পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বারাসতে নাবালককে খুন জেঠুর ! পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে 'ছেলেধরা'র গুজব রটায় অভিযুক্ত - Barasat Murder Case

Minor Murder Case in Barasat: নাবালককে খুন করেছে জেঠু ৷ বারাসতে হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল পুলিশের হাতে । খুনের তদন্তের মোড় অন্যদিকে ঘোরাতেই 'ছেলেধরা'র গুজব রটিয়েছিল হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড। এমনটাই জানালেন বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া ৷

Barasat Murder Case
বারাসতে নাবালক হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 24, 2024, 1:01 PM IST

বারাসত, 24 জুন: বারাসতে নাবালক হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়। খুনের তদন্ত অন্য দিকে ঘোরাতেই 'ছেলেধরা'র গুজব রটিয়ে ছিল নিহত নাবালক ফারদিন নবির জেঠু আঞ্জিব । শুধু 'ছেলেধরা'র গুজবই নয়, কখনও কিডনি পাচার । আবার কখনও শিশু চুরির গুজব রটিয়ে খুনের তদন্তকে বারবার সে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে দফায় দফায় জেরা করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া।

বারাসত পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া (ইটিভি ভারত)

সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং বারাসতের এসডিপিওকে পাশে নিয়ে পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন,"এই আঞ্জিব নবিই নাবালক হত‍্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। নাবালক ভাইপোকে ডেকে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে জেঠু আঞ্জীব। খুনের পর পাশেই একটি পরিত্যক্ত শৌচালয়ে তার দেহ ঝুলিয়ে দেয় । খুনের তদন্ত অন‍্যদিকে ঘোরাতেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম গল্প ফেঁদেছিল আঞ্জীব। উদ্দেশ্য ছিল পুলিশকে বিভ্রান্ত করা ।" যদিও শেষরক্ষা হয়নি । পুলিশি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে নেয় সে । 'গুজব' ছড়িয়ে বিভ্রান্ত করার কথাও আঞ্জিব স্বীকার করে নিয়েছে বলে দাবি পুলিশ সুপারের ৷

প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়ার কথায়,"কাজিপাড়ার একটি মসজিদে নমাজ পড়ায় আঞ্জিব । সেকারণে এলাকার লোকজন তার কথা মানত । সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সে স্থানীয় লোকজনকে বলে রেখেছিল বাইরের কোনও লোক এলাকায় দেখলেই যেন মারধর করে ।" ফলে নাবালকের পচাগলা দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের ওপর যে হামলা এবং ইটবৃষ্ট হয়েছিল তা নিহত ফারদিনের জেঠু আঞ্জিবের মস্তিষ্কপ্রসূত বলেই মনে করছেন পুলিশ সুপার ।

এ দিকে খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ছ'টা কুড়িতে ওই নাবালক বাড়িতে আসে । কিন্তু তারপর তাঁকে বাড়ির বাইরে বেরতে দেখেনি কেউ । ওই এক মুহূর্তের ফাঁকে নাবালক ফারদিনকে ডেকে বাড়ির পিছনে অন্ধকার জায়গায় নিয়ে গিয়ে প্রথমে চড়, তারপর গলা টিপে খুন করে পরিত্যক্ত বাড়ির শৌচালয়ে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় আঞ্জিব । বারবার কাজিপাড়ায় তদন্ত করতে গেলেও বাড়ির পিছনের দিকে ঝোপঝাড়ে ভরে থাকার কারণে ওই নাবালকের দেহের হদিশ প্রথমে পায়নি পুলিশ । পরে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে তাঁরা এসে দেহ উদ্ধার করে ।

অন‍্যদিকে, এই খুনের পিছনে প্রথমে প্রতিবেশী দুই মহিলাকে সন্দেহ করা হলেও পরে তদন্ত এগোতেই উঠে আসে খুনের 'মাস্টারমাইন্ড' হিসেবে নিহত নাবালকের জেঠু আঞ্জিবের নাম। এর কারণও এদিন ব‍্যাখা করেছেন, বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার। তিনি বলেন,"খুনের তদন্তে যতবারই আঞ্জিব নবিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ততবারই সে তার বয়ান বদল করেছে । কখনও সে বলেছে, ঘটনার সময় বাড়িতে উপস্থিত ছিল । আবার কখনও বলেছে, সে তার ব‍্যাগের কারখানায় ছিল । অথচ খোঁজখবর নিয়ে জানা গিয়েছে, দু'জায়গার কোনওস্থানেই ছিল না আঞ্জিব। বরং খুনের ঘটনার সময় এলাকাতেই ছিল সে। এতেই সন্দেহ বাড়তে থাকে আঞ্জিব নবির ওপর।" এলাকার সিসিটিভি ফুটেজেও আঞ্জিবের গতিবিধি ধরা পড়েছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার । অপরদিকে খুনের নেপথ্যে পৈতৃক সম্পত্তি এবং পারিবারিক বিবাদ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details