কলকাতা, 15 নভেম্বর: আজ বিশ্ব সিওপিডি দিবস ৷ বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণের ফলে ফুসফুস সংক্রান্ত 'ক্রনিক অবস্টাকল পালমোনারি ডিজিজ' বা সিওপিডি রোগের সঙ্গে এখন কমবেশি সকলেই পরিচিত ৷ 2002 সাল থেকে নভেম্বর মাসের তৃতীয় বুধবার বিশ্বজুড়ে সিওপিডি দিবস পালিত হয় ৷ এরপর কেটে গিয়েছে 20 বছর। সারা বিশ্বে এই দিনটি পালিত হচ্ছে ৷
এই বছরের থিম 'ব্রিদিং ইজ লাইফ, অ্যাক্ট আরলিয়ার' অর্থাৎ 'শ্বাস নেওয়া মানেই জীবন, তাড়াতাড়ি সচেতন হন' ৷ এই বিষয়ে লখনউয়ের কিং জর্জ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক-অধ্যাপক ডাঃ বেদ প্রকাশ বলেন, "এই বছরের থিমের লক্ষ্য দ্রুত ফুসফসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো ৷ তার সঙ্গে তাড়াতাড়ি রোগের শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা শুরু হওয়া ৷"
বিশ্বে বাড়তে থাকা দূষণের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে ফুসফুসের এই রোগ ৷ তাই বিশ্বের মানুষকে সিওপিডি সম্পর্কে সচেতন করাই এই দিনটির মূল উদ্দেশ্য ৷ আজ, 15 নভেম্বর গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ফর ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ লাংগ ডিজিজ বা গোল্ড এই দিনটিতে সিওপিডি নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার করবে ৷ আর এই সংস্থার সঙ্গে যোগ দেবেন চিকিৎসক, সিওপিডি রোগী এবং আরও অনেকে ৷ 50টিরও বেশি দেশে বিভিন্ন সংস্থা নানা ধরনের কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে সিওপিডি বিষয়ে মানুষকে সচেতন করবে, প্রচার করবে ৷ তবে সিওপিডিকে আটকানো যায়, এরও চিকিৎসা আছে ৷
সিওপিডি কী ? একবিংশ শতকের অত্যাধুনিক বিশ্বজুড়ে উন্নয়নের ডংকা বাজছে, অন্যদিকে বেড়ে চলেছে বিভিন্ন রকমের দূষণ ৷ এর মধ্যে অন্যতম বায়ুদূষণ ৷ এর মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সিওপিডির কারণ ৷ এই রোগ প্রসঙ্গে ডাঃ প্রকাশ বলেন, "সিওপিডি রোগীদের ক্ষেত্রে বায়ুথলিগুলি ছোট হয়ে যায় ৷ এমনকী ফুসফুসের কিছু অংশে মিউকাস জমে সেই অংশটি নষ্ট হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে ৷ ক্ষতস্থানগুলি ফুলে ওঠে ৷"
চিকিৎসক-অধ্যাপক আরও জানান, এই রোগে শ্বাসকষ্ট ক্রমশ বাড়তে থাকে ৷ তাই রোগীর পক্ষে প্রতিদিনের সাধারণ জীবন যাপনও সমস্যার হয়ে ওঠে ৷ আর চিকিৎসার খরচও ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় তা পরিবারের উপর বোঝা হয়ে যায় ৷ ক্রনিক অবস্টাকল পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডিতে কখনও কখনও রোগীর যন্ত্রণা এতটাই তীব্র হয় যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় ৷ তবে রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে ৷
সিওপিডির লক্ষণ: সিওপিডি হলে রোগীর কাশি হতে থাকে, শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগতে হয়, দমবন্ধ লাগে, রোগী সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন, খুব ঘন ঘন ফুসফুসে সংক্রমণ হয় ৷ এর সঙ্গে রোগীর ওজন কমতে থাকে এবং রোজের কাজকর্ম করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে ৷ তবে ওষুধে কিছুটা স্বস্তি পান রোগী ৷
কেন হয় সিওপিডি ?
1. ধূমপান: চিকিৎসকরা অনেক ক্ষেত্রে মনে করেন, ধূমপান থেকে রোগী এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন ৷
2. পরোক্ষ ধূমপান: যাঁরা ধূমপান করেন না, তাঁরা প্রশ্বাসের সঙ্গে অন্যদের ধূমপানের ধোঁয়া ভিতরে নেন ৷ এতে সিওপিডি হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় ৷ দীর্ঘদিন ধরে তামাক জাতীয় পদার্থের ধোঁয়া শরীরে ঢুকলে ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে ৷