রায়গঞ্জ, 12জুন : কোরোনা সংক্রমণ নির্ণয় করতে লালারসের পরীক্ষার জন্য শিলিগুড়ি বা মালদার ভরসায় থাকতে হবে না আর। 15 জুন থেকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুরু হবে ভাইরোলজি বিভাগ। এখন থেকে লালারস পরীক্ষার জন্য শিলিগুড়ি বা মালদাতে যেতে হবে না, বরং মেশিনের মাধ্যমে রায়গঞ্জেই নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।
প্রতিদিন 400 থেকে 450টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে এই মেশিন দ্বারা। খুব তাড়াতাড়ি জলপাইগুড়িতেও ভাইরোলজি বিভাগ চালু করা হবে। তার জন্য আনা হচ্ছে প্রয়োজনীয় মেশিনও । পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি থাকা কোরোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য টিভির বন্দোবস্তও করতে চলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। ইতিমধ্যেই বিষয়ে সমস্ত কোভিড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। শনিবার রায়গঞ্জের জেলাশাসকের দপ্তরে বৈঠক করে এমন কথাই জানালেন উত্তরবঙ্গের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি(কোভিড-19) সুশান্ত রায়।
তিনি বলেন, কোভিড হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের সময় কাটেনা কিছুতেই । বেশিরভাগ রোগীই বর্তমানে উপসর্গহীন। অনেক সময়ই তারা বিরক্ত হয়ে কখনও কখনও হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়ছেন, অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা। সেই কারণেই আক্রান্তদের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে সমস্ত কোভিড হাসপাতালগুলিতে টিভির বন্দোবস্ত করতে চলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
আগামী 15 তারিখ থেকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুরু হতে চলেছে ভাইরোলজি বিভাগ।এখন থেকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজেই লালারস পরীক্ষার কাজ চালানো হবে। সেই বিষয়ে বৈঠক করতে উত্তরবঙ্গের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সুশান্ত রায় রায়গঞ্জে এসেছিলেন। রায়গঞ্জের জেলাশাসকের দপ্তরে জেলার সবকটি পৌরসভার চেয়ারম্যান, পুলিশ সুপার, রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সহ একাধিক পদাধিকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
রায়গঞ্জে এসে উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক কোরোনা চিত্রের বিশ্লেষণ করে সুশান্ত রায় বলেন, এখনও পর্যন্ত সমগ্র উত্তরবঙ্গে মোট 995 জন মানুষ কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। মাত্র চারজনের মৃত্যু হয়েছে এই সংক্রমণে। উত্তরবঙ্গে কোরোনা আক্রান্তদের সংখ্যা যথেষ্ট কম এবং এই সংখ্যাটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্য দপ্তর একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। কোরোনা আক্রান্তদের জন্য চিকিৎসা প্রক্রিয়ার পাশাপাশি জরুরি পরিষেবায় সঙ্গে যুক্ত মানুষদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
তিনি আরও বলেন, উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই 200 শয্যার একটি স্থান বরাদ্দ করা হয়েছে। জরুরী পরিষেবা সঙ্গে যুক্ত যেকোনও ব্যক্তি আক্রান্ত হলে সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হবে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকাগুলির উপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। যে সকল ব্যক্তি উপসর্গহীন, কিন্তু ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন, তাদের লালারস নেওয়ার কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
সুশান্ত রায় আরও জানান, এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গে মোট 763 টি কোয়ারানটিন সেন্টার রয়েছে। হোম কোয়ারানটিনে থাকা মানুষের সংখ্যা দুই লাখ 83 হাজার 133।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের উচিত আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়া। কোরোনা ভাইরাস অনেকটাই শক্তি হারিয়েছে, তবে এখনই বিদায় নেবে না এই ভাইরাস।
হাসপাতালগুলিতে টিভি লাগানোর বিষয়ে সুশান্তবাবু বলেন, আমরা স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী সমস্ত কোভিড হাসপাতালগুলিতে টিভির বন্দোবস্ত করব। সাধারণত উপসর্গহীন রোগীরা বর্তমানে ওই হাসপাতালগুলিতে ভর্তি থাকছেন। সম্পূর্ণভাবে বাইরের জগত থেকে দূরে থাকার কারণে মাঝেমধ্যেই তারা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। এই বিষয়টি বন্ধ করার জন্যই আমরা এই চিন্তাভাবনা করেছি। ইতিমধ্যে হাসপাতালগুলিতে টিভি লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে।