিত অভিযোগ করেছে যে, তাদের ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছে । সেই ঘটনার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের ব্যাংক প্রতারণা শাখার গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সঠিক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার পরিবর্তে যে সকল অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, সেগুলি বেশিরভাগই উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন জেলার অ্যাকাউন্ট ।