হায়দরাবাদ: পশুর অঙ্গ মানুষের দেহে প্রতিস্থাপনে সাফল্য় অদূর ভবিষ্য়তে অসম্ভব হলেও অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, আগামী 30-40 বছরে তা সম্ভব হয়ে উঠবে ৷ আবার অনেকেই এই মত মানতে পারেন না (Experts Opinion on Animal to Human Transplantation) ৷ জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন নামে পরিচিত এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল 17 শতাব্দিতে ৷ তখন ট্রান্সফিউশনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল পশুর রক্ত ৷ কিন্তু মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অভাবের কারণে পরে বিশেষজ্ঞরা বেবুন, শিম্পাঞ্জি, বানর প্রভৃতি অ-মানব প্রাইমেটদের কথা ভাবতে শুরু করেন ৷ শূকরের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষার বেশ কিছু ইতিবাচক ফলাফল মিলেছে ৷ কারণ শূকরের অঙ্গগুলি অনেকক্ষেত্রেই মানুষের সঙ্গে তুলনীয় ৷
তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও দীর্ঘস্থায়ী অগ্রগতি করা সম্ভব হয়নি ৷ কোচির অমৃতা হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সুধীন্দ্রন বলেন, "আগামী 30-40 বছরে এই বিষয়ে কোনও বড় অগ্রগ্রতি দেখতে পাওয়া প্রায় অসম্ভব ৷ কারণ পুরো প্রক্রিয়াটি এমন একটি পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত, যেখানে একটি প্রাণীর অঙ্গ মানবদেহে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে ৷ প্রত্যাখ্যানের এই বিষয়টি কাটিয়ে উঠতে এমন কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ,যা অত্যন্ত জটিল ৷ তাই দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য এটি মোটেই সহজ হবে না ৷ "
ফোর্টিস হাসপাতালের সিটিভিএস বিভাগের ডিরেক্টর এবং হেড ডাঃ উদগাথ ধীরের মত কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা ৷ তিনি জানান, আগামি দিনে পশুর অঙ্গগুলিকে মানুষের শরীরের সঙ্গে আরও সামঞ্জস্য়পূর্ণ করে তুলতে পারলে জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন অবশ্য়ই সম্ভব ৷ তিনি বলেন, "আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী যে, অদূর ভবিষ্যতে আমরা জেনোট্রান্সপ্লান্টেশনে সক্ষম হব ৷ আমরা ইমিউন সিস্টেমে এমন পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি, যাতে শরীর এই অঙ্গগুলিকে একটি অংশ হিসাবে গ্রহণ করে ৷ প্রত্যাখ্য়ান না করে ৷"
তিনি আরও বলেন, "এই ক্ষেত্রে অনেক বৈচিত্র এসেছে ৷ আমরা জেনেটিক স্তরে পৌঁছে সেই কোষগুলিকে মাস্ক পরাচ্ছি যে কোষগুলি সঙ্গে সঙ্গে বা পরে এধরণের অঙ্গগুলিকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে বা তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ৷ নতুন সেলুলার প্রযুক্তির বিকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ডিএনএর এমন রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম হব যাতে এই অঙ্গগুলি শরীরেরই অংশ হয়ে ওঠে ৷ তাই অদূর ভবিষ্যতে হয়ত আমরা আরও ভাল ফল পাব ৷ "