পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

কর্মহীন দুঃস্থ পরিবারের পাশে ব্লক প্রশাসন, সাহায্য ব্যবসায়ী সমিতি, তৃণমূলেরও - হেমতাবাদ ব্লক প্রশাসন

চলছে কার্যত লকডাউন ৷ কাজ নেই দুই ছেলের, বৃদ্ধা নিজেও অসুস্থ ৷ তাই তিনজনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আত্মহত্যা করবেন ৷ খবর পেয়ে পৌঁছে গিয়েছে হেমতাবাদ ব্লক প্রশাসন, ব্যবসায়ী সমিতি, স্থানীয় তৃণমূল কমিটি ৷

কর্মহীন অসহায় পরিবার
কর্মহীন অসহায় পরিবার

By

Published : May 24, 2021, 3:49 PM IST

হেমতাবাদ (রায়গঞ্জ) ২৪ মে : চলছে কার্যত লকডাউন ৷ নেই কাজ, বন্ধ হয়ে গিয়েছে অর্থ উপার্জনের পথ । এই পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের মুখে কী ভাবে দুবেলা দুমুঠো ভাত তুলে দেবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন দিনমজুর প্রদীপ মণ্ডল ৷ উত্তর দিনাজপুর জেলার দক্ষিণ হেমতাবাদের দিন আনি দিন খাই পরিবারের তিনি ছাড়াও মা ও ভাই রয়েছেন ।

সংসার প্রতিপালনের কোনও উপায় না পেয়ে পরিবার নিয়ে আত্মহত্যার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন প্রদীপ মণ্ডল, তাঁর ভাই ধীরেন্দ্রনাথ মণ্ডল আর তাঁদের বৃদ্ধা মা রেবতী মণ্ডল । এই খবর পেয়ে অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে হেমতাবাদ ব্লক প্রশাসন । সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে এগিয়ে এসেছে ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ।

দুঃস্থ পরিবারের পাশে ব্লক প্রশাসন

কিছুদিন আগেই উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকের চৈনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাডোমা গ্রামে আগুন লাগিয়ে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের আত্মহত্যা হেমতাবাদ ব্লক প্রশাসনকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল । সেই হেমতাবাদ ব্লকের দক্ষিণ হেমতাবাদ গ্রামের রেবতী মণ্ডলের পরিবার চরম অভাবের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। একসময় অসহায় বৃদ্ধা পরিচারিকার কাজ করতেন ৷ অসুস্থতার কারণে এখন আর পারেন না ৷ দুই ছেলে লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে । তিনি নিজেও অসুস্থ। বার্ধক্যভাতা আর রেশন পেয়ে থাকেন । রেবতীদেবী যে মাসিক একহাজার টাকা ভাতা পান, তা ওষুধ কিনতেই খরচ হয়ে যায় । ছেলেরা দিনমজুরের কাজ করে অর্থ উপার্জন করতেন । বর্তমানে তাও বন্ধ । তাঁদের বসবাসের একটি মাত্র ঘর । জরাজীর্ণ সেই ঘরের অবস্থাও খারাপ । বৃষ্টিতে ঘরে জল পড়ে, প্রায় বসে থেকে কাটাতে হয় রাত । সরকারি প্রকল্পে ঘরের জন্য একাধিকবার আবেদন করেছেন কিন্তু ঘর জোটেনি। ফলে একচিলতে কুঁড়েঘরেই গাদাগাদি করে দিন গুজরান করতে হচ্ছে তাঁদের ।
প্রদীপের কথায়, ‘‘বেঁচে থাকা এবং মরে যাওয়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁরা । মাকে বাঁচিয়ে রাখতে ওষুধ কিনতেই প্রচুর অর্থ খরচ হয়ে যাচ্ছে । ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন ৷ এভাবে বেঁচে থাকা হয়তো আর সম্ভব হবে না, তাই আমরা সপরিবারে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি ।"

আরও পড়ুন : যশের প্রস্তুতি পর্যালোচনায় মমতা-সহ 3 মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শুরু শাহের

এই অসহায় পরিবারের সমস্যার কথা নজরে আসে হেমতাবাদ ব্লক প্রশাসনের । হেমতাবাদ বিডিও লক্ষ্মীকান্ত রায়ের নির্দেশে সরকারি সাহায্য নিয়ে ব্লকের আধিকারিকেরা রেবতীদেবীর বাড়িতে হাজির হন । সরকারি ত্রাণসামগ্রী ছাড়াও নগদ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে বৃদ্ধার হাতে । সরকারি প্রকল্পে ঘর তৈরির আশ্বাস-সহ তাঁর দুই ছেলেকেই ১০০ দিনের প্রকল্পে যুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও ।
পাশাপাশি রবিবার দুপুরে রেবতীদেবীর বাড়ি যান হেমতাবাদ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সদস্যা ও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নেতৃত্ব । ওই পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী ও আর্থিক অনুদান তুলে দেওয়া হয় । পাশাপাশি বিপদে পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয় ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details