রায়গঞ্জ, 7 মার্চ : বাংলা নিয়ে এম এ পাশ করে ভেবেছিলেন শিক্ষকতার চাকুরি করবেন। পরীক্ষাও দিয়েছিলেন নানা সরকারি বিভাগে। কিন্তু হয়নি। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর হতদরিদ্র সংসার ৷ সংসারের বোঝা টানতে উত্তর দিনাজপুর জেলার দক্ষিণ হেমতাবাদ গ্রামের মেয়ে সেলিনা বেছে নিলেন অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাজ। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে প্রসূতি মায়েদের মাতৃযানে তাদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান হেমতাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিংবা রায়গঞ্জ গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এভাবেই দিনরাত অসহায় দরিদ্র প্রসূতি মহিলা থেকে সাধারন মানুষকে তাঁর অ্যাম্বুলেন্সে পৌঁছে দেন হাসপাতালগুলিতে।
"বাংলার মেয়েদের উন্নয়নের জন্যই যেকোনও কাজে এগিয়ে আসতে হবে। সব মেয়েরাই যদি সমাজের পরিষেবা উন্নয়নমূলক কাজে এগিয়ে আসে তবে আরও উন্নয়ন হবে বাংলার।" আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে বাংলার মেয়েদের কাছে এমনই বার্তা দিলেন মহিলা অ্যাম্বুলেন্স চালক সেলিনা বেগমের।
একেবারে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সেলিনা বেগমের বাড়ি উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকের দক্ষিন হেমতাবাদ গ্রামে। রায়গঞ্জ কলেজ ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম এ পাশ করার পর স্বপ্ন ছিল একটা ভালো সরকারি চাকুরি করার। পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন অনেক দপ্তরে। কিন্তু হয়নি। এরপর আর বসে না থেকে সংসারের জোয়াল নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে হাতে ধরলেন অ্যাম্বুলেন্সের স্টিয়ারিং। ছুটে চলেলেন হেমতাবাদ ব্লকের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। সকাল থেকে রাত ৷ অসহায় প্রসূতি নারী থেকে গ্রামগঞ্জের দুস্থ অসুস্থ মানুষদের তাঁর অ্যাম্বুলেন্সে শুইয়ে নিয়ে যান হেমতাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিংবা রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। প্রায় আড়াই বছর ধরে মাতৃযান অ্যাম্বুলেন্সের চালক হিসেবে কাজ করে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন তিনি।