কলকাতা, 26 মে: কান চলচ্চিত্র উৎসবে দ্যুতি ছড়িয়েছেন দুই কন্যা ৷ যার মধ্যে একজন আবার বাঙালি ৷ তাই গর্বটাও একটু বেশি ৷ অনসূয়া সেনগুপ্ত, পায়েল কাপাডিয়ার প্রশংসায় পঞ্চমুখ পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। 'কান চলচ্চিত্র উৎসব'-এর মঞ্চে দুই ভারতীয় কন্যে দেশের নাম উজ্জ্বল করলেন। তাঁদের ঘিরেই উচ্ছ্বাসের হাওয়া সর্বত্র ৷ প্রশংসার সুর শোনা গেল অভিনেতা-পরিচালক পরমব্রতর গলায় ৷ শুভেচ্ছা জানালেন অভিনেতা ঋদ্ধি সেনও ৷
পরমব্রত সোশাল মিডিয়ায় লিখলেন, "দুই স্বাধীন শিল্পী ধৈর্য সহকারে এবং নীরবে কাজ করে, স্পটলাইট থেকে দূরে থেকে ভারতীয় সিনেমায় সর্বাধিক সম্মান এনে দিলেন ৷ আমরা যখন অন্যদের নিয়ে ব্যস্ত তখন ওঁরা নিঃশব্দে ইতিহাস তৈরি করলেন!" ‘দ্য শেমলেস’ ছবির জন্য কলকাতার মেয়ে অনসূয়া সেনগুপ্ত ‘আন সার্টেন রিগার্ড’ বিভাগে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন।
অন্যদিকে, পরিচালক পায়েল তাঁর ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ সিনেমার জন্য 'গ্রাঁ প্রি পেলেন'। দুই নারীর কৃতিত্বে উচ্ছ্বাসে ভাসছে দেশ। অনসূয়াকে নিয়ে আবেগে ভাসছে কলকাতা। তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। শুভেচ্ছা জানিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন ঋদ্ধি সেন, ঋষভ বসু-সহ আরও অনেকে। ঋষভ বসু লিখেছেন, "কান চলচ্চিত্র উৎসবে অনসূয়া এবং পায়েলের জয় নিয়ে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই অনেক কথা লিখেছেন, যে যোগ্যরা সম্মানিত হয়েছে ৷ স্টার নয় শিল্পী আসল, বিদেশিরা ছিলেন বলে এঁরা প্রাপ্য সম্মান পেয়েছেন ইত্যাদি।"
আরও পড়ুন:কানের সেরা অভিনেত্রী বাংলার অনসূয়া, দু’দিনের 'ছুটি' চান পরিবারের জন্য
তিনি আরও লেখেন, "যে সব সাংবাদিক, পরিচালক, প্রযোজক, ছবির সঙ্গে যুক্ত মানুষরা এইসব লিখছেন, তাঁরাই নতুন শিল্পীদের নিয়ে লিখতে চান না, স্যাটেলাইটে বিক্রি হবে না বলে নতুন ভালো শিল্পীদের সুযোগ দিতে চান না ৷ নতুন কাজ করতে আসা মানুষের (শিল্পী এবং টেকনিশিয়ান) সঙ্গে অযথা দুর্ব্যবহার করেন, টাকা মেরে দেন, লবি করে খারাপকে ভালো এবং ভালোকে খারাপ বলেন, মানুষের কাজ বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নোংরা ক্লিকবেট তৈরি করেন। অদ্ভুত রকম হিপোক্রিট হয়ে যাচ্ছি আমরা সবাই। তাই তাঁদের উদ্দেশ্যে বলি, সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের ফিল্মবোদ্ধা প্রমাণ না করে ভালো কাজ করে দেখান, সৎ কাজ করুন ৷ তাহলে আর বিদেশিদের ভরসায় থাকতে হবে না। নিজেদের কান, চোখ, মুখ ও বুদ্ধি ব্যাবহার করুন।"
অভিনেতা ঋদ্ধি সেন অনসূয়াকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, "গ্ল্যামারাস’ না হয়েও ওঁকে ঘিরে জৌলুসের বলয়। যা প্রমাণ করেছে, শুধু রূপ নয়, গুণটাও দরকার হয়।" তবে, এখানেই ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। তুলেছেন লাখ টাকার একটি প্রশ্ন। "এখনও কি শিল্প আর পরিশ্রমের পরিবর্তে সমাজমাধ্যমে অনুসরণকারীর সংখ্যা দেখে অভিনেতাদের বেছে নেওয়া হবে? এখনও কি আমরা তথাকথিত ‘তারকা’দেরই দক্ষতার বিচার ছাড়াই বেশি করে সুযোগ দেব?" প্রশ্ন তোলেন ঋদ্ধি ৷
উল্লেখ্য, পরিচালক পায়েলের হাত ধরে 30 বছর পর কোনও ভারতীয় ছবি কান উৎসবে প্রথম সারির মনোনয়ন পেয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান 'গ্রাঁ প্রি' পুরস্কার জিতে নিয়েছে পায়েলের ছবি। একইভাবে অনসূয়াই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি 'কান চলচ্চিত্র উৎসব'-এ ‘আন সার্টেন রিগার্ড’ বিভাগে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন।
আরও পড়ুন:কানে ইতিহাস ভারতের, গ্রাঁ প্রি জিতলেন পায়েল কাপাডিয়া