বিশ্বের 2 থেকে 10 শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা মহিলা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের শিকার । গর্ভাবস্থায় নানা কারণে এটা হতে পারে । তা একদম আলাদাভাবে মোকাবিলা করতে হবে । যাতে শিশুকে প্রভাবিত না করে মা-কে নিরাপদে রাখা যায় । স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. পূর্বা সাহাকারি এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন ।
গর্ভাবস্থায় হাইপারটেনশন এই চারটি প্যাটার্নে হতে পারে :
- যখন কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা গর্ভাবস্থার আগে বা 20 সপ্তাহের (5 মাস) মাথায় উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে শুরু করেন ।
- যখন কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলার 20 সপ্তাহের পর উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয় । তা প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষায় পাওয়া প্রোটিনের উপস্থিতির সঙ্গে যুক্ত ।
- যখন 20 সপ্তাহের পর উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয়, যা প্রস্রাবের নমুনায় পাওয়া প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত নয় ।
- 1 ও 2 নম্বর কারণ সম্মিলিতভাবে ।
চেক আপের সময়েই হাইপারটেনশন ধরা পড়ে । যখন ব্লাড প্রেসার ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে অন্তত দুবার 140/90-এর মাত্রায় পৌঁছায় । প্রস্রাবের নমুনায় প্রোটিনের উপস্থিতি আমাদের হাইপারটেনশনের ধরণ বুঝতে সাহায্য করে ।
কাদের ঝুঁকি বেশি ?
- প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা
- 40 বা তার বেশি বয়সের মহিলা
- পূর্বের গর্ভাবস্থার সময় যাঁর উচ্চ রক্তচাপের হিস্ট্রি রয়েছে ।
- যাঁদের ডায়াবিটিস, স্থূলতা এবং গর্ভাবস্থার আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে । যাঁদের ধূমপান, অটোইমিউনড ডিজ়িজ, কিডনির সমস্যার হিস্ট্রি রয়েছে ।
- যমজ বা একাধিক প্রেগনেন্সি।
অন্তঃসত্ত্বাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ -
- পা ফুলে যাওয়া, হাত ও মুখ ফুলে যাওয়া ।
- মাথাব্যাথা, ঝিমুনি, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, অস্বাভাবিক যন্ত্রণা, হঠাৎ নসিয়া এবং বমি ইত্যাদি ।
অন্তঃসত্ত্বাদের হাইপারটেনশন মায়ের পাশাপাশি ভ্রুনের ওপরেও প্রভাব ফেলতে পারে -
- মায়েদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভরতি করার বা এমার্জেন্সি ডেলিভারির প্রয়োজন হতে পারে । কনভালসন, লিভারের সমস্যা, ব্রেন হেমারেজ এবং স্ট্রোকও হতে পারে ।
- হাইপারটেনশনে আক্রান্ত মহিলাদের গর্ভে ভ্রুণের বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে । আগেই ডেলিভারি, জটিলতা, জন্মের সময় কম ওজন, এমনকী ভ্রুণের মৃত্যুও ঘটতে পারে ।
- কীভাবে যত্নবান হবেন :
- এক্ষেত্রে মহিলাদের ঘনঘন তাঁদের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যেতে হবে এবং তাঁদের অতিরিক্ত রক্তপরীক্ষা ও বিশেষ আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষাও করাতে হতে পারে ।
- নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা এবং চার্টে লিখে রাখলে পর্যবেক্ষণে সুবিধা হবে ।
- পর্যাপ্ত ঘুম, বিশ্রাম, অল্প হাঁটা, মেডিটেশন করা যেতে পারে ।
- প্রয়োজন হলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হবে, যাতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ।