পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sukhibhava

World Birth Defects Day 2023: নবজাতকের মৃত্যুর এক বড় কারণ জন্মগত অসঙ্গতি, জেনে নিন 'ওয়ার্ল্ড বার্থ ডিফেক্টস ডে'র বিশেষত্ব

আজ 'ওয়ার্ল্ড বার্থ ডিফেক্টস ডে' (World Birth Defects Day Significance)৷ জন্মগত অসঙ্গতির প্রতি সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই পালিত হয় এই বিশেষ দিনটি ৷

Etv Bharat
আজ ওয়ার্ল্ড বার্থ ডিফেক্টস ডে জেনে নিন দিনটির গুরুত্ব

By

Published : Mar 3, 2023, 5:00 PM IST

হায়দরাবাদ, 3 মার্চ:জন্মগত অসঙ্গতি এবং তার সঙ্গে জড়িত নানা কারণগুলি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে সারা বিশ্ব জুড়ে 3 মার্চ পালিত হয় 'ওয়ার্ল্ড বার্থ ডিফেক্টস ডে' ৷ নবজাতকের মৃত্য়ু কিংবা বাচ্চাদের মৃত্যু এবং আজীবন অক্ষমতার অন্যতম প্রধান কারণ জন্মগত কিছু অসঙ্গতি ৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় 8 মিলিয়ন এমন নবজাতকের জন্ম হয় যাদের জন্মগত অসঙ্গতি রয়েছে । আর ভারতে এই সংখ্য়াটি কত? কম নয় মোটেই পরিসংখ্য়ান বলছে ভারতে জন্মগত অসঙ্গতি নিয়ে প্রতিবছর জন্ম হয় প্রায় 1.7 মিলিয়ন নবজাতকের (World Birth Defects Day Significance)৷

সিডিসি অনুসারে বিশ্বব্যাপী নবজাতক এবং শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এই জন্মগত ত্রুটি বা অসঙ্গতিগুলি। আরেকটি বড় উদ্বেগের বিষয় হল শিশুরা এই অসঙ্গতিগুলি থেকে সেরে উঠলেও তাদের অনেককেই আজীবন নানা ধরনের অক্ষমতার শিকার হতে হয়। 3 মার্চ 'ওয়ার্ল্ড বার্থ ডিফেক্টস ডে' পালনের লক্ষ্য একটাই মানুষকে এই বিষয়ে সচেতন করা এবং একইসঙ্গে এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা ৷ যার এর প্রতিরোধ কীভাবে করা যায়, চিকিৎসা কীভাবে সম্ভব সকলে তা নিয়ে জানতে পারেন ৷

জন্মগত ত্রুটি বা জন্মগত অসঙ্গতি কি:জন্মগত অসঙ্গতির মধ্য়ে অনেক ধরনের জন্মগত ত্রুটিকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে । আসলে শিশু যখন জন্মের সঙ্গে সঙ্গে কোনও রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে তখন তাকে জন্মগত অসঙ্গতি বলা হয় ৷ এর মধ্য়ে সবচেয়ে বেশি যে যে রোগগুলির রিপোর্ট সামনে আসে তা হল কাটা ঠোঁট, ডাউন সিনড্রোম, জন্মগত বধিরতা, ট্রাইসোমি 18, ক্লাবফুট, হার্টের ত্রুটি, নিউরাল টিউব ত্রুটি, সিকেল সেল অ্যানিমিয়া, সিস্টিক ফাইব্রোসিস এবং ক্রোমোসোমাল অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি। এক বা একাধিক জিনগত সমস্য়ার কারণেই সাধারণত এই ধরনের রোগ দেখা দেয় ৷ এছাড়া গর্ভবতী মায়ের শরীরের কোনও রোগের প্রভাব, পুষ্টির অভাব, গর্ভে থাকা শিশুর শরীরে কিছু রোগের সংক্রমণ থেকে জন্মগত অসঙ্গতি বা বার্থ ডিফেক্টস দেখা দিতে পারে ৷

পরিসংখ্যান কি বলে:ডাব্লুএইচওর দেওয়া তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে, জন্মগত ত্রুটির কারণে শিশু মৃত্যুর হার বেশ বেশি ৷ আর এই শিশু মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণগুলির মধ্য়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এই ধরনের ত্রুটির ৷ আর অন্যদিকে যে যে কারণে নবজাতকদের মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয় সেই তালিকাতেও চতুর্থ স্থানে রয়েছে বার্থ ডিফেক্টস । সমস্ত নবজাতকের মৃত্যুর প্রায় 12% এই কারণেই ঘটে ।

2010 থেকে 2019 সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই অঞ্চলগুলিতে জন্মগত ত্রুটির কারণে শিশু মৃত্যুর হার 6.2% থেকে বেড়ে 9.2%-এ এসে দাঁড়িয়েছে ৷ যা বেশ আশঙ্কাজনক ৷ পরিসংখ্য়ান বলছে শুধুমাত্র 2019 সালে জন্মগত ত্রুটির কারণে মৃত্যু হয়েছে মোট 1,17,000 জনের ।

'ওয়ার্ল্ড বার্থ ডিফেক্টস ডে' উপলক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং (ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক) জানিয়েছেন, 'ওয়ার্ল্ড বার্থ ডিফেক্টস ডে' উপলক্ষ্যে সমস্ত দেশগুলি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল এবং সারা বিশ্বজুড়ে জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং ব্যবস্থাপনার জন্য় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ৷ জাতীয় পর্যায়ে চালানো হচ্ছে এই প্রচেষ্টা ৷

ডঃ পুনম ক্ষেত্রপাল সিং জানান যে, 2014 সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং ব্যবস্থাপনার জন্য অবিরাম কাজ করে চলেছে ৷ লক্ষ্য একটাই যাতে সমস্ত দেশে মা, নবজাতক এবং শিশু মৃত্যুর হার দ্রুত হ্রাস পায় । বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে । বেশ কিছু জাতীয় কর্মপরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

এর নিবারণ সম্ভব কী:বিশেষজ্ঞ এবং ডাক্তারদের মতে, ওষুধ এবং অস্ত্রোপচারের সাহায্যে অনেক গঠনগত এবং জন্মগত অসঙ্গতি ঠিক করা যেতে পারে ৷ অন্যদিকে, ক্রমাগত সঠিক চিকিৎসা এবং থেরাপি আজীবন থ্যালাসেমিয়া, সিকেল সেল ডিসঅর্ডার এবং জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজম-এর মতো সমস্য়ার শিকার হওয়া শিশুদেরও অনেকটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য় করে ৷

রোগের হাত থেকে বাঁচতে অলম্বন করা যেতে পারে এই উপায়গুলি:বিভিন্ন ধরনের জন্মগত অসঙ্গতি এড়াতে হলে কিছু বিষয়ে বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

  • গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ সবসময় নিতে হবে ৷ সব ধরনের শাক-সবজি, শস্যদানা, ডাল ও ফলমূল সমন্বিত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে, যাতে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় ।
  • গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভাবস্থার আগে এবং গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকারক পদার্থ, বিশেষ করে মদ এবং তামাক থেকে দূরে থাকা উচিত ।
  • গর্ভবতী মহিলাদের নিয়মিত বিরতিতে তাদের অবস্থা সম্পর্কে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে।

ABOUT THE AUTHOR

...view details