আরও সুদৃঢ় হল মূক ও বধির হোমের সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন রায়গঞ্জ, 15 নভেম্বর:ওরা কেউ কথা বলতে পারে না, কেউ আবার শুনতে পায় না। সারা বছর হোমের চার দেওয়ালে বাঁধা থাকে ওদের জীবন। এই বদ্ধ জীবনের মাঝে ভাইফোঁটা উৎসবে মেতে উঠল রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় অবস্থিত সূর্যোদয় হোমের আবাসিক ভাই-বোনেরা।
'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা'- এই মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে আজ সারা বাংলাজুড়ে পালিত ভাইফোঁটা উৎসব। ঘরে ঘরে ভাই-বোনেদের সৌভ্রাতৃত্বের চিত্র। এরইমাঝে এক অন্য ছবি ধরা পড়ল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় অবস্থিত সূর্যোদয় মূক ও বধির হোমে। রাজ্য সমাজকল্যণ দফতর পরিচালিত এই হোমে বর্তমানে আবাসিকের সংখ্যা 26। যার মধ্য 15 জন বালক ও 11 জন বালিকা। এরা কেউ কথা বলতে পারে না ও কানেও শুনতে পায় না।
সারাবছর পরিবার থেকে অনেক দূরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে নিয়েই দিন কাটে তাদের। হোমের চার দেওয়ালে বদ্ধ জীবনের মাঝে প্রতিবছর এই দিনটায় ওরা মনখুলে আনন্দ করে। সেটি হল ভাইফোঁটা উৎসব। আবাসিকদের অনেকের পরিবার বলতে কেউই নেই কারও আবার থেকেও নেই। ভাইফোঁটা উৎসবে চারিদিকে যখন মঙ্গল ধ্বনির মধ্যে দিয়ে ঘরে ঘরে ভাইদের মঙ্গল কামনায় ব্রতী দিদি ও বোনেরা। তখন তারাই বা বাদ যায় কেন। তাই হোম কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বালক আবাসনে ভাইফোঁটা উৎসবের আয়োজন করা হয়। যেখানে সকাল সকাল সেজেগুজে হোমের মেয়েরা আবাসিক ভাইদের কপালে ফোঁটা একে দীর্ঘায়ু কামনা করে।
চলে মিষ্টিমুখ। ভাইরাও দিদি বা বোনেদের থেকে ফোঁটা পেয়ে বেজায় খুশি। হোমের আধিকারিক পার্থসারথী দাস জানান, প্রতিবছরই মানবিক দিক থেকে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ছেলেমেয়েরা উৎসবে অংশ নিয়ে বেশ উৎসাহিত। সকাল সকাল আবাসিক বোনেরা ভাইদের ফোঁটা দিয়েছে। যার জেরে তাদের মধ্যে আরও সুদৃঢ় হয়েছে সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন। তবে ভাইফোঁটা উৎসব উপলক্ষে এদিন হোমের মেন্যুতেও স্পেশালিটি ছিল। ছিল মাছ, মাংস, ভাত, চাটনি, মিষ্টি, নিমকি, নাড়ু আরও কত কী।
আরও পড়ুন:
- ভাইফোঁটায় মিশে গেল বিশ্বকাপ, মিষ্টির সম্ভারে থাবা বসাল ক্রিকেট-ফিভার
- এই গ্রামে হয় না 'ভাইফোঁটা', চল নেই মূর্তি পুজোরও; রইল বাঁকুড়ার অজনা কাহিনি