রায়গঞ্জ, 5 মে : রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে এবার গরমের ছুটির সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয়েছে দু'মাস । রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে চরম সমস্যার মুখে পড়েছেন শিক্ষক থেকে ছাত্রছাত্রীরা । এই নির্দেশিকার প্রতিবাদে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনগুলি আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছে ।
3 মে থেকে 30 জুন পর্যন্ত সমস্ত সরকারি স্কুলগুলি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার । ফণী ও অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই লম্বা ছুটি ঘোষণা করেছে শিক্ষা দপ্তর । তবে ছুটি ঘোষণার পরই সমস্যা তৈরি হয়েছে । বহু স্কুলে এখনও প্রথম পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা হয়নি । ফলে স্কুল খোলার পরে পরীক্ষা নেওয়া হলে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা নিতে আরও দেরি হয়ে যাবে । বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এত লম্বা ছুটি ঘোষণায় চরম ক্ষতির মুখে পড়বে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা । তাদের পাঠক্রম শেষ হবে না ।
নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির জেলা সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু রায়চৌধুরি জানিয়েছেন, টানা দু'মাস ছুটি হলে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি তাদের মিড ডে মিল থেকেও বঞ্চিত হতে হবে । তবে দুপুরের বদলে সকালে স্কুল হলে ছাত্রছাত্রীরা গরম থেকে রেহাই পাবে । আর পঠনপাঠনও বিঘ্ন হবে না । সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার থেকে জোরদার আন্দোলনে নামা হবে বলেও জানান তিনি ।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অজয় রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, দু'মাসের এই ছুটিতে স্কুলে পঠনপাঠনের চরম অসুবিধা হবে । এর মধ্যে লোকসভা নির্বাচন গেল । তাতে পঠনপাঠনের বিঘ্ন ঘটেছে । আবার দু'মাস স্কুল বন্ধ থাকলে ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা হওয়ার পাশাপাশি আমরা এবছরের পাঠক্রম শেষ করতে পারব না । তিনি আরও বলেন, "এত দিনের ছুটিতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় ক্ষতি হবে ।"
বঙ্গীয় নব উন্মেষ প্রাথমিক শিক্ষক সংঘের রাজ্য সহ-সম্পাদক সুব্রত সরকার বলেন, "রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের এই সিদ্ধান্তকে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি । এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের জন্য স্কুলে পঠনপাঠনে ব্যাঘাত ঘটবে । পাশাপাশি দু'মাস ছাত্রছাত্রীরা মিড ডে মিল থেকেও বঞ্চিত হবে । কিছু কিছু স্কুলে পরীক্ষা চলছিল । কিন্তু এই নির্দেশিকা আসায় সেসব স্কুলে বিঘ্ন ঘটেছে। তাই এই ছুটিটাকে আবার পুনর্বিবেচনা করে স্কুলগুলি খোলার নির্দেশ দেওয়া হোক ।"
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক রাজীব দেব বলেন, "প্রচণ্ড গরমের জন্য ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে আমাদের সংগঠন থেকে ছুটির জন্য একটি আবেদন করা হয়েছিল । সেই দিকে তাকিয়ে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর একটি নির্দেশিকা বের করেছে । আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সমস্ত বিদ্যালয়গুলি বন্ধ থাকবে । পরে যদি আবহাওয়া ঠিক হয়ে যায় তাহলে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর থেকে আবার নতুন করে বিদ্যালয় খোলার নির্দেশিকা আসবে এটাই আশা করছি ।" পাঠ্যসূচি শেষ করতে কোনও অসুবিধা হবে না বলে জানিয়েছেন রাজীববাবু ।