স্টেশনের দোকানদার নরেন দাস রায়গঞ্জ, 3 জুন: বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার পর নতুন করে প্রায় 24 বছর আগের স্মৃতি উস্কে দিল উত্তর দিনাজপুরের গাইসালের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। সেই ট্রেন দুর্ঘটনায় সরকারিভাবে 294 জনের মৃত্যু হয়েছিল। দীর্ঘদিন সেই ঘটনাটি বারবারই মনে পড়ে এলাকার মানুষের । সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা মনে পরলেই শিউরে উঠতেন গাইসাল স্টেশনের পাশে চায়ের দোকানদার নরেন দাস।
বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরই উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর থানার গাইসালের দুর্ঘটনা ফের একবার উঠে এসেছে আলোচনায় । আর সেই কথা মনে করে এখনও রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন স্টেশনের চায়ের দোকানদার নরেন দাস । বয়সের ভারে অনেকটাই অচল হয়ে পড়েছেন বর্তমানে। কিন্তু 1999 সালে 2 অগস্টের দুর্ঘটনার দিন তিনি অনেকটাই সমর্থ ছিলেন নরেনবাবু। শুক্রবার বালাসোরের ট্রেন দুর্ঘটনার পর নতুন করে সেই গাইসালের স্মৃতি উস্কে উঠেছে তাঁর মনে। ওইদিন রাত পৌনে দু'টো নাগাদ বিকট শব্দে গাইসাল এলাকা কেঁপে উঠেছিল। সেই শব্দে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। আর বাইরে বার হতেই মানুষের আর্তনাদে স্পষ্টতই ঘুম উড়ে গিয়েছিল সাধারণ মানুষের।
এলাকাবাসী স্টেশনে এসে দেখেন অবধ-অসমের সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র মেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে পর ট্রেনে আগুনও ধরে গিয়েছিল। নরেনবাবু ও তাঁর প্রতিবেশী মহম্মদ বাধালু ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও কাজের কাজ কিছুই করতে পারেননি বলে দাবি তাঁর। ফলে নিজের চোখের সামনে এত মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে দেখেছেন নরেন দাসরা। শুক্রবার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার খবর শুনে নরেন দাস একেবারেই মুশরে পড়েছেন। চা দোকানদারি করলেও গতকালের পর থেকে কোনও কাজেই মন বসছে না তাঁর। দোকানেই বসে থাকছেন। ছেলেকে দিয়েই সব কাজ করিয়েছেন।
আরও পড়ুন:ট্রেন বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে 288, দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে রেল আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা প্রধানমন্ত্রীর
শনিবার গাইসালে গিয়ে নরেন দাসের এই ছবিই ক্যামেরায় ধরা পড়ল। ব্রহ্মপুত্র মেল ও অবোধ-অসম এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় 300 জনের । আহত হয়েছিলেন প্রায় 800 যাত্রী । জানা গিয়েছিল, ব্রহ্মপুত্র মেল ভারতীয় সেনা ও সার্ভিসম্যানদের নিয়ে অসম থেকে সীমান্তের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল রাত পৌনে দুটো নাগাদ । উত্তর দিনাজপুরের গাইসাল স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই উলটো দিক থেকে অবধ-অসম এক্সপ্রেসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সিগনালিংয়ের সমস্যার কারণে একই লাইনে চলে আসে ব্রহ্মপুত্র মেল এবং অবধ এক্সপ্রেস বলে জানিয়েছিল রেল । দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এমনই ছিল যে, একের অপর এক ট্রেনের বগি উঠে যায়।