রায়গঞ্জ, 14 জুন: “পশ্চিমবঙ্গ একসময় জ্ঞান-বিজ্ঞানের জন্য পরিচিত ছিল। এখন পশ্চিমবঙ্গকে জানা যায় লেবার সাপ্লায়ার হিসেবে। গোটা ভারতবর্ষে সর্বোচ্চ শ্রমিক সরবরাহ করে পশ্চিমবঙ্গ। এটা লজ্জার বিষয়।” রায়গঞ্জে সাংবাদিক বৈঠকে এমনভাবেই সরকারকে কটাক্ষ করলেন বালুরঘাটের BJP সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।
তিনি আরও দাবি করেন, “বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না করে শুধুমাত্র 100 দিনের কাজে পরিযায়ী শ্রমিকদের যুক্ত করলেই আর্থিক সমস্যা কোনও ভাবে সমাধান হবে না। বরং খুব তাড়াতাড়ি দৈন্যদশা দেখা যাবে রাজ্যের অর্থনীতিতে।” তাঁর দাবি, বারবার করে নানান ধরনের শিল্প সম্মেলন করা হলেও কোনওভাবেই শিল্পপতিরা এই রাজ্যে আসতে চাইছেন না। তার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের 100 দিনের কাজে লাগালেই তাদের অর্থনৈতিক সমস্যা দূর হবে এটা ভাবাও ঠিক নয়।
রবিবার দুপুরে রায়গঞ্জের BJP কার্যলয়ে আসেন সুকান্তবাবু। আসন্ন বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে একগুচ্ছ নতুন কর্মসূচি নিতে চলেছে BJP। রাজ্যের 78 হাজার বুথে পৌঁছে মোদি সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরবেন BJP কর্মীরা। শুধু কাজের খতিয়ানই নয়, মানুষের মতামতও লিপিবদ্ধ করা হবে বলে জানালেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে শিল্পই একমাত্র পথ বলেও এদিন মত প্রকাশ করেন তিনি।
সুকান্তবাবু আরও বলেন, “নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করার পর এক বছরে কী কী কাজ করেছেন, তা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি চিঠি দিয়েছেন। আগামী 16-25 জুন দশদিন রাজ্যের প্রতিটি বুথে গিয়ে মোদি সরকারের সেই চিঠি পৌঁছে দেবেন BJP-র নেতা কর্মীরা। 78 হাজার বুথের মানুষের কাছে BJP-র কর্মীরা সেই চিঠি পৌঁছে দেবেন। এছাড়াও আগামীতে পশ্চিমবঙ্গে যে BJP সরকার আসতে চলেছে, তার থেকে মানুষ কী চান, কেমন ভাবে সরকার চলবে সেই বিষয়ে নাগরিকদের মতামত গ্রহণ করা হবে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প রাজ্যে কেন চালু করা হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তোলেন সাংসদ।”
রাজ্যের শিল্প ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাংসদ। তাঁর মতে, শিল্পায়ন ছাড়া বাংলার শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের কোনও উপায় নেই। শিল্পই একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুকান্তবাবু বলেন, “বামেদের শেষের দিকে বোধোদয় হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন দেশ ঘুরে, শিল্পপতিদের সঙ্গে বিজ়নেস সামিট করার পরেও কোনও শিল্পপতি পশ্চিমবঙ্গের দিকে চোখ তুলে তাকাচ্ছেন না। এর প্রধান কারণ রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা। ছোটো তেল কল চালু করতে গেলেও ছোটো-মাঝারি-বড় তৃণমূল নেতা কাটমানি নিতে পৌঁছে যান। এই পরিস্থিতি থেকে বাংলা মুক্তি না পেলে কর্মসংস্থান কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। বাইরের রাজ্যেই ফিরে যেতে হবে শ্রমিকদের।” BJP ক্ষমতায় এলে রাজ্যে শিল্পায়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।