পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

অ্যম্বুলেন্স চালিয়ে দুস্থ মহিলার পাশে সেলিনা বেগম

মহিলা অ্যাম্বুলেন্স চালক ৷ দিন-রাত এক করে দুস্থ মহিলাদের সাহায্য করেন তিনি ৷ নারী দিবসের আগে লড়াকু মেয়ে সেলিনা বেগম কীভাবে অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে দুস্থ মহিলাদের সাহায্য করেন, সেকথাই উঠে এল তাঁর কথায় ৷

By

Published : Mar 7, 2021, 11:00 PM IST

লড়াকু মেয়ে  সেলিনা
লড়াকু মেয়ে সেলিনা

রায়গঞ্জ, 7 মার্চ : বাংলা নিয়ে এম এ পাশ করে ভেবেছিলেন শিক্ষকতার চাকুরি করবেন। পরীক্ষাও দিয়েছিলেন নানা সরকারি বিভাগে। কিন্তু হয়নি। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর হতদরিদ্র সংসার ৷ সংসারের বোঝা টানতে উত্তর দিনাজপুর জেলার দক্ষিণ হেমতাবাদ গ্রামের মেয়ে সেলিনা বেছে নিলেন অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাজ। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে প্রসূতি মায়েদের মাতৃযানে তাদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান হেমতাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিংবা রায়গঞ্জ গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এভাবেই দিনরাত অসহায় দরিদ্র প্রসূতি মহিলা থেকে সাধারন মানুষকে তাঁর অ্যাম্বুলেন্সে পৌঁছে দেন হাসপাতালগুলিতে।

"বাংলার মেয়েদের উন্নয়নের জন্যই যেকোনও কাজে এগিয়ে আসতে হবে। সব মেয়েরাই যদি সমাজের পরিষেবা উন্নয়নমূলক কাজে এগিয়ে আসে তবে আরও উন্নয়ন হবে বাংলার।" আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে বাংলার মেয়েদের কাছে এমনই বার্তা দিলেন মহিলা অ্যাম্বুলেন্স চালক সেলিনা বেগমের।

একেবারে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সেলিনা বেগমের বাড়ি উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকের দক্ষিন হেমতাবাদ গ্রামে। রায়গঞ্জ কলেজ ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম এ পাশ করার পর স্বপ্ন ছিল একটা ভালো সরকারি চাকুরি করার। পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন অনেক দপ্তরে। কিন্তু হয়নি। এরপর আর বসে না থেকে সংসারের জোয়াল নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে হাতে ধরলেন অ্যাম্বুলেন্সের স্টিয়ারিং। ছুটে চলেলেন হেমতাবাদ ব্লকের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। সকাল থেকে রাত ৷ অসহায় প্রসূতি নারী থেকে গ্রামগঞ্জের দুস্থ অসুস্থ মানুষদের তাঁর অ্যাম্বুলেন্সে শুইয়ে নিয়ে যান হেমতাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিংবা রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। প্রায় আড়াই বছর ধরে মাতৃযান অ্যাম্বুলেন্সের চালক হিসেবে কাজ করে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন তিনি।

কী বললেন সেলিনা বেগম

আরও পড়ুন :কিশোরী-মহিলাদের জন্য হোম তৈরির দাবিতে সরব নারী মোর্চা

তাঁর কথায়," শুধু পুরুষরাই নয়, নারীরাও কোনও অংশে পিছিয়ে নেই ৷ " সেই জেদ আর মানসিকতা নিয়ে জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে গর্বিত তিনি। প্রত্যন্ত গ্রামের কোনও অসহায় প্রসূতি নারী প্রসব যন্ত্রনায় ছটফট করছেন আর ঠিক সেইসময় সেলিনা ওই প্রসূতির বাড়িতে পৌঁছে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালে।

সমাজের মানুষের জন্য কাজ করে এক অনাবিল আনন্দ উপভোগ করেন অ্যাম্বুলেন্স চালক সেলিনা বেগম। সমাজের মেয়েদের কাছে তাঁর বার্তা বাংলার উন্নয়ন ও বিকাশে ঘরে বসে না থেকে প্রতিটি মেয়েদের বাইরে বেরিয়ে এসে বাংলার উন্নয়নে এগিয়ে আসা উচিত।

ABOUT THE AUTHOR

...view details