পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

আমাদের দিকটা একটু দেখুন, মুখ্যমন্ত্রীকে আর্জি জেলার বেসরকারি বাস চালকদের

টানা দু মাস লকডাউনের কারণে রোজগার বন্ধ বেসরকারি বাস চালক ও খালাসিদের ৷ এদিকে বাসের ভাড়া না বাড়ালে বাস চালানো যাবে না বলে মালিক পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ ফলে সমস্যায় পড়েছে বাস চালক ও খালাসিরা ৷ এখন মালিক পক্ষ তাঁদের সাহায্য করলেও আর কত দিন তা করতে পারবে ? তাই পেটের দায়ে পুনরায় বাস চালানোর দাবি নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানালেন উত্তর দিনাজপুর জেলার বাস চালক ও খালাসিরা ৷

By

Published : May 30, 2020, 4:46 PM IST

Private bus drivers appealed to Chief minister to look after the matter of  fare of private buses
o

রায়গঞ্জ , 30 মে : মার্চ মাস থেকে চলছে দফায় দফায় লকডাউন ৷ ফলে প্রায় দুই মাস বন্ধ ছিল বাস ও অন্যান্য পরিবহণ ব্যবস্থা ৷ তবে কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে , 20 জন যাত্রী নিয়ে বাস চালানো যাবে ৷ কিন্তু এই ব্যবস্থায় খুশি নয় বেসরকারি বাস মালিকরা ৷ কারণ তাঁদের দাবি , 20 জন নিয়ে বাস চালালে খরচে পোষাবে না ৷ বাসের ভাড়া বাড়াতে হবে ৷ না হলে বেসরকারি বাস পরিষেবা চালু করা যাবে না ৷ এতে সমস্যায় পড়েছে বাসের চালক ও খালাসিরা ৷ কারণ এর মাধ্যমেই তাঁদের সংসার চলে ৷ কিন্তু বাসের ভাড়া না বাড়া পর্যন্ত মালিক পক্ষ বাস চালাতে রাজি নয় ৷ তাই তাঁরা যাতে আবার বাস চালাতে পারে সেই দাবি নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানালেন উত্তর দিনাজপুর জেলার বাস চালক ও খালাসিরা ৷

উত্তর দিনাজপুর জেলায় 31 টি রুটে বাস চলে । জেলায় বেসরকারি বাসের সংখ্যা প্রায় 210 টি । প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রায় 1000 জন শ্রমিক । এই লকডাউনের কারণে প্রত্যেকেরই রুজি-রুটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে । রাজা দত্ত নামে এক বাসের চালক বলেন , “দুই মাস ধরে বাড়িতে বসে আছি । এর পর কীভাবে সংসার চলবে জানি না ৷ আগামীদিনে কি হবে তা ভেবে পাচ্ছি না । তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাত জোড় করে অনুরোধ করছি , দ্রুত আমাদের দিকটা একটু দেখুন ।”

জেলার অন্যান্য বাস চালক ও খালাসিদের গলায় একই সুর ৷ তাঁরা বলছেন , “আমরা বাস চালাতে চাই । দুই মাস ধরে কোনও কাজ নেই । মালিক জানিয়েছে বাসের ভাড়া না বাড়ালে বাস চলানো যাবে না । এখন আমরা কী করব ? এবার তো না খেয়ে মরতে হবে । মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাত জোড় করে অনুরোধ আমাদের দিকটা একটু দেখুন । দুই মাস কোনও রোজগার নেই । এই মুহূর্তে কাজের খুব প্রযোজন । কাউন্সিলর ও মালিকেরা এখনও খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন । কিন্তু এভাবে কতদিন চলবে ? কতদিন তাঁরা আর সাহায্য করবে ? বিগত দুই মাসে লকডাউনের ফলে আমাদের অবস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে । মালিক পক্ষ স্পষ্ট জানিয়েছেন , ভাড়া না বাড়ালে বাস চালনো যাবে না । লকডাউনের আগে দিন গেলে যা রোজগার হত তাতে সংসার চলে যেত ৷ কোরোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে চর্তুথ দফার লকডাউন চলছে । আগামী 31 মে চর্তুথ দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে । তারপরে আবার লকডাউন চলবে কি না তা বলে যাচ্ছে না । কিন্তু যেভাবে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে , তাই পঞ্চম দফার লকডাউন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে । এরপরেও যদি লকডাউন চলে তাহলে না খেতে পেয়ে মারা যাব ৷”

অন্যদিকে , উত্তর দিনাজপুর বাস , মিনি বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্লাবন প্রামাণিক বলেন , “আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য পরিবহন দপ্তরকে একটি বাস চলতে কিলোমিটার পিছু কত খরচ সেটা হিসেব করে গাড়ি ভাড়া নির্ধারিত করার অনুরোধ করা হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে পকেট থেকে 2000-2500 টাকা আর্থিক ক্ষতি করে গাড়ি চালানোর ক্ষমতা বাস মালিকদের নেই ৷ তাই আমাদের দাবি না মানা হলে আমরা বাস চালাব না । ”

পাশাপাশি প্লাবনবাবু আরও বলেন , “আমাদের চালক ও খালাসিরা চরম সমস্যায় পড়েছে । আমরা আমাদের কর্মীদের পাশে আছি ৷ কিন্তু কতদিন তাঁদের পাশে থাকতে পারব তা বলতে পারছি না ৷ সরকার যে ভাড়া ঠিক করেছে , সেই ভাড়ায় বাস চালানো অসম্ভব ৷ ”

ABOUT THE AUTHOR

...view details