রায়গঞ্জ , 9 এপ্রিল : প্রতিবছরই এই সময় রায়গঞ্জের রাস্তায় জামাকাপড় সহ একাধিক সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসতেন শহরের হকাররা । লকডাউনের জেরে তা বন্ধ ৷ তাই বর্তমানে মাস্ক বিক্রি করছেন তাঁরা । তাঁদের বক্তব্য, প্রতি বছর এই সময়ে যা ব্যবসা করতেন তা দিয়ে আগামী 6 মাস চলে যেত । তবে বর্তমানে মুড়ি কেনার পয়সাও তাঁদের নেই । তাই রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন দর্জিদের তৈরি মাস্কই বিক্রি করছেন তাঁরা ।
মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়ে যায় চৈত্র সেল ৷ এই সময় রায়গঞ্জ শহরের বিবেকানন্দ মোড়, বাসস্ট্যান্ড, মোহনবাটি বিদ্রোহ মোড় এলাকায় 200 জন হকার বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে বসতেন । হকারদের দাবি , সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় 20 থেকে 30 হাজার লোক বাজারগুলিতে চৈত্র সেলের কেনাকাটা করতে আসতেন । একদম সকাল থেকেই বেচা-কেনা শুরু হয়ে যেত ৷ রাত পর্যন্ত চলত কেনাকাটা । তবে এবার পরিস্থিতি আলাদা । এই ভাইরাস মোকাবিলায় কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছে । বাজারহাট দোকান সব বন্ধ । ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া আর কিছুই সেভাবে মিলছে না ।
চৈত্র সেলের বাজার বন্ধ, মাস্ক ও গ্লাভস বিক্রি করছেন রায়গঞ্জের হকাররা - লকডাউন
লকডাউনের ফলে সব দোকান বন্ধ ৷ তাই প্রতিবারের মতো এবার আর রায়গঞ্জের রাস্তায় চৈত্র সেলের বাজার বসছে না । হকাররা বিক্রি করছেন মাস্ক ও গ্লাভস ।
![চৈত্র সেলের বাজার বন্ধ, মাস্ক ও গ্লাভস বিক্রি করছেন রায়গঞ্জের হকাররা raiganj](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/768-512-6724894-305-6724894-1586430350501.jpg)
এবার রায়গঞ্জের হকাররা চৈত্র সেলের কথা আর ভাবতে চাইছেন না ৷ দু'বেলা অন্ন জোগানোর জন্য বিক্রি করছেন মাস্ক ও গ্লাভস । যেসব হকাররা চৈত্র সেলের সময় জামা কাপড় বিক্রি করা নিয়ে দিনরাত ব্যস্ত থাকতেন, তাঁরাই বর্তমানে ফাঁকা বাজারে মাস্ক, গ্লাভস বিক্রি করে কোনওমতে সংসার চালানোর চেষ্টা করছেন ।
এবিষয়ে মাস্ক কিনতে আসা ক্রেতা সুদীপ্তা দাস বলেন , "প্রতিবছর এই এলাকাতে চৈত্র সেলের জন্য প্রচুর ভিড় থাকত । আমরা হাঁটাচলা ঠিকমতো করতে পারতাম না । এই বছর শুধুমাত্র মাস্ক , গ্লাভসের দোকান দেখতে পাচ্ছি । আর ওষুধের দোকান দেখতে পাচ্ছি । এছাড়া আর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না । খারাপ লাগছে এই ব্যবসায়ীদের জন্য । কিন্তু কোরোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করতে এই ক্ষতি সবাইকে মেনে নিতে হবে।"
বিবেকানন্দ মোড়ের এক বিক্রেতা দিলীপ সরকার বলেন , "প্রতিবছর এই সময় প্রচুর জামা কাপড়ের ব্যবসা করতাম । প্রচুর মানুষ এখানে ভিড় করত । তবে এই বছর শুধুমাত্র স্থানীয় কিছু জায়গা থেকে আনা মাস্ক এবং গ্লাভস বিক্রি করে সংসার চালাতে হচ্ছে । খুব কষ্ট হচ্ছে । "