কোমরের পরিসরের পরিমাপ আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের পূর্বাভাস দেয় । সরু কোমর থাকাটা কেবল দেখতে সুন্দর নয় বরং তা শরীর সুস্থ এবং স্বাস্থ্যবান থাকারও পরিচায়ক । ফ্লেক্সিবল একটি মেজারিং টেপ নিন এবং পশ্চাৎদেশের হাড়ের ঠিক উপরে তাকে আনুভূমিকভাবে রেখে পরিমাপ করুন । মহিলাদের ক্ষেত্রে ওয়েস্টলাইন ৩২ ইঞ্চি কিংবা ৮০ সেন্টিমিটারের কম হওয়া বাঞ্ছনীয় আর পুরুষদের ক্ষেত্রে তা ৩৭ ইঞ্চি কিংবা ৯৪ সেন্টিমিটারের বেশি হওয়া উচিত নয় । যদিও বডি মাস ইন্ডেক্স সীমার মধ্যেই থাকা উচিত । কিন্তু যদি বিএমআই বেশি থাকে আর ওয়েস্টলাইন চড়া থাকে, তাহলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে ।
ভিসেরাল ফ্যাট বনাম সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট :পেটের অবাঞ্ছিত ফ্যাট আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার জন্য অত্যন্ত অসুবিধাজনক । এই ধরনের ফ্যাটের দু’টি প্রকার আছে । ভিসেরাল ফ্যাট এবং সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট । বেশ কিছু সময় ধরে, খাদ্যজনিত বদঅভ্যাস এবং শরীরচর্চার অভাবে পেটের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেমন কিডনি, অন্ত্র প্রভৃতির চারপাশে স্নেহপদার্থ সঞ্চিত হয় । ত্বকের নিচেও ফ্যাট সঞ্চিত হয় । গবেষকরা খতিয়ে দেখেছেন যে ভিসেরাল ফ্যাট প্রভূত পরিমাণে FGF2 (ফাইব্রোব্লাস্ট গ্রোথ ফ্যাক্টর-২) উৎপাদন করে ত্বকের নিচে ফ্যাটের (সাবকিউটেনিয়াস) তুলনায় । এই কারণের জেরে স্তন, কোলন এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্যানসার হতে পারে । ভিসেরাল ফ্যাট থেকে RBP4-ও (রেটিনল বাইন্ডিং প্রোটিন-৪) ক্ষরিত হয়, যা ইনসুলিনের কাজকে বাধা দেয় এবং তার ফলে টাইপ-টু ডায়াবিটিস হতে পারে । ভিসেরাল ফ্যাট উচ্চ রক্তচাপের জন্যও দায়ী ।
সাধারণত, শরীরে মোট ফ্যাট সঞ্চয়ের ১০ শতাংশই হল ভিসেরাল ফ্যাট । এর থেকে যা বেশি থাকে, তা-ই বিপজ্জনক । সুতরাং, উচিত হল পেটের ফ্যাটকে সীমিত রাখা একটি স্বাস্থ্যকর রুটিন মেনে চলার মাধ্যমে । জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত অ্যালকোহল, শরীরচর্চার অভাব, মানসিক চাপ প্রভৃতিই পেটের ফ্যাট জমতে সাহায্য করে । মিষ্টিজাতীয় পানীয় বেশি খাওয়া, হঠাৎ করে অনেকটা বেশি খেয়ে ফেলা, গাড়ি চালানোয় বেশি সময় ব্যয় করা, দিনের বেলায় ঘুমোনো এবং অলস জীবনযাত্রার ধরন প্রভৃতিই এই কুঅভ্যাসের জন্য দায়ী । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর থেকে হতে পারে অ্যাস্থমা, অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়া এবং অগ্ন্যাশয়ের সমস্যা ।
আরও পড়ুন : আঙুল ঝনঝন করার সমস্যা হাতের গুরুতর সংকট ডেকে আনতে পারে
পেটের ফ্যাটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে, প্রোটিনের হার বাড়িয়ে দিন ।
শরীরচর্চার হার বৃদ্ধি করুন ।
অ্যালকোহলের মাপ নিয়ন্ত্রণ করুন ।
মাঝে মাঝে উপোস করুন ।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন ।
তৈলাক্ত খাবারদাবার বর্জন করুন ।