পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sukhibhava

বিশ্ব নিদ্রা দিবস: নিয়মিত ঘুম, স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ - সুখীভব

চিকিৎসাবিজ্ঞানের দিক থেকে দেখলে, স্লিপ অ্যাপনিয়ার নানা কারণ হতে পারে, যেমন গলায় বাধা, যখন শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত স্নায়ু থেকে মস্তিষ্ক ঠিকমতো সঙ্কেত পায় না, অথবা যখন একসঙ্গে দুটোই ঘটে । যখন কারও ঘুমের মধ্যে শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে, তিনি অবধারিতভাবে জেগে উঠবেন এবং তাঁর ঘুম ঠিকমতো হবে না ।

sleep day
sleep day

By

Published : Mar 20, 2021, 9:54 AM IST

আমাদের ভালো থাকার জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । শরীর ও মনকে চাঙ্গা করতে গভীর ঘুমের কোনও জুড়ি নেই । যদিও কখনও কখনও আমরা সঠিকভাবে ঘুমোতে পারি না, কারণ হয় আমরা তখন উদ্বিগ্ন বা উত্তেজিত রয়েছি, অথবা আমাদের শরীর ততটাও ক্লান্ত হয়নি । এমনটা আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই ঘটে, কিন্তু সেরকম এক-আধবারই হয় । কিন্তু কিছু মানুষ সঠিকভাবে ঘুমের অভাবে ভোগেন, এবং হয়তো তাঁরা স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগছেন । এর চিকিৎসা না করে ফেলে রাখলে স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে ।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের দিক থেকে দেখলে, স্লিপ অ্যাপনিয়ার নানা কারণ হতে পারে, যেমন গলায় বাধা, যখন শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত স্নায়ু থেকে মস্তিষ্ক ঠিকমতো সঙ্কেত পায় না, অথবা যখন একসঙ্গে দুটোই ঘটে । যখন কারও ঘুমের মধ্যে শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে, তিনি অবধারিতভাবে জেগে উঠবেন এবং তাঁর ঘুম ঠিকমতো হবে না । এটা বারবার হওয়ার ফলে অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়, যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস এবং সারাদিন ধরে ক্লান্তি ও খিটখিটে মেজাজ । এতে সেই ব্যক্তির স্বাভাবিক বোধবুদ্ধিতেও প্রভাব পড়ে ।

  • ছোটদের জন্য সঠিকভাবে ঘুমের টিপস :

জন্ম থেকে ১২ বছরের মধ্যে আপনার সন্তানের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । এর জন্য প্রয়োজনীয় অভ্যাসকে কখনও আমরা স্লিপ হ্যাবিট, স্লিপ হাইজিন বা স্লিপ হেল্থ বলে থাকি ।

1. আপনার সন্তানকে প্রত্যেকদিন একই সময়ে ঘুমোতে পাঠান । সেটা রাত ৯ টার মধ্যে হলে ভালো ।

2. ঘুমোনোর সময়টা বয়সের উপযোগী হতে হবে ।

3. ঘুমোনোর একটা নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন (এর মধ্যে দাঁত মাজা, গান, গল্প শোনাও থাকতে পারে) ।

4. শোয়ার ঘরকে ঘুমের অনুকূল হতে হবে – ঠাণ্ডা, অন্ধকার ও নিঃশব্দ ।

5. আপনার সন্তানকে একা একা ঘুমোতে উৎসাহ দিন ।

6. ঘুমানোর সময় চড়া আলো এড়িয়ে চলতে হবে । সকালে আলো আসতে দিন ।

7. ঘুমানোর আগে আপনার সন্তান যেন ভারি খাওয়াদাওয়া বা বেশি ব্যায়াম না করে ।

8. সমস্ত ইলেকট্রনিক সামগ্রী, যেমন টিভি, কম্পিউটার ও সেল ফোন বাচ্চার বেডরুমের বাইরে রাখুন এবং ঘুমোতে যাওয়ার আগে ইলেকট্রনিক সামগ্রীর ব্যবহারের সময় সীমিত করুন ।

9. আপনার শিশুর ক্যাফিন, বিভিন্ন ধরণের সোডা, কফি, চা (এমনকি আইস টি-ও) এবং চকলেট এড়িয়ে চলা উচিত ।

10. আপনার সন্তানকে খাওয়ার সময় সহ নির্দিষ্ট রুটিনে বেঁধে রাখুন ।

আরও পড়ুন : যোগের সাহায্যে অনিদ্রার মোকাবিলা

কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা রয়েছে, যা অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে । বিশ্ব নিদ্রা দিবসে, পিএসআরআই হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট, ড. সত্যরঞ্জন সাহু কয়েকটি টিপস দিলেন, যা স্লিপ অ্যাপনিয়াকে দূরে রাখতে সহায়ক হতে পারে ।

  • ওজন কমান : ওবেসিটি অনেক রকম সমস্যার জন্ম দেয়, এবং স্লিপ অ্যাপনিয়াও তাই । ওবেসিটি থেকে ফুসফুসে হাওয়া পৌঁছানোর পথে আংশিক বা সম্পূর্ণ বাধার সৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে । যদি আপনার ওজন বেশি হয় এবং স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভোগেন, সেক্ষেত্রে আপনার ওজন কমানোর জন্য সমস্তরকম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম বা যোগাসন অনেক রোগকে দূরে রাখে । ব্যায়াম আপনার শ্বসনযন্ত্রকে শক্তি করে, আপনার ফুসফুস অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে । যেহেতু স্লিপ অ্যাপনিয়া ঘটে অক্সিজেনের অভাব থেকে, সেক্ষেত্রে ব্যায়াম বা যোগাসন অনেকটাই কাজ দিতে পারে ।
  • ঘুমের ভঙ্গিতে বদল : দেখা গেছে যে ঘুমের ভঙ্গি বদলালেও অনেক সময় কাজ হয় । যিনি চিৎ হয়ে শুয়ে ঠিকমতো নিশ্বাস নিয়ে পারছেন না, তিনি পাশ ফিরে শুলে তাতে উপকার হতে পারে ।
  • এয়ার হিউমিডিফায়ারের ব্যবহার : কখনও কখনও বন্ধ ঘরের শুকনো হাওয়া অক্সিজেন গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে । তাই হিউমিডিফায়ারের মতো যন্ত্র, যা আর্দ্রতা বাড়ায়, তাতেও উপকার হতে পারে ।
  • সঠিক জীবনচর্যা : জাঙ্ক ফুড, মদ্যপান ও ধূমপান এড়িয়ে চলা । এগুলোতে শ্বাসপ্রশ্বাসের প্যাটার্নে প্রভাব পড়তে পারে এবং স্লিপ অ্যাপনিয়ার ক্ষেত্রে এদের এড়িয়ে চলাই উচিত । ধূমপান ফুসফুসের ক্ষতি করে, তাই অত্যধিক ধূমপান স্লিপ প্যাটার্নে বাধার সৃষ্টি করে । রাত্রে ক্যাফিনযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতেও ঘুমের ব্যাঘাত হয় ।
  • চিকিৎসা : কোনও কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে ওপরের টিপসগুলো কাজ নাও করতে পারে । চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তাঁদের উচিত কন্টিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেসার থেরাপি যন্ত্রের সাহায্য নেওয়া । এই যন্ত্র ঘুমের সময় ভালোভাবে শ্বাস নিতে সাহায্য করে, কারণ এই যন্ত্র পজিটিভ প্রেসার ব্যবহার করে বাতাস চলাচলের পথ খোলা রাখে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details