রায়গঞ্জ, 25 মে: "বড় হয়ে নার্স হওয়ার ইচ্ছে ছিল মেয়ের। কিন্তু সেই ইচ্ছে আর পূরণ হল না।" করুণঘন কণ্ঠে আক্ষেপ কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটার গাঙ্গোয়া গ্রামের নিহত মেয়েটির মায়ের। মৃত ওই ছাত্রীর ফল প্রকাশের পর গ্রামজুড়ে হতাশের চিত্র। শুধু সমাধির নীচে শায়িত রয়েছে সেই নাবলিকার মৃতদেহ। মেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করলেও আনন্দ এবং উচ্ছ্বাস নেই পরিবারের মধ্যে ৷ রয়েছে শুধু বিষাদের ছাপ। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে সে নার্স হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক পাশ করলেও সেই নার্স হওয়া তার হল না।
বুধবার প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল আর সেখানে 243 নম্বর পেয়ে পাশ করেছে কালিয়াগঞ্জের গাঙ্গোয়া গ্রামের নাবালিকা ছাত্রী। উচ্চমাধ্যমিকে ওই মৃত নাবালিকা বাংলা 46, ইংরেজি 50, এডুকেশন 50, ইতিহাস 45, দর্শন বিষয়ে 46 ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে 51 পেয়েছে। 2021 সালে মাধ্যমিকে ওই নাবালিকার প্রাপ্ত নম্বর 442 ৷ বাংলায় পেয়েছিল 65, ইংরেজি 62, অংকে 64, ভৌত বিজ্ঞানে 60, জীবন বিজ্ঞানে 63, ইতিহাসে 65 ও ভূগোলে 63 পেয়েছে।
উল্লেখ্য, গত 21 এপ্রিল কালিয়াগঞ্জ ব্লকের সাহেবঘাটা এন এন উচ্চবিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় রাজ্য তোলপাড় হয়েছিল। প্রথমের দিকে অভিযুক্তদের গ্রেফিতারের দাবিতে মৃত কিশোরীর পরিবার এবং স্থানীয় মানুষ দেহ আটকে রেখে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ বিক্ষোভ হটাতে প্রথমে লাঠিচার্জ এবং পড়ে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে দেহটি টেনে হিচড়ে সেখান থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসে। মৃত কিশোরীর দেহ এইভাবে উদ্ধার করা নিয়ে সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হন। ঘটনার দ্বিতীয় দিনেও উত্তাল হয়ে উঠে সাহেবঘাটা এলাকায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে স্থানীয় বাসিন্দা ইঁট ছুটতে থাকে। আন্দোলনকারীদের সামাল দিতে ওই দিনও লাঠিচার্জ এবং পড়ে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে তাদের। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে।