পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sukhibhava

পুরুষ বন্ধ্যাত্ব তথা অ্যাজুস্পার্মিয়া - পুরুষ বন্ধ্যাত্ব

বিষয়টি নিয়ে শুধু আলোচনা হওয়াই নয়, বরং বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে দেখা উচিত ৷ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও করানো দরকার জানালেন চিকিৎসক রাহুল রেড্ডি ৷

symbolic photo
প্রতীকী ছবি

By

Published : Aug 18, 2020, 9:00 AM IST

এই সময়ে দাঁড়িয়েও ‘পুরুষ বন্ধ্যাত্ব’ শব্দবন্ধটিকে কেমন যেন ভিন গ্রহের বলে মনে হয় । আসলে এক নয় । একাধিক কারণের জন্য, এই সমাজ পুরুষ বন্ধ্যাত্বকে একটি সাধারণ ‘মেডিকেল কন্ডিশন’ হিসাবে ধরে নিতে পারে না । কিন্তু বিষয়টি নিয়ে শুধু আলোচনাই হওয়া উচিত নয়, বরং বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসাবেই দেখা এবং মানুষকে এটি নিয়ে শিক্ষিতও করা উচিত যাতে অন্তঃসত্ত্বা হতে না পারলে কেবলমাত্র মহিলাদের দিকেই আঙুল না ওঠে । এর পাশাপাশি বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত পুরুষদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও যেন হয় ।

চিকিৎসক রাহুল রেড্ডি এই মতের পক্ষেই সওয়াল করেছেন । যদিও তাঁর মতে, আগের তুলনায় পরিবারগুলি এই নিয়ে অনেকটাই সচেতন, তবু বাস্তবিকভাবে ভাবনা—চিন্তায় বিরাট কোনও বদল আসেনি । তিনি জানিয়েছেন, শহরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন এই শারীরিক অবস্থার কথা জানেন, এমনকী তা নিরাময়ে পেশাদারি সাহায্য নিতে লজ্জিতও হন না । কিন্তু এদের হার খুবই কম । প্রসঙ্গত, পুরুষ বন্ধ্যাত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হল এক ধরনের ‘মেডিক্যাল কন্ডিশন’, যাকে অ্যাজুস্পার্মিয়া বলা হয় । তাছাড়া একে ‘নিল স্পার্ম’ বা ‘নো স্পার্ম কন্ডিশন’ও বলা হয় । চিকিৎসক রেড্ডির মতে, এই পরিস্থিতিতে সিমেনে স্পার্মের উপস্থিতি ‘শূন্য’ হয় ।

কী কী ধরনের অ্যাজুস্পার্মিয়া হয় ?

চিকিৎসকের দাবি, দু’ধরনের অ্যাজুস্পার্মিয়া আছে । অবস্ট্রাকটিভ এবং নন—অবস্ট্রাকটিভ । অবস্ট্রাকটিভ অ্যাজুস্পার্মিয়ায় এমন পরিস্থিতি থাকে, যেখানে স্পার্ম তৈরি ঠিকই হয় কিন্তু রিপ্রোডাকটিভ ট্র‌্যাক্টের অন্তর্গত এপিডিডাইমিস, ভাস ডিফেরেন্স বা আশপাশে কোথাও কোনও ব্লকেজ তথা মিসিং লিঙ্ক থাকে । যার অর্থ এই যে, স্পার্ম বেরোনোর রাস্তা খুঁজে পায় না । ফলে সিমেন পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না ।

নন অবস্ট্রাকটিভ অ্যাজুস্পার্মিয়ায় ‘মিসহ্যাপেন টেস্টিক্যালস’—এর জন্য বা অন্য কোনও কারণে যতটা দরকার, ততটা কিংবা কোনও স্পার্মই উৎপন্ন হয় না । চিকিৎসক রেড্ডি বিশ্বাস করেন, এই দুই ক্ষেত্রেই অবিলম্বে পেশাদার চিকিৎসকের সাহায্য প্রয়োজন, যাতে সমস্যা আরও বাড়তে না পারে । তিনি আর বলেছেন যে, এমনিতে আমাদের শরীরের কোথাও কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে যন্ত্রণা বা অস্বস্তি হয়, বোঝা যায় কোনও সমস্যা হয়েছে । কিন্তু এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কোনও অস্বস্তিও অনুভূত হয় না । তাই তাঁর পরামর্শ, সামনেই বিয়ের পরিকল্পনা থাকলে আগে ভাগে পুরুষদের উচিত, চিকিৎসকের কাছে গিয়ে নিজেকে ভালোভাবে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ।

কী কারণে অ্যাজুস্পার্মিয়া হয় ?

অ্যাজুস্পার্মিয়ার একাধিক কারণ হতে পারে । জীবনযাত্রার ধরন কিংবা শারীরিক পরিস্থিতি । অনেক সময় আবার জেনেটিক কিছু কারণেও এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের মধ্যে বাহিত হতে পারে অ্যাজুস্পার্মিয়া । এর মধ্যে কয়েকটি হল –অতিরিক্ত মদ্যপান, তামাকজাত পণ্য সেবন কিংবা ‘রিক্রিয়েশানাল লাংগস’, আগে কোনও সংক্রমণ হওয়া, পেলভিক অংশের কাছাকাছি আগে কোনও অস্ত্রোপচার হওয়া, ভ্যাসেক্টোমি সিস্ট হওয়া, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া, রেডিয়েশনজনিত চিকিৎসা কিংবা কেমোথেরাপি ৷

এছাড়াও অন্যান্য কিছু কারণও রয়েছে, যার বেশিরভাগই জেনেটিক কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় । তাছাড়া শিশুকাল থেকেই ‘লুপ সাইডেড’ বা ‘মিসহ্যাপেন’ ‘টেস্টিকলস’ থাকলে অ্যাজুস্পার্মিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে । তাছাড়াও যদি কেউ দূষিত পরিবেশে থাকে, যেখানে বাতাসে রাসায়নিক কিংবা ধাতব কণা ভেসে বেড়ায়, তাহলেও তার অ্যাজুস্পার্মিয়া হতে পারে ।

কীভাবে অ্যাজুস্পার্মিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ?

যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অ্যাজুস্পার্মিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না, তবুও যদি নিচের কোনও উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।

  • সিমেন নিঃসরণ যদি কম হয়
  • ইরেকটাইল ডিসফাংশন যদি থাকে
  • যৌন তাড়না যদি কম থাকে
  • সারাক্ষণ দুর্বলতা আর ক্লান্তি বোধ হলে

ABOUT THE AUTHOR

...view details