অ্যাকোয়াথেরাপি হল সেই পদ্ধতি, যা জলের মাধ্যমে একজন থেরাপিস্ট চিকিৎসা, পুনর্বাসন, প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য, ফিটনেস ইত্যাদির লক্ষ্যে কোনও রোগী বা গ্রাহকের উপর প্রয়োগ করেন । এটা কারও সহায়তা, নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্র ব্যবহার করে কিংবা না করেও করা যায় ।
এই পদ্ধতি সমস্ত বয়সের মানুষ, যাঁদের নানা অক্ষমতা, অসুখ ও সমস্যা আছে, তাঁদের পক্ষে সহায়ক হতে পারে। যদি জলের মধ্যেই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়, তাহলে বেশি সুফল মেলে।
অ্যাকোয়াথেরাপি কীভাবে কাজ করে?
- প্লবতা হচ্ছে একটা ঊর্ধ্বমুখী বল, যা আপনার সমস্ত জয়েন্টের উপর থেকে চাপ কমায় । প্লবতার সাহায্যে নানা ধরনের মুভমেন্ট সহজে করা যায় । এতে আপনার টিস্যুগুলো আরও বেশি স্ট্রেচ করা সম্ভব হয় । এর মাধ্যমে পড়ে যাওয়ার ভয় ছাড়াই আপনি আপনার ব্যালেন্সের উন্নতিতে মন দিতে পারেন । নোনা জলের প্লবতা বেশি, তাই তা সাধারণ পুলের তুলনায় বেশি উপকারী ।
- হাইড্রোস্ট্যাটিক প্রেসার হচ্ছে সেই চাপ, যা জল আপনার শরীরের উপর প্রয়োগ করে । এর ফলে নড়াচড়া করতে বাধা আসে এবং আপনি নিজের মুভমেন্ট সম্পর্কে অবগত হতে পারেন । এতে আপনি হাঁটা, স্কোয়াট করা, পা ফেলার মতো দৈনন্দিন মুভমেন্টগুলোতে আরও ভারসাম্য আনতে পারেন ।
- আমাদের পুলের উষ্ণতা 92-93 ডিগ্রি ফারেনহাইটে রাখা হয়, যাতে আপনার ব্যায়ামের সময় কঠিন টিস্যুগুলো শিথিল থাকতে পারে, কারণ এই উষ্ণতা আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ উষ্ণতার কাছাকাছি । কঠিন টিস্যুগুলি শিথিল হলে নমনীয়তা বাড়ে এবং ব্যথা কমায় ।
অ্যাকোয়াথেরাপির উপকারিতা
- পেশি শিথিল হয় এবং জলের উষ্ণতার প্রভাবে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ।
- স্ট্রেংথ ট্রেনিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ মেলে ।
- উষ্ণ জলের সাহায্যে শরীর সচেতনতা, ভারসাম্যের উন্নতি করা যায় ।
- পুলের মধ্যে অভিকর্ষজ টান কম কাজ করার ফলে কোনও ক্ষতি ছাড়াই কঠিন ব্যায়াম করা যেতে পারে ।
- ব্যথার ক্ষেত্রে অত্যাধিক সংবেদনশীলতা কমে ।
- যন্ত্রণা কমায় এবং পেশির কাঠিন্য আটকায় ।
- জয়েন্ট মুভমেন্ট উন্নত করে ।
- পক্ষাঘাতগ্রস্ত পেশীকে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে ।
- দুর্বল পেশীকে শক্তিশালী করে যাতে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় ।
- হাঁটাহাঁটি এবং অন্যান্য কাজকর্মে উৎসাহ মেলে ।
- রক্ত চলাচল ভাল হয় ।
- ব্যায়ামের ক্ষেত্রে রোগীর মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্যও এই পদ্ধতি প্রয়োগ হয় ।
- জলের উষ্ণতা থার্মাল রিসেপটর এবং মেকানোরিসেপটরে প্রভাব ফেলে ব্যথাকে আটকায় ।
- উষ্ণ জল রক্তের প্রবাহকে উদ্দীপিত করে, যার ফলে পেশি শিথিল হয় ।
- হাইড্রোস্ট্যাটিক এফেক্ট স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলে এবং পেরিফেরাল ইডিমা কমায়, ফলে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলে ।