রায়গঞ্জ, 7 নভেম্বর: কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলির মধ্যে একটি হল বয়রা কালীমাতার পুজো ৷ 500 বছরেরও পুরনো এই পুজোর বিশেষত্ব হল মা কালীকে ভোগে দেওয়া হয় শোল, বোয়াল-সহ পাঁচরকমের মাছ ও পাঁচ রকমের সবজি । দীপাবলির আমাবস্যায় বয়রা কালীর পুজো হয় ৷ তবে বয়রা কালীমাতার পুজো শুরুর পিছনে রয়েছে লম্বা ইতিহাস ৷
কথিত আছে, শ্রীমতি নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা ও বজরা নিয়ে দূর দূরান্ত থেকে বানিজ্য করতে আসতেন বণিকেরা । নৌকা নোঙর করে নদীর ধারে জঙ্গলাকীর্ণ অরণ্যে বিশ্রাম নিতেন তাঁরা । শোনা যায়, এখানে দুটি নদী ছিল । একটির নাম রুহিতর এবং অপরটির নাম শ্রীমতি । এই দুটি নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা করে বাণিজ্য করতে আসতেন বণিকেরা । রুহিতর নদীটি এখন মজে গিয়েছে ও শ্রীমতি নদীটিরও প্রায় একই অবস্থা । এখানে জঙ্গলের ভিতর একটি ছোট ঘর ছিল । বর্তমানে সেই জায়গাটির নাম গুদরি বাজার । আগে ডাকাতদেরও আনাগোনা ছিল এখানে ৷ তখনই দেবী স্বপ্নাদেশ দেন কালীপুজো করার ৷ সেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে বয়রা গাছের তলায় প্রথম পুজো শুরু হয় । তবে কে বা কারা পুজো শুরু করেন তা কারও জানা নেই ৷
পরবর্তীতে কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দারা সেই জঙ্গল পরিষ্কার করে তৈরি করে বাঁশ ও মাটির মায়ের মন্দির । এরপর 1962 সালে তৈরি হয় দেবীর নতুন মন্দির, যা আজ বয়রা কালীমন্দির নামে বিখ্যাত । মায়ের মূর্তিও হয়েছে অষ্টধাতুর । মূলত আগের ঘরটিতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় গড়ে ওঠে দেবীর নতুন মন্দির । এরপর কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ আধিকারিক সুকুমার ঘোষ মন্দিরটি সংস্কার করেন । তারপর থেকে দেবীর অলৌকিক ক্ষমতার কথা লোকমুখে ছড়িয়ে পরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ।