রায়গঞ্জ, 17 মে : ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন। তারপরই এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির তালা ভেঙে সেখানে থাকতে শুরু করেছেন রায়গঞ্জের শ্রমিকরা । এর জেরে চিন্তায় রয়েছেন জেলার শিক্ষক সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, এতে স্কুলের নানা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, আসবাবপত্র নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । এলাকাবাসীর একাংশ স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে । এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, প্রশাসনের তৎপরতা ও সুনির্দিষ্ট পরিকাঠামোর অভাবেই এলাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ।
পরিকাঠামোর অভাব, তালা ভেঙে স্কুলের মধ্য়েই থাকছেন রায়গঞ্জের পরিযায়ী শ্রমিকরা - সমস্যায় রায়গঞ্জের পরিযায়ী শ্রমিকরা
আপাতত কোনও সরকারি কোয়ারানটিনে নেই পরিযায়ী শ্রমিকরা । সবাই পছন্দমতো স্কুলের ক্লাসরুমগুলির তালা ভেঙে সেখানেই থাকা শুরু করেছেন।
লকডাউনের জেরে ভিন রাজ্যেই আটকে পড়েছিলেন রায়গঞ্জের শ্রমিকরা । রোজগার বন্ধ হয়ে যায় । পরে খাবারের সমস্য়া দেখা দেয় । তাই প্রাণে বাঁচতে কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ সাইকেল, কেউ বা গাড়ি ভাড়া করে জেলায় ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু সরকারি কোয়ারানটিনে থাকছেন কেউ কেউ । এলাকার স্কুলগুলির তালা ভেঙে সেখানেই থাকা শুরু করেছেন শ্রমিকরা । এই ঘটনায় ইতিমধ্য়েই প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয়দের একাংশ । এবিষয়ে জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি গৌরাঙ্গ চৌহান বলেন, "পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি আমরা সমব্যথী। রাজ্য সরকার ভিনরাজ্য থেকে বিনা পয়সায় তাঁদের ট্রেনে করে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু আমাদের জেলায় প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক নানা রাজ্য থেকে এসে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির তালা ভেঙে আশ্রয় নিচ্ছে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সুষ্ঠু পদ্ধতির মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলির অধিগ্রহণ করা জরুরি। প্রতিটি বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও নথি রয়েছে। এছাড়াও চেয়ার, টেবিল, চেয়ার, বেঞ্চ সহ অন্যান্য আসবাবপত্র রয়েছে। তালা ভেঙে বিদ্যালয়গুলি দখল করার ফলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।"
নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু রায় চৌধুরি বলেন, "গ্রামের স্কুলগুলিতে শ্রমিকরা থাকছেন বলে, জানতে পেরেছি । বিষয়টি উদ্বেগের। স্কুলে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র রয়েছে। প্রতিমাসে চাল-আলু বিলি করতে হয় শিক্ষকদের। বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত। সকলের নিরাপত্তার জন্য শ্রমিকদের সরকারি কোয়ারানটিনে পাঠানো হোক।" অন্যদিকে বঙ্গীয় নব উন্মেষ প্রাথমিক শিক্ষক সংঘের সম্পাদক সুব্রত সরকার বলেন, "বিদ্যালয়গুলিতে পরিযায়ী শ্রমিক থাকছেন । বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত ।" ভিন রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের কোনও স্কুলে রাখা যাবে না। এমনই জানিয়েছেন, রায়গঞ্জ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক রাজু লামা। তিনি বলেন, " এবিষয়ে এখনও কোনও সরকারি নির্দেশিকা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে ।"