হায়দরাবাদ, 3 অক্টোবর : জাতীয় মাদক-আসক্তি বিরোধী দিবস (National Anti-Drug addiction Day) পালিত হল মহাত্মা গান্ধির জন্মদিন, 2 অক্টোবরে ৷ তরুণ প্রজন্মকে মাদক থেকে দূরে সরিয়ে রাখা বা মাদক বর্জনে উৎসাহিত করাই এই দিন পালনের উদ্দেশ্য ৷
ন্যাশনাল অ্যান্টি-ড্রাগ অ্যাডিকশন ডে: এখুনি মাদক ত্যাগ করুন !
মাদকে আসক্ত ব্যক্তির জীবনই শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, তাঁর সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্য, বন্ধুদেরও এর ফল ভুগতে হয় ৷ মহাত্মা গান্ধি সব সময় মাদকাসক্তির খারাপ দিকগুলি তুলে ধরে তা বর্জনের উপদেশ দিয়ে গিয়েছেন ৷
এর প্রভাবগুলি
ন্যাশনাল হেলথ পোর্টাল (National Health Portal, NHP) অনুযায়ী মাদকাসক্তির ক্ষতিকর প্রভাবগুলি হল :
- স্বাস্থ্যের ক্ষতি
- স্মৃতিশক্তির ক্ষতি
- শরীরে ভারসাম্য রক্ষা আর হাঁটাচলায় সমস্যা
- উদ্বেগ, অবসাদ এবং ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা
- হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া
- যকৃতের রোগ, এপিলেপসি এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া
- রক্তে শর্করার মাত্রা কম, উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল
- হৃদযন্ত্রের রোগ
- রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যাওয়া
- প্রজনন ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়
আরও পড়ুন : World Heart Day: হার্ট ভাল রাখবেন কীভাবে? পরামর্শ ফুড টেকনোলজিস্টের
আচরণগত এবং মানসিক পরিবর্তন
- কর্মক্ষেত্রে কাজ করার ক্ষমতা কমতে থাকা
- উৎসাহ কমে যাওয়া এবং সন্দেহজনক আচরণ
- হিংস্র ও উত্তেজিত হয়ে পড়া
- ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন
বিশেষ প্রভাব
মাদকে আসক্তি থাকলে ব্যক্তিগত জীবন এবং সামাজিক জীবন, দু'ক্ষেত্রেই সমস্যা দেখা যায় ৷ মানুষ সমাজ-বিরুদ্ধ কাজকর্মে যুক্ত হয়ে পড়ে ৷
মাদকে আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় কী করে ?
এটা খুব কঠিন হলেও মাদকাসক্ত ব্যক্তি যদি মনে জোর আনেন, তাহলে তা সম্ভব হতে পারে ৷ একবারে নয়, ধাপে ধাপে মাদক থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে ৷ পরিকল্পনা সঠিক না হলে, আসক্ত ব্যক্তি ফের মাদক নিতে শুরু করতে পারেন ৷
1. পরিকল্পনা
মাদক থেকে রেহাই পেতে রিহ্যাবিলিটেশনের (rehabilitation) সঙ্গে যথোপযুক্ত ওষুধও প্রয়োজন ৷ কারণ মাদক ছাড়ার পরেও মস্তিষ্কে ঘটতে থাকা পরিবর্তনগুলি শরীরকে প্রভাবতি করতে থাকে ৷ এটা দীর্ঘ সময় ধরে চলে ৷ তাই মাদক ছাড়ার জন্য সঠিক পরিকল্পনা অবশ্য প্রয়োজন ৷
2. ডিটক্সিফিকেশন
প্রথমত ডিটক্সিফিকেশন (Detoxification) খুব গুরুত্বপূর্ণ ৷ ওষুধের সাহায্যে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলি বের করে দেওয়া যায় ৷
3. কাউন্সেলিং
মাদকে আসক্ত ব্যক্তির জন্য কাউন্সেলিং (Counseling) দরকার ৷ এই উপায় একদিকে ব্যক্তির মনের জোর বাড়ায়, অন্যদিকে তাঁর শরীরে হতে থাকা পরিবর্তনগুলি বুঝতেও তাঁকে সাহায্য করে ৷
এর সঙ্গে ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে 'কগনিটিভ বিহেভিয়রাল থেরাপি' (Cognitive Behavioral Therapy), 'মাল্টিডাইমেনশনাল ফ্যামিলি থেরাপি' ( Multidimensional Family Therapy), 'মোটিভেশনাল ইন্টারভিউয়িং থেরাপি' (Motivational Interviewing Therapy) দেওয়া হয় মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে ৷
আমাদের দেশে সরকারি (government) স্তরে এবং বেসরকারি (non-government) স্তরে বহু সংগঠন মাদকে আসক্তি ছাড়ানোর জন্য কাজ করছে ৷ যাঁরা তামাক সেবনে অভ্যস্ত, তাঁরা 011-22901701 নম্বরে একটা মিসড কল দিয়ে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারেন ৷ এছাড়া http://www.nhp.gov.in/quit-tobacco-তেও নিজেদের মোবাইল নম্বর দিয়ে ই-রেজিস্টার করা যায় ৷