পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

দরগায় ধ্বজা উড়িয়ে শুরু হয় দশমীর মেলা, চূড়ামন রাজবাড়ির পুজোয় সম্প্রীতির বার্তা - ইটাহারের চুড়ামন রাজবাড়িতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন

ষোড়শ শতকে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন রাজা জগৎ বল্লভ রায়চৌধুরি ৷ জাঁকজমকভাবে, যাবতীয় রীতিনীতি মেনে পুজোয় মেতে উঠত গ্রামের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে ৷

Breaking News

By

Published : Oct 12, 2020, 7:38 PM IST

রায়গঞ্জ, 12 অক্টোবর :গ্রামে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের বাস ৷ রাজবাড়ির পুরানো শিবমন্দিরের পাশেই রয়েছে পীরের দরগা ৷ তাই দশমীর মেলার সূচনা করা হয় পীরের দরগার ধ্বজা উড়িয়ে ৷ গ্রামেরই কোনও মুসলিম ছেলেকে দিয়ে এই ধ্বজা ওড়ানো হয় ৷ যুগ যুগ ধরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকের চূড়ামন রাজবাড়িতে এই নিয়ম চলে আসছে ৷ প্রাচীন এই পুজোর অনেক নিয়মেই বদল এসেছে ৷ পুরানো মন্দির, ভেঙে পড়া ঠাকুদালান থেকে পুজো উঠে এসেছে নতুন মন্দিরে ৷ কিন্তু চূড়ামনের রায়চৌধুরি পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম দশমীর মেলার এই নিয়মে পরিবর্তন আনেনি ৷

ষোড়শ শতকে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন রাজা জগৎ বল্লভ রায়চৌধুরি ৷ জাঁকজমকভাবে, যাবতীয় রীতি নীতি মেনে পুজোয় মেতে উঠত গ্রামের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে ৷ কালের নিয়মে সেই জৌলুসে ভাঁটা পড়েছে ৷ চূড়ামন রাজবাড়ি এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত ৷ মন্দির ও ঠাকুরদালান চলে গেছে মরাসুঁই নদীর গর্ভে ৷ তবে পুজো বন্ধ করেনি রাজবাড়ির বর্তমান প্রজন্ম ৷ গ্রামবাসীদের সাহায্যে নতুন মন্দির গড়ে মায়ের পুজো হচ্ছে ৷ রাজবাড়ীর নিয়ম অনুযায়ী দশমীর দিন মন্দির প্রাঙ্গণে বসে মেলা ৷ যার সূচনা হয় পীরবাবার দরগায় ধ্বজা উড়িয়ে ৷ ধ্বজা ওড়ান কোন মুসলিম ধর্মালম্বী মানুষ । রাজ্য বা রাজপাট না থাকলেও এখনও দশমীর দিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই ছবি দেখা যায় । শিবমন্দিরের পাশাপাশি পীরের দরগাও পুজোর সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয় ৷

ধ্বংসস্তুপে পরিণত রাজবাড়ি

রাজপরিবারের দশম পুরুষ কৌশিক রায়চৌধুরি বর্তমানে পুজোর দেখভাল করেন । তিনি বলেছেন, "আমাদের পুজো অত্যন্ত প্রাচীন ৷ এখনও পর্যন্ত নিয়ম মেনে পুজো চলে আসছে । স্থানীয় গ্রামবাসীরা আমাদের এই বিষয়ে অনেক সাহায্য করেন । আমরাও যতটা সম্ভব পুজোকে একই মর্যাদায় নিয়ম-নীতি মেনে পরিচালনা করার চেষ্টা করি । তবে দশমীর দিন আমরা হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি কথা চিন্তা করে ধ্বজা ওড়ানো হয় । যা কোনও মুসলিম ভাইয়ের হাতেই ওড়ানো হয় ।"

নতুন তৈরি এই মন্দিরেই এখন হয় পুজো

স্থানীয় বাসিন্দা তথা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শুভাশিস সরকার বলেন, "ছোট থেকেই দেখে আসছি দশমীর দিন দরগা থেকে ধ্বজা ওড়ানো হয় । আমার ধারণা রাজবাড়ির সেই সময়কার সদস্যরা চাইতেন যেন হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি বজায় থাকে ।" স্থানীয় বাসিন্দা মর্তুজ আলি বলেছেন, "ছোট থেকেই এটা দেখে আসছি ৷ হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি বজায় রাখতেই সম্ভবত এই রীতি চালু করেছিলেন তৎকালীন রাজা ।"

চুড়ামন রাজবাড়ির পুজোয় সম্প্রীতির বার্তা

ABOUT THE AUTHOR

...view details