পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sukhibhava

করোনা নিয়ন্ত্রণ একটা সম্মিলিত দায়িত্ব - শারীরিক দূরত্ব

বাঘ যেভাবে তার শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে কয়েক পা পিছিয়ে যায় , ঠিক সেভাবে করোনাকে ভয়াবহ চেহারায় ফের দেখা দিয়েছে । একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়ে যাওয়াতেই এর ভয়াবহতা বোঝা যাচ্ছে । যদি প্রতিটি নাগরিক মাস্ক পরা, হাত পরিষ্কার করা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিধিগুলো মেনে চলেন, তাহলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার গতি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব ।

করোনা নিয়ন্ত্রণ একটা সম্মিলিত দায়িত্ব
করোনা নিয়ন্ত্রণ একটা সম্মিলিত দায়িত্ব

By

Published : Apr 9, 2021, 2:45 PM IST

গিয়েও বার বার ফিরে এসে প্রাণঘাতী করোনা গোটা মানবজাতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে । বাঘ যেভাবে তার শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে কয়েক পা পিছিয়ে যায় , ঠিক সেভাবে করোনাকে ভয়াবহ চেহারায় ফের দেখা দিয়েছে । একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়ে যাওয়াতেই এর ভয়াবহতা বোঝা যাচ্ছে । করোনায় আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে আমেরিকার পরেই রয়েছে ভারত । যেসব জায়গায় সবথেকে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, সেই তালিকায় আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রাজিল ও বেলজিয়ামের পরেই রয়েছে ভারত । ক্রমশ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গত মাসে নাগপুরে লকডাউন করা হয়েছে । রাতের কার্ফু জারি হয়েছে ইন্দোর, ভোপাল, সুরাত, রাজকোট, আমেদাবাদ ও ভদোদরায় ।

মহারাষ্ট্র সপ্তাহান্তে লকডাউন ও রাতের কার্ফু কার্যকর করেছে, দেশের রাজধানীতেও গতকাল থেকে রাতের কার্ফু শুরু হয়েছে । এটা উদ্বেগের বিষয়, যে উত্তর-পূর্ব ছাড়া দেশের বাকি সমস্ত রাজ্যেই কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে । আতঙ্কিত ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ইতালি লকডাউনের পথে হাঁটছে । বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে ভারতেও তা হতে পারে । কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলোকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে । যদিও বেশিরভাগ আক্রান্তের সংখ্যা দেখা যাচ্ছে মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, কেরালা, কর্নাটক, ছত্তীসগড় এবং গুজরাতে, কিন্তু বাকি রাজ্যগুলোতেও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি রয়েছে ।

বিশেষজ্ঞরা যখন লকডাউনের বদলে ব্যাপক টেস্ট, টিকাকরণ, মাস্ক পরা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরেই জোর দিচ্ছেন, তখন সরকারকেও কোভিড ছড়ানো রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে ।

আরও পড়ুন :অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার টিকায় রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা, বিশ্বজুড়ে ব্যাহত টিকাকরণ

গতবছর করোনা নিয়ন্ত্রণের জেরে লকডাউনের ফলে দেশের অর্থনীতি একেবারে ধসে পড়েছিল । খেটে খাওয়া বহু মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে । জীবিকা হারানোর ফলে শহরাঞ্চলের ১২ কোটি এবং গ্রামাঞ্চলের ২৮ কোটি মানুষ দারিদ্রের অতলে তলিয়ে গিয়েছেন । পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে লকডাউনের সময় কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা আমরা দেখেছি ।

যখন মনে করা হচ্ছে, যে আগামী দুমাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে, তখন সবাইকেই ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে সংক্রমণের সংখ্যা না বাড়ে । বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মধ্যে দিয়ে ৭০ শতাংশ সংক্রমণ আটকানো যেতে পারে । এরমধ্যেই সবাইকে হুঁশিয়ার করে জানানো হয়েছে যে একজন করোনা রোগী ৪০০ জনের মধ্যে ভাইরাসকে ছড়িয়ে দিতে পারেন ।

গাইডলাইন বলছে, যদি কারও রিপোর্ট পজিটিভ আসে, সেক্ষেত্রে আগামী তিনদিন তাঁর অন্তত ৩০ জন আত্মীয় ও পরিচিতকে চিহ্নিত করে আলাদা রাখতে হবে । প্রত্যেক রাজ্যকে কঠোরভাবে এই গাইডলাইন মেনে চলতে হবে, পাশাপাশি সেইসব পরামর্শে গুরুত্ব দিতে হবে, যা দিয়েছে ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি) । তারা পরামর্শ দিয়েছে, যে ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মানুকেও ভ্যাকসিন দেওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত সরকারের। এছাড়াও টেস্টের গতি বাড়ানো এবং টিকাকরণকে আরও সম্প্রসারিত করার পরামর্শ দিয়েছে তারা।

যদি প্রতিটি নাগরিক মাস্ক পরা, হাত পরিষ্কার করা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিধিগুলো মেনে চলেন, তাহলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার গতি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব ।

করোনাকে তখনই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে, যখন প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপের সঙ্গে ব্যক্তিগত সচেতনতাও যুক্ত হবে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details