পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

হাতে বাঁশি-পায়ে টোটোর নিয়ন্ত্রণ! স্বমহিমায় কীর্তিমান চিত্ত সিং, রইল ভিডিয়ো প্রতিবেদন

Unmatched Skills of Raiganj Toto Driver : পা দিয়ে টোটো চালিয়ে নজর কেড়েছেন রায়গঞ্জের চিত্ত সিং ৷ হাত ব্যবহার করেন বাঁশি বাজাতে ৷ বাঁশির সুর শুনো মোহিত যাত্রীরা উপভোগ করেন টোটো সফর ৷

Etv Bharat
হাতে বাঁশি-পায়ে টোটোর নিয়ন্ত্রণ নজর কাড়লেন চিত্ত সিং

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 11, 2023, 10:23 AM IST

হাতে বাঁশি-পায়ে টোটোর নিয়ন্ত্রণ নজর কাড়লেন চিত্ত সিং

রায়গঞ্জ, 11 ডিসেম্বর: কৃষ্ণের বাঁশির সুরে বিমোহিত হয়ে তাঁর প্রেমে পড়েছিলেন রাধা। জার্মানির বিখ্যাত হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার গল্পও জানে সারা পৃথিবী। পাশাপাশি, বিখ্যাত গীতিকার মনিরুজ্জামান মনিরের 'সখি কারে ডাকে ঐ বাঁশি নাম ধরিয়া, তুই দে না বলিয়া' আজও সবার কানে বাজে। বাঁশি নিয়ে এমন হাজারো কবিতা, গান, প্রেম উপাখ্যান, গল্প লিখেছেন বিশ্বের নামীদামী লেখকরা। তবে আপনাদের পরিচয় করাবো এক অভিনব বাঁশিওয়ালার সঙ্গে ৷

রায়গঞ্জ ব্লকের গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ইটাল গ্রামের বাসিন্দা চিত্ত সিং 'বাঁশিওয়ালা কাকু' নামেই বেশি পরিচিত। পেশায় টোটো চালক। ষাটোর্ধ্ব এই মানুষটি এখন সকলের চোখের মণি। তার বিশেষত্ব হল তিনি পা দিয়ে টোটো চালান। আর হাত দিয়ে বাজান বাঁশি। মানুষের পছন্দ মতো ভিন্ন ভিন্ন সুর তোলেন বাঁশিতে। সকলে টোটো সফর করতে করতে তা উপভোগও করেন। শুধু বাঁশি নয়। সমান তালে দোতারাও বাজান তিনি। আর এভাবেই কেটে যায় জীবন।

চিত্ত বাবু জানান, পা দিয়ে টোটো চালিয়ে তিনি অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছে যান। কখনও ঝুঁকি মনে হয় না। এভাবে তিনি প্রায় কয়েক বছর ধরে মানুষকে বিনোদন দিয়ে চলেছেন। তিনি জানালেন, মনে অনেক ব্যাথা। সেই কষ্ট লাঘব করতে বাঁশিই একমাত্র ভরসা। খানিকটা আক্ষেপের সুরেই বললেন, "বাঁশির জন্যই বেঁচে আছি, আমি একা, আমায় কে দেখবে ভগবান ছাড়া?"

রোজ ভোর সাড়ে 3টের সময় উঠে টোটো নিয়ে বেরিয়ে পরেন তিনি। বাড়ি থেকে বাঁশি বাজাতে বাজাতে চলেন গন্তব্যে। আলো আঁধারি আকাশ, গ্রামের মেঠো পথ। তার মাঝে বাঁশির সুরের মূর্ছনা। এ যেন এক অনন্য অনুভূতি। তার বাঁশির সুরেই ঘুম ভাঙে গ্রামের মানুষের। চিত্ত বাবুর বাঁশির আওয়াজ শুনতেই মন যেন চাঙ্গা হয়ে ওঠে গ্রামবাসীদের। তাঁর বাঁশির আওয়াজ শুনতে অনেকেই টোটোয় চাপেন। কেউ কেউ আবার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন তাঁর জন্য।

গ্রামবাসীরা জানান, প্রায় দু-আড়াই বছর ধরে তাঁরা এই টোটোতে যাতায়াত করেন। পা দিয়ে টোটো চালানোয় কখনও ভয় পান না যাত্রীরা। বরং তাঁরা এই অভিনব টোটো ভ্রমণকে উপভোগ করেন। চিত্ত সিংহের এমন টোটো চালানো দেখে হতবাক অন্যান্য টোটো চালকরাও। তাঁরাও চিত্ত বাবুর বাঁশির সুর শুনে বিভোর। সত্যি, চিত্ত সিংহের এই কর্মকাণ্ড নজির সৃষ্টি করেছে। তার এই সুর হয়ত একদিন পেরিয়ে যাবে সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার।

আরও পড়ুন:

  1. পেটেন্টের অপেক্ষায় জাতীয়স্তরের বাঁশি বাদকের তৈরি পিভিসি পাইপের বাঁশি
  2. স্টেশন চত্বরেই থমকে বাঁশিওয়ালা অনিল বিশ্বাসের প্রতিভা
  3. আশ্চর্য প্রতিভা! 18 বছর ধরে নাক দিয়ে বাঁশি বাজিয়ে তাক লাগাচ্ছেন চিত্তরঞ্জন

ABOUT THE AUTHOR

...view details