42 বছরের সুধা তাঁর মেডিকেল ফাইল এবং কাউন্সেলিংয়ের জন্য রেফারেন্স নোট নিয়ে কাউন্সেলরের কেবিনে এলেন । তাঁর চোখ জলে ভেজা । কয়েক মিনিট ঘরের মধ্যে পিন ড্রপ সাইলেন্স । তারপর কাউন্সেলরই বরফটা গলালেন এবং তাঁর আসার কারণ জানতে চাইলেন । পাথরের মতো মুখ করে সুধা কাউন্সেলরকে নোটটা দিলেন এবং বললেন যে কয়েকটা রুটিন পরীক্ষার জন্য তিনি ডাক্তারের কাছে এসেছিলেন । ডাক্তার তাঁকে কয়েকটি ব্লাড টেস্ট এবং ম্যামোগ্রাফি করতে বলেছেন ।
সুধা একজন পরিশ্রমী গৃহবধূ এবং দুই সন্তানের মা । টেস্ট করাতে হবে শুনে তিনি কেঁপে উঠেছেন । একরাশ দুশ্চিন্তা তাঁকে গ্রাস করেছে, “আমার কী হবে? সন্তানদের কী হবে? আমি আমার পরিবারকে দেখব কী করে?”
কাউন্সেলর সহানুভূতির সঙ্গে তাঁর সব কথা শুনলেন, তারপর রোগ সম্পর্কে মনস্তাত্ত্বিক শিক্ষা শুরু হল । কাউন্সেলর বুঝিয়ে বলেন যে প্রাথমিক পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে মানেই এটা নয় যে তাঁর ক্যান্সার হয়েছে । যেহেতু সুধার পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস রয়েছে, তা এটা একটা প্রাথমিক পদক্ষেপ । আজ বিজ্ঞান ও চিকিৎসাব্যবস্থার যেভাবে উন্নতি হয়েছে, তাতে অনেকধরণের ক্যান্সারই শুরুতে ধরা পড়লে এবং সঠিক চিকিৎসায় সেরে যায় ।
এটা জানার পর সুধা চিকিৎসকদের পরামর্শমতো পরীক্ষা করাতে মানসিকভাবে প্রস্তুত হলেন এবং ফলাফলের অপেক্ষায় রইলেন ।
সুধার মতো বহু মহিলাকেই কোনও না কোনও সময় এধরণের পরীক্ষা করাতে হয় এবং প্রথমেই তাঁরা তাঁদের পরিবারের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন । ক্যান্সার শব্দটাই মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত কারণ আমরা অনেককেই ক্যান্সারে কষ্ট পেতে দেখেছি বা প্রিয়জনদের হারিয়েছি । কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই তা সেরেও গেছে, সাহসীরা এই যুদ্ধে লড়ে জিতে এসেছেন ।
আরও ভাল করে বোঝার জন্য মিথ এবং সত্যিগুলোকে যাচাই করা যাক:
মিথ: যাঁদের ক্যান্সার হয়, তাঁদের অন্যদের থেকে দূরে থাকা উচিত ।
সত্যি: ক্যান্সার ছোঁয়াচে নয় । টিউমার বা ক্যান্সার কোষ শরীরের মধ্যেই তৈরি হয় এবং ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার মতো তা ছড়িয়ে পড়ে না ।