অশোকনগর (উত্তর 24 পরগনা), 27 সেপ্টেম্বর : কেউ করতেন বিড়ি বাঁধার কাজ, কেউ বা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ ৷ শিল্পী সজল নন্দীর ডাকে স্বনির্ভর হওয়ার আশায় অশোকনগরের নট্টপাড়ার মহিলারা তাঁদের ছন্দহীন জীবন ছেড়ে ঢাক কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ৷ তৈরি হয়েছিল মহিলা ঢাকির দল অমূল্য চন্দ্র রিদম মিউজিক্যাল কলেজ ৷ কয়েক বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢাক বাজিয়ে সংসারে হাল ফিরেছিল তাঁদের ৷ কিন্তু, করোনা আবহে তাঁদের সেই সুখের জীবন ফের একবার হারিয়ে যেতে বসেছে ৷ কারণ পুজোর বাজেট কমিয়ে দিয়েছে ক্লাবগুলি ৷ এমনকি পুজোর জাঁকজমকও কমিয়ে ফেলা হয়েছে খরচ কমাতে ৷ ফলে আগের মতো আর পুজো মণ্ডপে ঢাক বাজানোর ডাক পাচ্ছেন না সেই সকল মহিলা ঢাকিরা ৷ কাজ না পেয়ে সংসার চালাতে পুরনো পেশায় ফিরছেন তাঁরা ৷ যে হাতের জাদুতে ঢাকের বাদ্দিতে মুখরিত হত পুজো মণ্ডপগুলি ৷ সেই হাতেই এবার বাধ্য হয়ে তুলে নিতে হচ্ছে বিড়ি বাঁধার কুলো ৷ অনেকে আবার ফিরেছেন পরিচারিকার কাজে ৷
এলাকার নিম্নবিত্ত পরিবারের মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে 2017 সালে 6 জন মহিলাকে নিয়ে অমূল্য চন্দ্র রিদম মিউজিক্যাল কলেজ নামে ওই ঢাকিদের দল তৈরি করেন সজল নন্দী ৷ অশোকনগর 3নং ওয়ার্ডের নট্টপাড়ার বাসিন্দা সজলবাবু ৷ তাঁর প্রচেষ্টায় আশেপাশের অঞ্চলের মহিলাদের তিনি এই ঢাকি দলের সঙ্গে যুক্ত করেন ৷ একে একে সদস্য সংখ্যা 6 থেকে বেড়ে 60 জনে গিয়ে দাঁড়ায় ৷ প্রথম বছর থেকেই পুজোয় ঢাক বাজানোর ডাক পেয়েছিলেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন : Mankundu Durga Puja: মানকুণ্ডুর খাঁ বাড়িতে অষ্টধাতুর দেবী ‘জয়দুর্গা’ রূপে পূজিত হন
2017 সাল থেকে 2019 সাল, টানা তিন বছর পুজোর আগে নানা অনুষ্ঠান ও অনুশীলনের কারণে অবসর সময় পেতেন না ওই মহিলা ঢাকিরা ৷ রাজ্যের বাইরেও বহুবার ঢাক বাজানোর ডাক পেয়েছেন তাঁরা ৷ গিয়েছিলেন দেশের রাজধানী দিল্লিতেও ৷ পুজো ছাড়াও 12 মাসই কোনও না কোনও অনুষ্ঠানে ঢাক বাজানোর বায়না আসত তাঁদের ৷ সেই আয়ে পরিবারের আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটেছিল ওই মহিলাদের ৷ কিন্তু, সেই সুখের সময়ে কাল হয়ে দেখা দিয়েছে করোনা ৷ বিগত 2 বছরে অল্প বিস্তর কাজ থাকলেও চলতি বছরে অবস্থা অনেকটাই খারাপ ৷
আরও পড়ুন : DurgaPuja : শরিক বিবাদে জৌলুসহীন 405 বছরের চিড়িমারসাই নন্দীবাড়ির পুজো