হায়দরাবাদ:পাঁচ মাস এবং আড়াই বছর বয়সি দুই সন্তানের মা রেণুকা ভারতীকে তাঁর প্রথম প্রসবের পর স্তন্যপান করানোর কিছু জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল ৷ যার কারণে শুধু তাকেই নয়, তাঁর ছেলেকেও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল । তিনি বলেন, সে সময় তাঁর শুধু স্তনবৃন্তে নয় স্তনেও প্রচণ্ড ব্যথা ছিল । পরে তিনি জানতে পারেন যে তাঁর দুধ সংক্রামিত হয়েছে । এর প্রভাব কেবল তাঁর স্বাস্থ্যের উপর নয়, তাঁর ছেলের স্বাস্থ্যের উপরও দৃশ্যমান ছিল । তিনি জানান, তাঁর প্রথম অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি তার দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পরে স্তন্যপান করানো সংক্রান্ত সমস্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছিলেন ।
অন্যদিকে, দুই বছর বয়সি উৎকর্ষের মা শ্রদ্ধা পারিখ বলেন, শুরুতে তাকে উৎকর্ষকে স্তন্যপান করাতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছিল । উদাহরণস্বরূপ, খাওয়ানোর পরে তার স্তনবৃন্তে অনেকবার ব্যথা হয়েছিল । একই সময়ে কিছুক্ষণ পরে তার স্তনবৃন্তে ফাটলের সমস্যা শুরু হয় । প্রকৃতপক্ষে স্তন্যদানকারী মহিলাদের ক্লান্তি বা অতিরিক্ত ঘুমের মতো সমস্যা রয়েছে । এমন পরিস্থিতিতে উৎকর্ষকে লালনপালন করার সময় শ্রদ্ধা নিজেকে এবং নিজের অবস্থানের খুব একটা যত্ন নেননি । এমন অবস্থায় সমস্যা বাড়তে থাকলে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন তিনি । তিনি শুধু শ্রাদ্ধকে খাওয়ানোর জন্য সঠিক অবস্থান সম্পর্কেই শেখাননি, তাকে স্তনে দুধ জমা হতে না-দেওয়ার জন্যও বলেছিলেন । শিশু সম্পূর্ণ দুধ পান করতে না পারলে স্তন চেপে বা পাম্পের সাহায্যে বাকি দুধ বের করে নিন । শ্রদ্ধা জানান এর পর তার স্তন পান করানোর সমস্যা অনেকটাই কমে যায় ৷
বেঙ্গালুরুর কেয়ার ক্লিনিকের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুধা এম রায় জানান, কখনও কখনও মায়ের স্তন্যপানের সমস্যা শিশুর জন্য সঠিক পরিমাণে দুধকে প্রভাবিত করে । যদি শিশুর বয়স ছয় মাস হওয়ার আগেই মহিলার এই ধরনের সমস্যা হয় এবং তিনি এই বা অন্য কারণে শিশুকে প্রয়োজনীয় পরিমাণে স্তন পান করাতে না-পারেন তাহলে শিশুর স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে । একই সঙ্গে স্তনে কোনও ধরনের সংক্রমণের কারণে শিশুর স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ।
কীভাবে সমস্যা এড়ানো যায় ?
ডাঃ সঙ্গীতা ভার্মা বলেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে শিশুর জন্মের আগে এবং প্রসবের পরপরই, মহিলাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য সঠিক অবস্থান এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা সম্পর্কে অবহিত করা উচিত । যার কয়েকটি নিম্নরূপ ।
শিশুকে সবসময় আরামদায়ক অবস্থায় বসে খাওয়াতে হবে । মনে রাখবেন শিশু যখন দুধ পান করবে তখন যেন তার নাক চেপে না-থাকে এর জন্য শিশুকে শুরুতে দুই আঙুলের মাঝে স্তনবৃন্ত রেখে স্তন্যপান করানো যেতে পারে ।
সাধারণত, মহিলারা প্রসবের পরে স্তন্যপান করানোর সময় সোজা হয়ে বসতে এবং বাঁকাতে অসুবিধা হয় । এই ক্ষেত্রে নার্সিং বালিশ খুব সহায়ক হতে পারে । একই সঙ্গে শিশুকে খাওয়ানোর সময় তাকে সাধারণ বালিশের সাহায্যে বা তার ওপর শুয়েও খাওয়ানো যেতে পারে । এটি কেবল মায়ের স্তন্যপান করানোই সহজ করে না বরং মাকে বসতে আরাম এবং হাতের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে ।
খাওয়ানোর আগে এবং পরে স্তনবৃন্ত পরিষ্কার করুন ।
স্তন সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন ।