হায়দরাবাদ, 25 সেপ্টেম্বর : করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বহু সঙ্কটাপন্ন কোভিড-19 রোগীদের অ্যান্টিবডির মাধ্যমে (antibody treatment) চিকিৎসা করা হয়েছিল ৷ কিন্তু তাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ কিন্তু সম্প্রতি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু (WHO) এই চিকিৎসাকে অনুমোদন দিয়েছে ৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (The World Health Organisation) সম্প্রতি কোভিড-19 রোগীদের চিকিৎসায় দু'ধরনের অ্যান্টিবডি কাসিরিভিমাব (casirivimab) এবং ইমডেভিমাব (imdevimab) দিয়ে চিকিৎসার কথা জানিয়েছে ৷
প্রথম দলে কোভিড-19-এ কম সংক্রামিত হলেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, এমন রোগীদের রাখা হয়েছিল ৷ আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সঙ্কটাপন্ন কোভিড-19 রোগী যারা সেরোনেগেটিভ (seronegative), অর্থাৎ যাদের শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি কোভিড সংক্রমণ রুখতে ব্যর্থ, এমন রোগীদের রাখা হয়েছে ৷ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত হু-র গাইডলাইন ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ বা জিডিজি (Guideline Development Group, GDG) এবং রোগীরা এ বিষয়ে 'দ্য বিএমজে'-তে (The BMJ) লিখেছেন ৷
আরও পড়ুন : Sukhibhava : নতুন ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি, ভ্যাকসিনের সুরক্ষাও হার মানতে পারে, জানাচ্ছে গবেষণা
অ্যান্টিবডিগুলির অত্যধিক দাম আর সীমিত উৎপাদনের কথা জানিয়েছিল জিডিজি প্যানেল ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থা এবং সরকারকে৷ আর এই ওষুধের সুরক্ষা আর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার আর্জিও জানিয়েছিল তারা ৷
কাসিরিভিমাব (casirivimab) এবং ইমডেভিমাব (imdevimab) মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি (monoclonal antibodies) ৷ এদের একসঙ্গে ব্যবহার করে সার্স-কোভ-2-এর (SARS-CoV-2) স্পাইক প্রোটিনকে প্রশমিত করা যায় ৷
সঙ্কটাপন্ন কোভিড রোগীদের উপর ট্রায়াল চালিয়ে যে তথ্য সংগৃহীত হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে কাসিরিভিমাব (casirivimab) এবং ইমডেভিমাব (imdevimab) হয়ত মৃত্যুর সম্ভাবনা কমাতে পারে ৷ আর সেরোনেগেটিভ (seronegative) রোগীদের ক্ষেত্রে এর ব্যবহারে যান্ত্রিক ভেন্টিলেশনের (mechanical ventilation) প্রয়োজনীয়তাও কমে ৷ তবে বাকি সব কোভিড-19 রোগীদের ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা খুব একটা কার্যকরী নয়, লিখেছেন বিশেষজ্ঞরা ৷
এই প্যানেল স্বীকার করেছে, এই চিকিৎসা প্রয়োগের জন্যে যে বিপুল খরচ আর সম্পদ প্রয়োজন, তা নিম্ন এবং মধ্য অর্থনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন দেশগুলির জন্য চ্যালেঞ্জের ৷ উদাহরণস্বরূপ, সঙ্কটাপন্ন রোগীদের চিহ্নিত করতে ঘন ঘন সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা করা দরকার, চিকিৎসার জন্য বিশেষ যন্ত্রপাতি দরকার যাতে শিরার অভ্যন্তরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা যায়, এবং রোগীদের অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার উপর নজর রাখা দরকার ৷ তবে এও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা যে, কাসিরিভিমাব (casirivimab) এবং ইমডেভিমাব (imdevimab) অ্যান্টিবডি ব্যবহার করলেও নতুন ভ্যারিয়্যান্টের আক্রমণের সম্ভাবনা থাকতে পারে ৷