রায়গঞ্জ, 3 অগস্ট : একদিন মৃৎশিল্পীর ঘরের এক সামান্য গৃহবধূ হিসেবে নতুন জীবন শুরু করেছিলেন ৷ তার পর পরিবর্তনের নিয়মে তাঁর জীবনেও বদল এসেছে ৷ এখন তিনি রায়গঞ্জ শহরের একজন স্বনামধন্য মহিলা মৃৎশিল্পী ৷ রায়গঞ্জের কুমোরটুলি কাঞ্চনপল্লির বাসিন্দা অর্পিতা পাল ৷ স্বামী মৃৎশিল্পী গণেশ পাল মারা গিয়েছেন । এখন তাঁর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন স্ত্রী ৷
আসন্ন দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মৃৎশিল্পী অর্পিতা । ইতিমধ্যে তাঁর লোকনাথ মৃৎ শিল্পালয়ে চলছে দুর্গা-সহ আরও বহু প্রতিমা নির্মাণের কাজ । জানালেন, কোনও দিন ভাবেননি একদিন মাটির প্রতিমা গড়বেন, তুলির টান দেবেন প্রতিমার গায়ে ৷ একসময় স্বামী গণেশ পালকে সাহায্য করতেন ৷ স্বামী চাইলেও সেদিন এই বিষয়ে গুরুত্ব দেননি ৷ তবে তাঁর কাছেই প্রশিক্ষণ অর্পিতার । এখন বেশ কয়েকজন কর্মচারী নিয়ে স্বামীর এই প্রতিষ্ঠানকে সচল রাখার অদম্য প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন ৷
আরও পড়ুন : সাত বছরের নাবালকের তৎপরতায় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল ক্যানিং লোকাল
রায়গঞ্জ শহরের দেশবন্ধু পাড়ার প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী গণেশ পাল গুরুতর অসুস্থ হয়ে 2015 সালে মারা যান । আচমকা এই মৃত্যুতে প্রথমে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন তিনি ৷ সন্তান প্রতিপালন করে সংসার চালানো দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল । কিন্তু হার মানেননি অর্পিতা । স্বামীর হাত ধরে শেখানো প্রতিমা তৈরির কাজকে সম্বল করে লোকনাথ মৃৎ শিল্পালয়কে চালু রেখেছেন তিনি ।
তৈরি করে চলেছেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, মনসা থেকে দুর্গা, কালী প্রতিমা । রায়গঞ্জ শহরের বিগ বাজেটের পুজো কমিটি থেকে শুরু করে ভিন জেলাতেও পাড়ি দিচ্ছে তাঁর শিল্পালয়ে তৈরি প্রতিমা । গত বছর করোনা আবহে ব্যবসায় লাভ হয়নি তেমন । এ বছরের পুজো নিয়েও দ্বিধায় রয়েছেন তিনি ৷ তাও শুরু করে দিয়েছেন দুর্গা প্রতিমা নির্মাণের কাজ । একদিন স্বামীর হাত ধরে তুলিতে টান দিতে শিখেছিলেন, সেই শেখাই এখন তাঁর উপার্জনের একমাত্র পথ ।