গ্রীষ্মকালে সূর্যের তীব্র তাপ স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে বেড়ে যেতে পারে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি । তাই ঘর থেকে বের হওয়ার আগে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা অবশ্য়ই প্রয়োজন (Summer Health Tips) ৷ কারণ হিট স্ট্রোক অনেক সময় প্রাণঘাতীও হতে পারে ।
হিট স্ট্রোক কাকে বলে:
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলে, "হিট স্ট্রোক হল সবচেয়ে গুরুতর তাপ-সম্পর্কিত অসুস্থতা । যখন শরীর তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম হয়, তখনই এই সমস্যা ঘটে ৷ শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং ঘামের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় ৷ যার জেরে শরীর ঠান্ডা হতে পারে না । শরীরের তাপমাত্রা 10 থেকে 15 মিনিটের মধ্যে 106° ফারেনহাইট বা তার বেশি বেড়ে যেতে পারে । জরুরি চিকিৎসা না দিলে হিট স্ট্রোক মৃত্যু বা স্থায়ী অক্ষমতার কারণ হতে পারে ।"
হায়দরাবাদের ভিআইএনএন হাসপাতালের চিকিৎসক তথা এমডি ডঃ রাজেশ ভুক্কালা জানান, যখন কেউ দীর্ঘক্ষণ ধরে এই তীব্র দাবদাহের মধ্যে বাইরে থাকেন, তখন তিনি হিট স্ট্রোকের সম্মুখীন হতে পারেন ৷ শরীর যখন তার চাহিদা পূরণ করতে অক্ষম হয়, তখনই হিট স্ট্রোক হয় । এই অবস্থাটি বয়স্কদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ৷ 50 বছরের বেশি বয়সিদের এসময় খুব সচেতন থাকা উচিত ৷ বিশেষত যখন আশেপাশের তাপমাত্রা 40ºC এর বেশি হয় ।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ:
ইন্দোরের জেনারেল ফিজিশিয়ান, ডাঃ সুভাষ বাত্রার মতে, গ্রীষ্মের মরশুমে সরাসরি সূর্যের আলোতে দীর্ঘ সময় ধরে থাকার কারণে সাধারণত হিট স্ট্রোক হয় । যাঁরা ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায় । তিনি জানান, হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা 104 ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তারও বেশি বাড়তে পারে, যা মারাত্মক হতে পারে । কিছু অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে- বিভ্রান্তি, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান বা কোমা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস, ত্বক লাল হওয়া, মাথাব্যথা ইত্যাদি ।
হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে কী করবেন:
ডাঃ সুভাষ বাত্রা এক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন ৷ আসুন দেখে নেওয়া যাক :
- চিকিৎসার আগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ছায়ায় বা কোনও চালার নীচে এনে শুইয়ে দিন ৷ দেখবেন জায়গাটি যেন বদ্ধ না হয় ৷
- তাঁর শরীরের তাপমাত্রা কমাবার চেষ্টা করুণ ৷ মাথায় জল ঢালতে পারেন এমনকী প্রয়োজনে সাওয়ারের নীচেও শুইয়ে দিতে পারেন ৷
- কপাল, গলা, হাত, পা ভিজে তোয়ালে অথবা স্পঞ্জ দিয়ে মুছিয়ে দিন ৷ প্রয়োজনে বরফ জলও ব্যবহার করতে পারেন ৷
- যদি জ্ঞান থেকে থাকে তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রচুর জল পান করতে বলুন ৷
প্রতিরোধের জন্য় কী করা উচিত:
- সকাল 11টা থেকে 3টে অবধি বাড়ির বাইরে না থাকাই ভাল ৷ সন্ধ্যের দিকে এবং সকালে বেশিরভাগ কাজ সেরে নিন ৷
- যদি বাইরে বেরোতেই হয় ঢিলে ঢালা এবং হালকা রংয়ের সুতির পোশাক ব্য়বহার করুন ৷ এছাড়া ছাতা বা টুপিও অবশ্যই সঙ্গে নিয়ে বাইরে যাবেন ৷
- সবসময় নিজের কাছে একটি জলের বোতল রাখুন এবং বারবার জল খান ৷
- তরমুজ জাতীয় ফল অর্থাৎ যে সমস্ত ফলে জলের পরিমাণ বেশি থাকে সে ধরনের ফল বেশি খান ৷ এতে ডিহাইড্রেশন কমবে ৷
- এই সময় মদ্যপান এড়িয়ে চলুন ৷ কারণ এটি আরও বেশি ডিহাইড্রেটেড করে দেয় ৷
আরও পড়ুন: দেখে নিন ভেজা চুল সামলানোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস