রায়গঞ্জ, 18 অক্টোবর : শারদোৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ার আগে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে শুরু হল এক অন্য উৎসব৷ উত্তরবঙ্গের মৎস্য শিকারীদের উৎসব। কেউ এসেছেন প্রায় 187 কিলোমিটার দূরের শিলিগুড়ি থেকে, কেউ আবার দক্ষিণ দিনাজপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় হিলি কিংবা পাশের জেলা মালদা থেকে। মাছ ধরার নেশায় রাত জেগে গাড়ি চালিয়ে ভোর ভোর রায়গঞ্জের উকিল পাড়ার সৎসঙ্গ স্কুলের পিছনের পুকুরের ধারে ভিড় জমান জনা তিরিশ মৎস্য শিকারী।
"মৎস্য মারিব খাইব সুখে", টিকিট কেটে মাছ শিকার রায়গঞ্জে - জেলার খবর
উত্তরবঙ্গের মৎস্য শিকারীদের উৎসব রায়গঞ্জে৷ বছর 20 পর এই আয়োজন৷ উকিল পাড়ার পুকুরে মাছ ধরার উৎসবে সামিল বিভিন্ন জেলার জনা 30 মৎস্য-শিকারী৷ কেউ পেলেন রুই-কাতলা, কেউ আড়াই কেজির মৃগেল৷
রায়গঞ্জের উকিল পাড়ার কয়েকজন যুবক বিভিন্ন সময় ভিনরাজ্য বা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মাছ ধরতে যান৷ অনেক সময়ই নিজের জেলার থেকে বাইরে গিয়ে মাছ ধরার সময় রায়গঞ্জে এমন ব্যবস্থা করার দাবি তাঁদের কাছে বেশ কয়েকবার উঠে এসেছিল। তবে বহুবার চেষ্টা করেও এতদিন সেই আয়োজন করা যায়নি৷ তবে এ বছর তাঁদের পুকুরে যথেষ্ট পরিমাণে মাছ হওয়ায় এবারে তাঁরা এই অভিনব উৎসব আয়োজনের ব্যবস্থা করেন৷ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বানিয়ে বিভিন্ন এলাকার মৎস্যশিকারীদের নাম যোগ করা হয়৷ পুকুরের বর্ণনা এবং কী কী মাছ সেখানে রয়েছে তাও জানানো হয়৷ এতেই ভালো সাড়া মেলে৷ একে একে ওই পুকুরে মাছ ধরার জন্য অনেকেই রাজি হতে থাকেন। এরপর উদ্যোক্তারা 3000 টাকা টিকিটের কথা বললে তাতেও একবারেই রাজি হয়ে যান সকলে। শেষে দিন চূড়ান্ত হয় 17 অক্টোবর৷ এদিন সকলকে মাছ ধরতে আসার অনুরোধ করা হয়। "মৎস্য মারিব খাইব সুখে" আওয়াজ তুলে এরপরেই সকলে মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে হাজির রায়গঞ্জের উকিল পাড়ার পুকুরে৷ ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হওয়া এই মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় অনেকেই ছোটো-বড় সাইজ়ের মাছ পেয়েছেন। অনেকে আবার আড়াই কেজি ওজনের মৃগেলও পেয়েছেন। উদ্যোক্তাদের দাবি, রায়গঞ্জে প্রায় কুড়ি বছর পর এই ধরনের মৎস্য শিকারের ব্যবস্থা করা হল।
হিলি থেকে আসা এক মৎস্যশিকারী মৃন্ময় সরকার বলেন, "মাছ ধরা আমার নেশা। সারা বছর অন্য কোনও ধরনের নেশা করি না। তবে শুধু মাছ ধরার জন্য যেখানে ডাক পাই সেখানেই চলে যাই। এই পুকুরে সকাল থেকে বসে রয়েছি। এখনও পর্যন্ত একটা আড়াই কেজি সাইজ়ের মাছ পেয়েছি ঠিকই, আশা করছি দিন যত বাড়বে আরও ভালো মাছ পাব।" উদ্যোক্তাদের তরফে সঞ্জয় গুপ্ত বলেন, " বহু বছর পর এই ধরনের আয়োজন করেছি। আমরা নিজেরাও মাছ শিকার করতে বিভিন্ন জায়গায় যাই। সেখান থেকে বহুবার আমাদের কাছে মাছ শিকারের ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছিল। এবারে আমরা সেই ব্যবস্থাই করেছি। অনেকেই সকাল থেকে শুরু হওয়া এই মাছ ধরার আয়োজনে উপস্থিত হয়েছেন। তাঁরা যথেষ্ট ভালো সাড়া পাচ্ছেন। সকলেই খুশি৷"