হিং হল এমন একটি মশলা, যা আমরা বহু বছর ধরে আমাদের হেঁশেলে ব্যবহার করে আসছি । কিন্তু এর যে কত গুণাগুণ আছে, তা সম্পর্কে অনেকেই অবহিত নন । আগের মতো এখনও একাধিক আয়ুর্বেদিক দ্রব্য তৈরিতে এর প্রয়োগ হয় । পুনের কল্পায়ূ হেলথ কেয়ার ক্লিনিক, আয়ুর্বেদিক ফার্মাসিউটিক্যালসের MD ডাঃ কল্পেশ রমেশলাল বাফানা বলেছেন, "হিং তথা ফেরুলা ফোটিডা দু’রকম হয় । একটার রং কালো, যার তীব্র গন্ধ আছে । আর একটার রং সাদা, যা ওষুধে ব্যবহৃত হয় ।"
ডাঃ কল্পেশের মতে, হিংয়ের নিম্নলিখিত গুণাগুণ রয়েছে :
1. নার্ভাস সিস্টেম
- হিংয়ের গন্ধ তীব্র এবং কটূ । তাই এটিকে স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উদ্দীপক হিসাবে ব্যবহার করা হয় । নার্ভাস সিস্টেমকে উদ্দীপিত করতে এটি ব্যবহৃত হয় ।
- হিং বেদনানাশক । তাই গাঁটের ব্যথা অথবা মাংসপেশীর ব্যথা নিরাময়ে, ওই অংশে মালিশ করার তেলগুলির অন্যতম সক্রিয় উপাদান হল হিং । যেহেতু এটি উষ্ণতাবর্ধক, তাই ব্যথা কমাতে, ব্যথার উপশমে সাহায্য করে ।
- বহু আয়ুর্বেদিক দ্রব্যে হিংকে 'অ্যান্টিকনসালভ্যান্ট' তথা 'খিঁচুনি-রোধক' হিসাবে ব্যবহার করা হয় । অতর্কিতে অসুস্থতার মুখে পড়লে, তা প্রতিরোধে সাহায্য করে । তাছাড়া এটি প্যারালিসিস, ফেশিয়াল পালসি, সায়াটিকা, এপিলেপসি প্রভৃতি নিরাময়েও উপকারী ।
2. রেসপিরেটরি সিস্টেম
শ্বাসযন্ত্রের অতি সাধারণ রোগ-ব্যাধির তালিকায় পড়ে ঠান্ডা লাগা, সর্দি এবং টানা কাশি । এই রকম পরিস্থিতিতে আমাদের ফুসফুস এক ধরনের বাধার মুখে পড়ে, যা প্রকৃতিতে আঠালো । একে ফেলগাম বলে । তাই, শ্বাসযন্ত্রে আটকে থাকা এই ফেলগামকে দূর করতে হিং খুবই উপকারী । কারণ এটি অত্যন্ত উষ্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন ঔষধি উপাদান ।
3. সারকুলেটরি সিস্টেম
পেরিকার্ডিয়াল ইফিউশন নামে এক ধরনের পরিস্থিতিতে, তরল পদার্থ আমাদের হৃৎপিণ্ডের চারপাশে এসে জমে থাকে । এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হিং ভালো কাজ করে । যাদের হৃৎপিণ্ড দুর্বল বা যাদের হৃদগতি ধীর লয়ের, তাদের ক্ষেত্রেও হিং উপকারী ।