রায়গঞ্জ, 5 অক্টোবর : আজ থেকে প্রায় পাঁচশো বছর আগে বাংলাদেশের বণিকেরা বাণিজ্য করতে এসে তাঁদের নৌকা বা বজরা নোঙর করতেন কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে । কথিত আছে, সেই বণিক সমাজের এক সওদাগর দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে কুলিক নদীর ধারে তৎকালীন রাইগঞ্জ বন্দরে প্রচলন করেছিলেন দুর্গাপুজোর । সেই পুজো আজ রায়গঞ্জবাসীর কাছে রাইগঞ্জ আদি সর্বজনীন দুর্গাপুজো বলে পরিচিত ।
অধুনা বাংলাদেশের বণিকরা বড় বড় নৌকা আর বজরা নিয়ে বাণিজ্য করতে এসে নোঙর করতেন রায়গঞ্জের বন্দর কুলিক নদীর ঘাটে । কথিত আছে তাঁরাই এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন । এরপর কুলিক নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে । দেশ ভাগ হয়ে এপার বাংলা ওপার বাংলা হয়েছে । এখন আর কুলিকের জলে ভাসে না বাংলাদেশের বণিকদের বজরা । আসেন না বাংলাদেশের বণিকরাও । কিন্তু বন্ধ হয়ে যায়নি বণিকদের প্রচলন করা সেই দুর্গাপুজো ৷
আরও পড়ুন : Durga Puja Special : মা দুর্গার নির্দেশেই 300 বছর আগে পুজো শুরু হয় মিত্র জমিদার বাড়িতে
রাইগঞ্জ আদি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা রূপেশ সাহা জানিয়েছেন, তাঁদের সাত পূর্বপুরুষও জানাতে পারেননি এই পুজোর বয়স কত । তবে এখানকার দেবী দুর্গা খুবই জাগ্রত ৷ নিয়মনিষ্ঠা করে পুজো করা হয় এখানে । পাঁচশো বছরের পুরোনো সেই একই কাঠামোতে আজও দেবীর প্রতিমা নির্মাণ করা হয়ে থাকে । মহাষ্টমীতে হাজার হাজার ভোগের ডালা পড়ে এই মন্দিরে । তবে এই পুজোর প্রচলন নিয়ে নানা মত রয়েছে । কেউ বলেন বাংলাদেশের বণিকরা বাণিজ্য করতে এসে রায়গঞ্জ কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে নোঙর করে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন, আবার কেউ বলেন, বাংলাদেশের কোনও জমিদার এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন ।
রায়গঞ্জ শহর তথা উত্তর দিনাজপুর জেলার মানুষের কাছে এই পুজোর আলাদা গুরুত্ব আছে ৷ দূর দূরান্ত থেকে পূণ্যার্থীরা এখানে ভোগ আর অঞ্জলি দিতে আসেন । এখানকার ঠাকুর জাগ্রত বলে মনে করা হয় ৷ মানত করলে নাকি তা পূরণ হয় । তাই প্রতি বছর এই পুজোয় নামে মানুষের ঢল ৷