রায়গঞ্জ, 1 সেপ্টেম্বর : "লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন"- প্রাচীন এই প্রবাদ কারও অজানা নয় । গৌরী সেন বলে আদতে কেউ ছিলেন কি না সেই সম্পর্কে এখনও স্পষ্ট ধারণা কারও নেই । তবে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের সুদর্শনপুরের সেনবাড়ির পুজোর সঙ্গে একজন গৌরী সেনের নাম জড়িয়ে রয়েছে । কয়েকশো বছর আগে যাঁর বাংলাদেশে জমিদারি ছিল । তাঁদের পরিবারিক পুজো হলেও গ্রামের অনেকে এই চারদিন ভোগ খেতে আসতেন । প্রতিটি পুজো বা অন্যান্য যে অনুষ্ঠান পরিবারের তরফে করা হয় সেখানে নাম নিতে হয় গৌরী সেনের । তবে এই গৌরী সেন প্রবাদের সেই গৌরী সেন ছিলেন কিনা সে সম্পর্কে স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি বর্তমান প্রজন্মের কেউই । বাংলাদেশের যশোর এলাকার যেখানে তাঁদের বাড়ি ছিল তার বাইরে খোদাই করে গৌরী সেনের নাম লেখা থাকত । পরে মধুমতি নদীর ভাঙনে তা তলিয়ে যায় ।
রায়গঞ্জের সেনবাড়ির পুজো দীর্ঘ দিনের পুরোনো । সময়টা পুরোপুরিভাবে না বলতে পারলেও প্রায় 500 বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে বলেই জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা । বিভিন্ন সময়ে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হলেও কোনওদিন এই পুজো বন্ধ হয়নি বলেই জানিয়েছেন তাঁরা । তাঁদের বক্তব্য, বাংলাদেশের যশোর এলাকায় যেখানে পুজো হত সেখানে তাঁদের জমিদারি এস্টেট ছিল । পরে সেই জমিদারি বাড়তে বাড়তে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে । তবে দেশভাগের আগেই সেনবাড়ির অনেকে রায়গঞ্জে চলে আসে ৷ রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড় থেকে সুদর্শনপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় তাঁরা অনেকটাই জমি কিনে নিয়েছিলেন । সেখানেই পরে ব্যবসা শুরু করেন সেন পরিবারের সদস্যরা । যদিও ব্যবসা এখানে করলেও বাংলাদেশে গিয়ে প্রতি বছর পুজো করে আসতেন সেনবাড়ির সদস্যরা । তবে 1952 সালের পর থেকে রায়গঞ্জ শহরে পাকাপাকি ভাবে শুরু হয় এই দুর্গাপুজো ৷