শিলিগুড়ি: 'মেঘ পিওনের ব্যাগের ভিতর মন খারাপের দিস্তা, মন খারাপ হলে কুয়াশা হয় ব্যাকুল হলে তিস্তা...'- রোজনামচা জীবনে হাজারো চিন্তার মধ্যে যখন হাঁফিয়ে ওঠে মন, তখন দূরের শান্ত নিরিবিলি পাহাড়ের কোল যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে ৷ এও তেমনই এক জায়গা ৷ একদিকে সবুজ কোলে নীল-সাদা মেঘের ভেলা ৷ অন্যদিকে ঘন পাইনের জঙ্গল। তারই পাশ দিয়ে খিলখিলিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ঝর্ণা। নিস্তব্ধতায় কান পাতলে শোনা যায় পাখিদের কলতান। আচ্ছা বলুন তো, এমন জায়গায় কে না, যেতে চায় ? আপনিও যদি চান, তাহলে যেতে হবে মেঘে ঢাকা গ্রাম রামধুরায়।
প্রায় পাঁচ হাজার আটশো ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কালিম্পংয়ের অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা গ্রাম রামধুরা। দেখে মনে হবে প্রকৃতির সঙ্গে সেখানে বাস করেন দেব-দেবীরাও। লোকমুখে শোনা যায়, ভগবান রামচন্দ্রের নামে এই গ্রামের নাম। ধুরা কথার অর্থ গ্রাম। এখানে শ্বেতশুভ্র শিবের মন্দিরে জল ঢালার জন্য জল আনতে হয় তিস্তা থেকে। পর্যটকদের শিব মন্দিরে জল ঢালতে রামধুরা থেকে ট্রেকিং করে যেতে হয় তিস্তা নদীতে। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ ভেঙে উঠতে হয় উপরে। চমকে দিতে পারে হঠাৎ নেমে আসা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি । গোটা পাহাড় শুধু সবুজ আর সবুজ । ছুটিতে পাহাড়ে যদি অফবিট জায়গার খোঁজ করে থাকেন তাহলে রামধুরা গ্রাম আপনাদের জন্য আদর্শ জায়গা।
সকালে ঘুম থেকে উঠে জানলা খুললেই দেখা মিলবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা কাঞ্চনজঙ্ঘার। রামধুরা থেকে একাধিক ট্রেকিং রুট রয়েছে। জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পায়ে চলা পথ। চারপাশে কুয়াশার রহস্যময়তা। সেখান থেকে কাছেই রয়েছে জলসা ভিউ পয়েন্ট। সেখানে সিঙ্কোনা গাছের চাষও হয়। রয়েছে আমলকী, হরীতকী, চিরতার জঙ্গল। 1930 সালে তৈরি জলসা বাংলো আজও আছে। কাঠের বাংলো যেন, ফেলে আসা অতীত মনে করিয়ে দেবে পর্যটকদের। অন্যদিকে, রামধুরা ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখা যাবে সারি সারি পাহাড়, তিস্তার একাধিক বাঁধ এবং রঙপো ব্রিজ। এছাড়াও রামধুরাতে যদি এক রাত কাটান তাহলে সেখান থেকে যেতে পারেন ইচ্ছেগাঁও, সিলারিগাঁওয়ের মতো জায়গায়।
কোথায় থাকবেন ?