পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sukhibhava

মানসিকভাবে আপনি যে একটি অবমাননাকর, অসম্মানজনক সম্পর্কে রয়েছেন, তার 5 টি সূক্ষ্ম ইঙ্গিত

শারীরিক নিগ্রহের মতো না হলেও মানসিক নিগ্রহ চিহ্নিত করা কঠিন আর তাই এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াও সম্ভব নয় । তবে এর ফল শারীরিক নিগ্রহের মতো কিংবা তার থেকেও ক্ষতিকর হতে পারে । স্বভাবগতভাবে, এটি ছলনাময় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরোক্ষ ।

By

Published : Dec 3, 2020, 1:41 PM IST

an emotionally abusive relationship
an emotionally abusive relationship

অনুমোদনপ্রাপ্ত ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্কার এবং ট্রমা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, এডুকেটর লিজা ফেরেন্টজ, হাফপোস্টকে জানিয়েছেন, “যাদের এর অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাদের কাছে বিষয়টা অত্যন্তই বিভ্রান্তিকর । কারণ সাধারণভাবে এটি এমন ব্যবহারশৈলীর মধ্যে পড়ে, যাকে প্রাথমিকভাবে যত্নশীল বলে ভ্রম হতে পারে ।” প্রাথমিকভাবে তারা এমন সদয় এবং বিবেচকের ন্যায় আচরণ করতে পারেন, যা তাদের নিপীড়িত বা নিপীড়িতার বিশ্বাস জিততে সাহায্য করে । লিজা ব্যাখ্যা করে জানালেন, “তারা নিপীড়িত বা নিপীড়িতার আস্থা অর্জন করে ফেলেন যার ফলে নিপীড়িত-নিপীড়িতাকে বার বার নিগ্রহ সহ্য করে যেতে হয় ।”

এখানে সেই 5 টি ইঙ্গিতের কথা বলা হল, যা জানিয়ে দেবে, আপনি কোনও অবমাননাকর সম্পর্কে আছেন কি না ।

1. আপনি সবসময় আপনার সঙ্গীকে যাতে হতাশ হতে না হয়, তার চেষ্টা করেন

আপনি একের পর এক অনুমান করছেন এবং নিজের যুক্তিকেই খণ্ডন করে চলেছেন । যার অর্থ এই যে আপনি ঈষৎ অবমাননাকর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েও তাকে নিজের করে নিয়েছেন যাতে আপনার সঙ্গীর ব্যবহারে তা জোরালোভাবে প্রকাশ না পায় । এমনটাই জানিয়েছেন সাইকোলজিস্ট তথা ‘লাভ উইদাউট হার্ট’-এর লেখক স্টিভেন স্টোসনি । এর অর্থ এটাও যে আপনি স্বাধীন নন এবং নিজের বাড়িতে নিরাপদও নন । আপনি স্রেফ দেখছেন, আপনার কাজের প্রেক্ষিতে কী কী ঝুঁকি হতে পারে আর চেষ্টা করছেন, আপনার সঙ্গীর ঠিক করে দেওয়া নিয়মনীতি মেনে চলার ।

2. সম্পর্কে আধিপত্য খাটানোর চেষ্টা করছেন আপনার সঙ্গী

সাইকোলজিস্ট তথা ‘উওম্যান উইথ কন্ট্রোলিং পার্টনারস’-এর লেখিকা ক্যারল এ ল্যামবার্ট বলেছেন, “আপনার সঙ্গীটি আপনাকে বাস্তবের আয়না দেখান । কোনও জিনিসের সম্পর্কে সওয়াল করেন বা বিপক্ষে বলেন কিংবা তথ্য বিকৃত করেন, শুধুমাত্র আপনাকে এটা বোঝানোর জন্য যে তাঁরা কোন জিনিসকে কীভাবে দেখছেন । এটা জাহির করার সবথেকে সাধারণ উপায় হল ‘তুমি ঠিক করে মনে করতে পারছে না’, ‘আমি কখনও তা বলিনি’ কিংবা ‘আমি কখনও তা করিনি’। তারা হয়তো এটা জাহির করার চেষ্টা করেন যে, আপনার কথায় কোনও যুক্তি নেই বা আপনার ধারণায় কোনও ভুল আছে অথচ বাস্তব সেটা নয় । এর কারণ, তাদের প্রতিক্রিয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার মনে নিজের সিদ্ধান্তকে সন্দেহ করার ধারণা তৈরি করতে পারে এবং আপনি আপনার সঙ্গীর দেখানো পথেই চলতে পারেন । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের সিদ্ধান্তকে সন্দেহ করার প্রবণতা আপনার ধ্যানধারণা ও বিচারে আস্থার অভাব তৈরি করতে পারে যার ফলে আপনি আপনার সঙ্গী, যিনি আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তার উপর মানসিকভাবে আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারেন ।”

3. নিজের ভুল না হলেও যখন আপনাকে ক্ষমাপ্রার্থী হতে হয়

“আবেগগতভাবে নিগ্রহের শিকার হওয়া মানুষজন প্রায়ই এটা বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে তারা বোকা, হঠকারী কিংবা স্বার্থপর কারণ তাদের সঙ্গী তাদের প্রায়ই নানা কারণে দায়ি করতে থাকেন ।” এমনটাই বলছেন সাইকোথেরাপিস্ট এবং ‘দ্য ইমোশনালি অ্যাবিউসিভ রিলেশনশিপ’-এর লেখিকা বেভারলি ইঙ্গেল ।

4. আপনার সঙ্গীর প্রায়ই মুড সুইং হয়

‘ডটার ডিটক্স : রিকভারিং ফ্রম অ্যান আনলাভিং মাদার অ্যান্ড রিক্লেমিং ইওর লাইফ’-এর রচয়িতা পেগ স্ট্রিপ বলেছেন, “আপনার সঙ্গীটি এক মুহূর্তে আপনাকে ভালোবাসছেন আর পরমুহূর্তেই দূরে চলে যাচ্ছেন, যোগাযোগ হচ্ছে না । এর কারণ আপনি যতই খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন না কেন, পারেন না । তারা এটা অস্বীকার করেন আর আপনার আতঙ্ক শুরু হয় কবে আবার সব স্বাভাবিক হবে । অথচ কেন এটা হয়, তার কারণ অজানাই থেকে যায় । তখন আপনি সব কিছুর জন্য নিজেকেই দোষারোপ করতে শুরু করেন । অনেকবার এরকমই হয় আর এটাই তুলনামূলকভাবে স্বাধীনচেতা কোনও মানুষকে ব্যস্তসমস্তভাবে সঙ্গীর মন জয়ের চেষ্টা করতে বাধ্য করে দেয় । আপনার সঙ্গীটি কিন্তু এটাই চান ।”

5. আপনার কৃতিত্ব স্বীকার করতে আপনার সঙ্গী অনীহা দেখান

ল্যামবার্টের মতে, “আপনার কৃতিত্ব কিংবা কোনও বিষয়ে আপনার ইতিবাচক মনোভাবের প্রতি আপনার সঙ্গীর প্রতিক্রিয়া অনেক কিছু জানিয়ে দেয় । আপনার সঙ্গী কি এ সবের প্রতি সামান্যও আগ্রহ দেখান ? না আপনাকে এড়িয়ে যান ? আপনি যা বলেন, তাকে কি তিনি খাটো চোখে দেখেন ? তিনি কী আপনার কথা বলার সময় বিষয় বদল করে দিয়ে আপনাকে ছোটো করেন বা আপনি যা করেননি, তা নিয়ে সমালোচনা করেন ? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ধরনের মনে আঘাত দেওয়া প্রতিক্রিয়ার জেরে নিজের প্রতি আপনার বিশ্বাস এবং আপনার প্রতিভার উপর আপনার আস্থা ধীরে ধীরে খর্ব হতে থাকে ।”

ABOUT THE AUTHOR

...view details