উত্তর দিনাজপুর, 5 সেপ্টেম্বর: সংসার চালাতে প্রয়াত স্বামীর পেশাকে আঁকড়ে জীবনযাপন ৷ দীর্ঘ 10 বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করে চলেছেন রায়গঞ্জের কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী অর্পিতা পাল । একা হাতে সংসারের সমস্ত কাজ সামলে তারই মাঝে দশভুজার মতো দেবী দুর্গার মূর্তি গড়ার কাজ করে চলেছেন তিনি (Durga Puja 2022) ।
সামনে দুর্গাপুজো ৷ তার আগে এখন চুড়ান্ত ব্যস্ততা কুমোর পাড়ায় । বিগত দু'বছর করোনার কারণে ভাটা পড়েছিল মৃৎশিল্পীদের জীবনে ৷ তেমনভাবে উপার্জন করতে পারেননি, তাই ভালো রোজগারের আশায় এবার বুক বাঁধছেন রায়গঞ্জের কাঞ্চনপল্লীর কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী অর্পিতা পাল (Arpita Paul) ।
সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করাই এখন প্রধান লক্ষ্য অর্পিতার কথায় আছে যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে । রায়গঞ্জের কাঞ্চনপল্লীর কুমোরটুলির বাসিন্দা মৃৎশিল্পী গণেশ পালের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল অর্পিতা দেবীর । বিয়ের কয়েক বছর পরেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় স্বামীর । ছোট্ট দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে আচমকা এমন অবস্থায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে অর্পিতার । স্বামীর জীবদ্দশায় তাঁর সঙ্গে একটু-আধটু মৃৎশিল্পের কাজ শিখেছিলেন তিনি ৷ কীভাবে মৃন্ময়ীর অপরূপ মূর্তি তৈরি করতেন স্বামী গণেশ পাল বসে দেখতেন অর্পিতা । পরবর্তীকালে সেই অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগান তিনি ।
শয়ে শয়ে মূর্তি তৈরি করে চলেছেন অর্পিতা পাল নিজে হাতে কাদামাটি ছেনে খড়ের কাঠামোর উপরে দেওয়া শুরু করেন মাটির প্রলেপ । হাতে তুলে নেন রং-তুলি । প্রথম প্রথম অনেক ঝড়-ঝাপটা সহ্য করলেও ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে তাঁর মৃৎশিল্পীর সত্ত্বা । স্বামী মারা যাওয়ার পর প্রায় 10 বছর ধরে শ'য়ে শ'য়ে মূর্তি তৈরি করে চলেছেন অর্পিতা । আর এখন রায়গঞ্জের কুমোরটুলির একজন স্বনামধন্য মৃৎশিল্পী হিসেবে প্রসিদ্ধ অর্পিতা পাল । বড় বড় পুজো কমিটির প্রচুর প্রতিমার বায়না আসে তাঁর কাছে । রায়গঞ্জের বাইরেও যায় অর্পিতার তৈরি প্রতিমা ।
রায়গঞ্জের কুমোরটুলির একজন স্বনামধন্য মৃৎশিল্পী হিসেবে পরিচিত তিনি আরও পড়ুন:বায়না থাকলেও মাটির অভাব; পুজোর আগে সমস্যায় রায়গঞ্জের পটুয়া পাড়ার শিল্পীরা
10 বছর ধরে দুর্গার মূর্তি গড়ছেন মৃৎশিল্পী অর্পিতা পাল অর্পিতা একজন সহকারী শিল্পীকেও রেখেছেন সহায়তার জন্য । প্রয়াত স্বামী গণেশ পালের শিল্প সত্ত্বাকেই বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি । সংসারের পাশাপাশি সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে একা হাতে লড়ে যাচ্ছেন রায়গঞ্জের কুমোরটুলির 'দশভুজা' অর্পিতা পাল (Arpita Paul from Raiganj owns her husbands profession after his death) ।