হায়দরাবাদ, 9 সেপ্টেম্বর : কয়েকশো বছর ধরে মানুষ দেখে আসছে যে সাধারণত রাতে অ্যাস্থমার (asthma) প্রকোপ বাড়ে ৷ এর জন্য "সার্কাডিয়ান সিস্টেম"কে দায়ী করেছেন গবেষকেরা ৷
রাতেই কেন অ্যাস্থমা রোগীদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়
অ্যাস্থমা রোগীদের মধ্যে 75 শতাংশের ক্ষেত্রেই অ্যাস্থমা বাড়ার ঘটনা হয় রাতে ৷ অ্যাস্থমা বাড়ার ক্ষেত্রে আচরণগত কারণ, প্রাকৃতিক বিষয়, বাতাসের তাপমাত্রা, শারীরিক ভঙ্গি আর ঘুমোনোর সময় চারপাশের পরিস্থিতি প্রভাব ফেলে ৷
ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় (Oregon Health and Science University), ব্রিগহ্যামের একটি দল এবং মহিলাদের হাসপাতালের সদস্যদের নিয়ে একটি গবেষক দল গঠন করা হয় ৷ তাঁরা 24 ঘণ্টায় ধরে শরীরের ভিতরে চলতে থাকা প্রক্রিয়াগুলির পুনরাবৃত্তি কী ভাবে হয়, তা বোঝার চেষ্টা করেন ৷ এই প্রক্রিয়াকে "সার্কাডিয়ান সিস্টেম" (Circadian System) বলা হয় ৷
মস্তিষ্কের কেন্দ্রীয় অংশ (central pacemaker), শরীরে চলতে থাকা "ঘড়ি" (clocks) নিয়ে তৈরি এই সার্কাডিয়ান সিস্টেম ৷ এর উপরে নির্ভর করে শরীরের প্রতিদিনের ক্রিয়া-প্রক্রিয়া আর কী ভাবে পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তা পরিবর্তন হবে, তাও অনুমান করা যায় এই পদ্ধতি থেকে ৷
আরও পড়ুন : Sukhibhava : নতুন ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি, ভ্যাকসিনের সুরক্ষাও হার মানতে পারে, জানাচ্ছে গবেষণা
ব্রিগহ্যামের "স্লিপ অ্যান্ড সার্কাডিয়ান ডিসঅর্ডারস"-এর (Division of Sleep and Circadian Disorders) "মেডিক্যাল ক্রোনোবায়োলজি প্রোগ্রাম"-এর (Medical Chronobiology Programme) ডিরেক্টর ফ্র্যাঙ্ক এজেএল শিয়ার (Frank AJL Scheer) বলেন, "সার্কাডিয়ান পদ্ধতির প্রভাব অন্য আচরণগত আর পরিবেশগত বিষয়, এমনকি ঘুমের থেকেও আলাদা ৷"
ওরেগন ইনস্টিটিউট অফ অকুপেশনাল হেলথ সায়েন্সেস-এর (Oregon Institute of Occupational Health Sciences) অধ্যাপক স্টিভেন এ শিয়া (Steven A. Shea) বলেন, "আমরা খেয়াল করেছি যে যাঁরা অ্যাস্থমায় বেশি আক্রান্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে সাধারণত রাতের দিকে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া (pulmonary function) সার্কাডিয়ান পদ্ধতি দ্বারা প্রভাবিত হয় ৷ অর্থাৎ রাতে এই সার্কাডিয়ান পদ্ধতি ওঠানামা করে বলে, তাঁরা শ্বাসকষ্টে ভোগেন বেশি ৷ আর তাই তাঁদের আচরণে বদল ঘটে, এমনকি ঘুমেও পরিবর্তন হয় ৷"
এই গবেষণা "দ্য প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস" (The Proceedings of the National Academy of Sciences) প্রকাশিত হয়েছে ৷
সার্কাডিয়ান পদ্ধতির প্রভাব বুঝতে এই গবেষক দল 17 জন অ্যাস্থমা রোগীর উপর গবেষণা চালান ৷ এই রোগীরা শ্বাসকষ্টের সময় কোনও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করতেন না, কিন্তু "ব্রঙ্কোডিলেটর ইনহেলর" (bronchodilator inhaler) ব্যবহার করতেন ৷ দু'টি পরিপূরক ল্যাবরেটরির প্রোটোকল (complementary laboratory protocols) অনুযায়ী ফুসফুসের প্রক্রিয়া, অ্যাস্থমার লক্ষণ এবং ব্রঙ্কোডিলেটরের ব্যবহার নিয়ে সারাক্ষণ মূল্যায়ন চালানো হয়েছিল ৷
তাঁদের কঠিন নিয়মের আওতায় রাখা হয়েছিল ৷ হালকা আলোর তলায় একই ভঙ্গিতে একটানা 38 ঘণ্টা জেগে থাকা এবং দু'ঘণ্টা অন্তর অন্তর একই রকম খাবার খেতে হয়েছিল তাঁদের ৷