রায়গঞ্জ, 12 সেপ্টেম্বর : মাত্র তিন মাস আগে জীবনটা অন্যরকম ছিল রায়গঞ্জের খলসি এলাকার বাসিন্দা 32 বছরের যুবক শুভঙ্কর রায়ের । সাত বছরের ছেলে, স্ত্রী এবং বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে আগামী জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি । কিন্তু, আচমকাই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল । দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা চলছিল তাঁর । পরীক্ষা করে জানতে পারেন তাঁর দুটো কিডনিই বিকল হয়ে গিয়েছে । একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ায় সংসারের একমাত্র রোজগেরে শুভঙ্কর পুরোপুরিভাবে বাড়িতে বসে যেতে বাধ্য হন । তার উপর পাহাড়প্রমাণ চিকিৎসার খরচ । প্রতিবেশীরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও কুলানো যাচ্ছে না চিকিৎসার খরচ ।
বিকল দু'টি কিডনিই, সাহায্য চাইছেন পরিবার ও প্রতিবেশীরা - বিকল দু'টি কিডনি
দু'টি কিডনিই বিকল হয়ে যাওয়ায় বিপাকে রায়গঞ্জের খলসি এলাকার শুভঙ্কর রায় । সাহায্যের আবেদন করেন তিনি ।
খুব ছোট বয়স থেকেই গ্রিলের কারখানায় কাজ শুরু করেন শুভঙ্কর । আট বছর আগে রায়গঞ্জের মেয়ে শ্যামলী রায়কে বিয়ে করেন তিনি । তাঁদের সাত বছরের একটি ছেলেও রয়েছে । সবই ঠিক চলছিল । কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরেই অসম্ভব পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন তিনি । শেষ পর্যন্ত রায়গঞ্জে ডাক্তার দেখান শুভঙ্কর । বিভিন্ন পরীক্ষার পর রায়গঞ্জের চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পরামর্শ দেন । কলকাতায় এসে তিনি জানতে পারেন তাঁর দুটো কিডনিই বিকল হয়ে গিয়েছে । বেঁচে থাকার জন্য প্রতি মাসে তাঁকে ডায়ালিসিস করতে হবে । সপ্তাহে কমপক্ষে দুটো ডায়ালাইসিস করার প্রয়োজন রয়েছে । কেউ একটি কিডনি দান করলে বাঁচতে পারেন তিনি । সম্পূর্ণ নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের শুভঙ্করের পক্ষে কোনওভাবেই সম্ভব না । বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে দু'বার করে ডায়ালিসিস করতে প্রায় তিন হাজার টাকা খরচ । তাঁর পক্ষে যা আপাতত সম্ভব না । পাড়া-প্রতিবেশীরা তাঁকে এখনও সাহায্য করে যাচ্ছেন । কিন্তু এভাবে আর কতদিন ? তাই সরকার বা অন্য কোনও সাহায্য চাইছেন তিনি ।
শুভঙ্কর বলেন, "আমি গত তিনমাস আগে জানতে পারি আমার দুটো কিডনি বিকল হয়ে গিয়েছে । বর্তমানের সংসারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি আমি ছিলাম । কিন্তু, আমার কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা নিজের চিকিৎসা খরচ জোগাড় করতে পারছি না । চাইছি সরকার বা কোন সহৃদয় ব্যক্তি এসে আমাকে সাহায্য করুন । তাহলে আমি এবং আমার পরিবার বাঁচতে পারবে ।" প্তাঁর বাবা প্রভাসবাবু বলেন, "আমি নিজের জন্য এক পয়সাও চাইছি না। নিজের সংসার কোনভাবে আমি কাজ করে টেনে নেব। কিন্তু ছেলের চিকিৎসার খরচের জন্য করজোড়ে সমস্ত স্বহৃদয় ব্যক্তি এবং সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।"