মালদা, 1 নভেম্বর: সাতসকালে জাতীয় সড়কের ধার থেকে উদ্ধার হল কাটা মুণ্ডু ৷ খানিকটা দূরে উদ্ধার হয়েছে ধড় ৷ কার্তিকী অমাবস্যা চলাকালীন এই ঘটনায় এলাকায় নরবলি তত্ত্ব নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে ৷ উঠে আসছে আদিবাসী সমাজের ডাইন তত্ত্বও ৷ যদিও স্থানীয়রা কেউ এই নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি ৷
শুক্রবার ধড় ও মুণ্ডুটি উদ্ধার হয়েছে গাজোল ব্লকের দেওতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের হিয়াখোর গ্রামে ৷ খবর পেয়ে বিচ্ছিন্ন দেহাংশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে পাঠিয়েছে গাজোল থানার পুলিশ ৷ এই ঘটনার পর আতঙ্কিত প্রত্যেকেই ৷
কার্তিকী অমাবস্যার পরই কাটা মুণ্ডু উদ্ধার গাজোলে, নরবলির তত্ত্ব নিয়ে গুঞ্জন (ইটিভি ভারত) ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে গিয়েছে গাজোল থেকে হিলিগামী 512 নম্বর জাতীয় সড়ক ৷ এদিন সকালে ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয় কিছু মানুষ ৷ তাঁদের একজন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে জাতীয় সড়কের ধারে একটি জঙ্গলে যান ৷ সেখানে গিয়েই চমকে ওঠেন তিনি ৷ দেখেন, পড়ে রয়েছে এক ব্যক্তির কাটা মুণ্ডু ৷ চিৎকার করে ওঠেন তিনি ৷ ছুটে আসেন অন্যরা ৷
দেখা যায়, মুণ্ডু থেকে কিছুটা দূরে পড়ে রয়েছে ধড় ৷ শরীরে একটা হাফ প্যান্ট ছাড়া আর কিছু নেই ৷ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে এই খবর ৷ মুহূর্তের মধ্যে ভিড় উপচে পড়ে ঘটনাস্থলে ৷ খবর পেয়ে দ্রুত উপস্থিত হয় গাজোল থানার পুলিশ ৷ চলে আসেন থানার আইসি চন্দ্রশেখর ঘোষালও ৷
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, মৃত ব্যক্তির বয়স 65 থেকে 70 বছর ৷ তিনি আদিবাসী কিংবা রাজবংশী সমাজের মানুষ হতে পারেন ৷ কিন্তু তিনি স্থানীয় নন ৷ এলাকার কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি ৷ তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ ৷
মালদার গাজোলে উদ্ধার কাটা মুণ্ডু ও ধড় (নিজস্ব চিত্র) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের অনেকেই জানান, কালীপুজোর রাতে এই ব্যক্তিকে বলি দেওয়া হতে পারে ৷ পরে তাঁর মুণ্ডু ও ধড় জঙ্গলে ফেলে চলে দেওয়া হয়েছে ৷ অনেকে বলছেন, নিহত ব্যক্তি আদিবাসী সমাজের কুপ্রথার বলি ৷ ডাইন সন্দেহে তাঁকে খুন করা হয়েছে ৷ আবার ব্যক্তিগত কারণেও তাঁকে খুন করা হতে পারে বলে কারও কারও অনুমান ৷
দেওতলার বাসিন্দা বিজয় ভট্টাচার্য বলছেন, “সকালে ঘুম থেকে উঠেই খবর পাই, জঙ্গলের ভিতরে একটা দেহ পড়ে রয়েছে ৷ গিয়ে দেখি, ধড় ও মুণ্ডু আলাদা জায়গায় পড়ে রয়েছে ৷ পুলিশ এসে ধড় ও মুণ্ডু উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে ৷ ঘটনার পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ এটা দুর্ঘটনা কিংবা খুন হতে পারে ৷ নরবলি নিয়েও কথা উঠছে ৷ তবে এটা নরবলির ঘটনা কি না, ময়নাতদন্তের পর পুলিশই বলতে পারবে ৷ পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে ৷ ফরেন্সিকের লোকজনের তদন্তে আসার কথা রয়েছে ৷”
গাজোল থানার এক আধিকারিক বলেন, “গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ ধড় ও মাথা উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে ৷ তার রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা সম্ভব নয় ৷ তবে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, অত্যন্ত ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে এক কোপে মাথা কেটে ফেলা হয়েছে ৷ আপাতত ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা হয়েছে ৷ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়েছে ৷”