‘ডিপ্রেশনের বাংলা জানি । মন খারাপ ।’ শ্রীজাতর লেখা এই লাইনটি জনপ্রিয় হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিপ্রেশন আর মন খারাপ এক নয় ৷ দুইয়ের মধ্যে রয়েছে একটি সূক্ষ্ম ফারাক ৷ যা বুঝতে পারলেই মানসিক অবসাদ থেকে বেরিয়ে আসা অনেকটাই সহজ হয়ে যায় ৷
কেউ যদি ডিপ্রেশনের শিকার হন, তাহলে অনেক সময়ই তাঁকে মন ভাল করার পরামর্শ দেওয়া হয় । বলা হয় যে, একটু পরেই মন ভাল হয়ে যাবে । বেশিরভাগই বোঝার চেষ্টা করেন না যে, তাঁর মধ্যে আসলে কী চলছে । অবসাদ অনেক গভীর একটা বিষয়, যার মধ্যে লুকিয়ে থাকে একাধিক স্তর, একাধিক ঘটনার স্মৃতি । আর সেটা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, মন খারাপের মতো ক্ষণস্থায়ী ব্যাপার নয় সেটা । মন খারাপ যদি একটানা বহু দিন চলতে থাকে, সঙ্গে ঘুম-খিদে কিংবা কাজের ইচ্ছে চলে যায় বা কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে না করে, তবে সেটা ডিপ্রেশন ।
একাধিক ধরনের ডিপ্রেশন হতে পারে, যেমন-
- মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজ়অর্ডার (MDD)
- পারসিসটেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজ়অর্ডার
- বাইপোলার ডিজ়অর্ডার
- পোস্ট-পারটাম ডিজ়অর্ডার
- প্রি-মেনস্ট্রুয়াল ডিজ়অর্ডার
- আটিপিকাল ডিজ়অর্ডার
অন্য কোনও শারীরিক অসুস্থতার মতো ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন সহজে লক্ষ্য করা বা বোঝা যায় না । অনেক সময় দুঃখে থাকা কোনও মানুষকে ক্লিনিক্যালি ডিপ্রেসড বলে ভুল করা হয় আর তার ফলে সত্যিকারের অসুস্থতা ধরা পড়ে না । তার কারণ, সাধারণ মানুষ এখনও মন খারাপ আর ডিপ্রেশনের পার্থক্যটা ঠিক বুঝতে পারেন না। ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন আসলে এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা যা সাধারণ মানুষেরও হতে পারে ৷ কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় না বা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এড়িয়ে যাওয়া হয় ।
আরও পড়ুন :Sukhivaba : শরীর-মন সুস্থ রাখতে মিউজিক থেরাপি উপকারী, জানাচ্ছে গবেষণা
মন খারাপ হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা আপনা-আপনি কমে যায় ৷ গান শোনা, নিজের পছন্দের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা, ডায়েরি লিখলে অনেকসময় মন ভাল হয়ে যায় ৷ কিন্তু ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন হল একটি গুরুতর মানসিক রোগ । সহজে না সারলেও এটির চিকিৎসা সম্ভব । কেউ ক্লিনিক্যালি ডিপ্রেসড কি না তা বুঝতে তাকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং তার লক্ষণগুলি যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে । যথাসময়ে চিকিৎসাগত সহযোগিতা পেলে এই অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ।