কলকাতা, 20 ডিসেম্বর: শহরে ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ৷ এবার তপসিয়ার বস্তিতে বিধ্বংসী আগুন লাগল ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের 18টি ইঞ্জিন ৷ আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে ৷ ঘটনাস্থলে রয়েছে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ৷ ঝুপড়িতে বেশ কয়েকজন শিশু আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে ।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বেলা 12টা 30 মিনিটের দিকে ৷ তপসিয়ার বিএন রোডের কাছে বহুতলের পাশে বস্তিতে দাউ দাউ করে আগুন লেগে যায় ৷ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় পার্শবর্তী এলাকা ৷ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়ে একের পর এক বাড়ি এবং দোকান । এলাকাটি ঘিঞ্জি হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে দমকল কর্মীদের ৷ আগুনের তীব্রতাও এত বেশি যে কাছাকাছি এগোতেই পারছেন না দমকল কর্মীরা ৷
দেখুন তপসিয়ায় আগুনের ভিডিয়ো (ইটিভি ভারত) আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ আগুন যদি নিয়ন্ত্রণে আনা না-যায়, তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে । সব হারিয়ে হাহাকার বাসিন্দাদের ৷
পাশাপাশি এদিন বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ তাঁদের অভিযোগ, আগুন লাগারও প্রায় এক ঘণ্টা পর দমকল ঘটনাস্থলে আসে । ততক্ষণ সাধারণ মানুষ বালতি, হাঁড়ি দিয়ে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ৷ সেখানে অনেক বাঁশের কাঠামো রয়েছে ৷ যার ফলে আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ৷ সেই সব কাঠামোতে একের পর এক ভেঙে পড়তে থাকে । দমকলের কাছে যথেষ্ট লম্বা পাইপ না-থাকায় আবারও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ।
তপসিয়ায় আগুন (নিজস্ব ছবি) ঘটনাস্থলে পৌঁছান কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ৷ তাঁদেরকে লক্ষ্য করে ইঁট-পাথর ছুঁড়তে থাকে এলাকার বাসিন্দারা । পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে বেরিয়ে না-যায় তার জন্য ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে ব়্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (ব়্যাফ)-কে । ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী ইটের ঘায়ে জখম হয়েছেন । তাঁদের চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে সরিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । তবে ইঁটের ঘায়ে সঠিক কতজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন, সেই সংখ্যা এখনও জানা যায়নি ।
আগুনে পুড়ে ছাই একাধিক ঝুপড়ি (নিজস্ব ছবি) ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু । তিনি স্থানীয় মানুষদের সবরকমভাবে সাহায্য করার বিষয়ে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন । মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, "আমি সমস্ত বাসিন্দাদের শান্ত থাকার জন্য আবেদন করছি । তাদের রাগ করার কারণ থাকতে পারে এবং আমি তাদের কথা শুনতে রাজি আছি । তবে, এখন অগ্রাধিকার আগুন নেভানো । আমি ঘটনাস্থলে 15টি দমকলের গাড়ি চেয়েছিলাম এবং পুলিশকে রুটটি খালি রাখতে বলেছিলাম ৷ যাতে দমকলের গাড়ি ঢুকতে সমস্যা না হয় ৷" ঘটনাস্থলে যান বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খানও ৷
ঘটনাস্থলে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু (নিজস্ব ছবি) ঘটনাস্থলে এসেছেন জাভেদ খান (নিজস্ব ছবি) সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুসারে, তপসিয়ার ভয়াবহ আগুনে এখনও পর্যন্ত ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে প্রায় 30টির কাছাকাছি বাড়ি এবং দোকান । এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং নথি । এমনকি পুড়ে গিয়েছে একাধিক আসবাবপত্র এবং সাইকেল থেকে শুরু করে মোটরবাইক আলমারি এবং ফ্রিজ ।
আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা (নিজস্ব ছবি) আগুন নিয়ন্ত্রণে কিছুটা এসেছে ৷ পুলিশ ও দমকল কর্মীরা ভেতরে গিয়ে দেখেন কেউ আটকে রয়েছে কি না । তবে জানা যাচ্ছে, ভেতরে কোথাও কেউ আটকে নেই । এছাড়াও ঘটনাস্থলে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম পৌঁছে যায় । জানা গিয়েছে, যেই অঞ্চলে আগুন লেগেছে সেখানে প্রায় 150 থেকে 200টি ঝুপড়ি বাড়ি রয়েছে । এছাড়াও ওই মজদুর কলোনিতে রয়েছে প্রায় 2000-এর মতো বস্তি বাড়ি ।