রায়গঞ্জ, 11 জুন:রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ৷ এদিকে রাজ্য পুলিশে ভরসা নেই বিরোধী দলগুলির ৷ এমনকীকেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোটে রাজি নয় রাজকুমার হত্যা বিচার মঞ্চ ৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বলি হয়েছিলেন প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায় ৷ 2018 সালের সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল রাজ্য পুলিশ ৷ হাইমাদ্রাসার শিক্ষক রাজকুমার রায়ের হত্যার কথা ভুলতে পারেনি পরিবার-পরিজন ৷ সেবারের সন্ত্রাসের কথা বারবার তুলছে শাসক-বিরোধী দলগুলি ৷ এমনকী এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি-কংগ্রেসও ৷ আগামিকাল সেই মামলার শুনানি ৷
এমনকী এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং রাজকুমার রায়ের স্ত্রী অর্পিতা রায়ও ৷ তিনিও আতঙ্কিত ৷ ভোট ঘোষণার পর থেকে প্রয়াত রাজকুমার রায়ের স্ত্রী অর্পিতা রায়ের রাতের ঘুম উধাও হয়ে গিয়েছে ৷ তাঁর কাছে এখন ভোট মানেই মৃত্যু ৷ তিনিও চান পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করুক কমিশন ৷
রাজকুমার রায়ের মৃত্যু:2018 সালের পঞ্চায়েত ভোট ছিল 13মে ৷ নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল রাজ্য পুলিশ ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট কর্মী হিসেবে ডাক পড়েছিল রাজকুমার রায়ের ৷ তিনি উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের দোমহনা হাইমাদ্রাসা স্কুলের সহ-শিক্ষক ছিলেন ৷ তাঁকে ইটাহার ব্লকের সোনাপুর এফপি স্কুলে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয় ৷ সকাল থেকে নির্ধারিত সময়ে ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ পর্ব শুরু হয় ৷
সেদিন বেলা বাড়তে রাজ্যজুড়ে একের পর এক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটতে থাকে ৷ এতে বিরোধী শিবির তৃণমূল কংগ্রেসকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল ৷ ইটাহারে রাজকুমার রায়কে নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল ৷ ভোট শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়কে ৷ তাঁর পরিবর্তে অন্য একজনকে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দিয়ে ভোট পর্ব সম্পন্ন করা হয় ৷ এরপর 15 মে তাঁর ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ পাওয়া যায় রেললাইনের ধার থেকে ৷
আরও পড়ুন: শিয়রে আরেক পঞ্চায়েত ভোট ! এখনও অন্ধকারে প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমারের মৃত্যরহস্য
এই ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে ৷ একজন প্রিসাইডিং অফিসার নিখোঁজ হলে তাঁকে উদ্ধারে নির্বাচন কমিশন তথা জেলা পুলিশ প্রশাসনের যতটা সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল, তা চোখে পড়েনি ৷ তাঁকে উদ্ধারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল ভোট কর্মীরা ৷ প্রতিবাদে রায়গঞ্জের ঘড়ি মোড়ে রাস্তা অবরোধ করা হয় ৷ সেখানে পৌঁছন তৎকালীন মহকুমাশাসক ৷ ভোট কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মহকুমাশাসককে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেছেন আন্দোলনকারীরা ৷ এই ঘটনায় রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় ৷ পুলিশ এসসিএসটি অ্যাক্রোসিটি ধারায় মামলা রুজু করেছিল ৷ গ্রেফতার হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন ভোট কর্মী ৷